মোটা চালের কেজি ৫০, খুদও ৪২ টাকা

১ বছরের ব্যবধানে খুদের কেজিতে ৭ থেকে ৮ টাকা বেড়েছে। ছবি: শাহীন মোল্লা/স্টার

নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের দাম লাগামহীনভাবে বেড়ে যাওয়ায় খুদের (ভাঙা চাল) চাহিদা বেড়েছে। চালের দাম বেশি হওয়ায় নিম্ন আয়ের অনেকেই এখন খুদ কিনছেন।

মিরপুর ১১ এর বাসিন্দা জরিনা বেগম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আগে আমি মোটা চাল কিনতাম। কিন্তু মোটা চালও এখন ৫০ টাকা কেজি। জিনিসপত্রের দামের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পারছি না। তাই এখন খুদ খেয়েই দিন কাটাতে হচ্ছে।'

জরিনা বেগম একটি গার্মেন্টসের মেশিন অপারেটর হিসেবে কাজ করেন। তার স্বামী নেই। এক ছেলেকে নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকেন তিনি।

'আমার ছেলের বয়স ১৪ বছর। তাকে কিছুদূর পড়িয়েছি। পরে আর পারিনি। কিছুদিন আগে আমার বোন মারা যায়। তার ৩ সন্তান এখন মাদ্রাসার এতিমখানায় থাকে। তাদেরকেও আমার দেখভাল করতে হয়। ভরণপোষণের কিছু অংশ দিতে হয়। সবমিলিয়ে এখন সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছি,' বলেন তিনি।

করোনাভাইরাস মহামারি শুরুর পর আয়ও কমে গেছে বলে জানান তিনি। বলেন, 'আগে ওভারটাইম ছিল তাই কিছু টাকা বেশি পেতাম। এখন নাই। আয় করি ১০ হাজার টাকা। এ টাকায় সংসার চালাই কী করে?'

জরিনা বেগমের মতো আরও অনেকেই এখন ভরসা খুঁজছেন চালের খুদে। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় তাই খুদের দামও বেড়েছে।

কাওরানবাজারের মকবুল রাইসের আড়তদার কামাল সরকার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'যেহেতু আমাদের আড়ত আছে। তাই আমাদের প্রচুর খুদ থাকে। ১ বছর আগেও এর ক্রেতা কম ছিল। এখন বাড়ছে। অনেকে শখ করে খায় কিন্তু বর্তমানে নিম্ন আয়ের মানুষরাই এর প্রধান গ্রাহক।'

'১ বছর আগে মাসে ৩-৪ বস্তা খুদ বিক্রি হতো। এখন ১০-১৫ বস্তা বিক্রি হচ্ছে,' বলেন তিনি।

এদিকে চালের দামের সঙ্গে খুদের দামও বেড়েছে বলে জানান মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের আলিফ রাইস এজেন্সির আড়তদার আবদুস সালাম।

তিনি বলেন, '১ বছরের ব্যবধানে খুদের কেজিতে ৭-৮টাকা বেড়েছে। ঢাকায় ভালো চালের খুদ আসে। তাই এই খুদের দামটাও তুলনামূলক বেশি। এখন বিক্রিও আগের চেয়ে বেড়েছে।'

তবে ভাসানটেক আবুলের বস্তির চালের আড়তদার আবুল বলেন, 'ওএমএস চালুর আগে খুদের চাহিদা ছিল। খুদের কেজি এখন ৪২ টাকা। অন্যদিকে ওএমএসের চালের দাম ৩০টাকা। বস্তিতে খুদের বিক্রি তেমনটা বাড়েনি।'

 

Comments

The Daily Star  | English

The ceasefire that couldn't heal: Reflections from a survivor

I can’t forget the days in Gaza’s hospitals—the sight of dismembered children and the cries from phosphorus burns.

5h ago