ডেঙ্গুর নতুন হটস্পট বরিশাল
ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় পুরো বরিশাল বিভাগে এখন জরুরি অবস্থা চলছে।
চলতি বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুতে ঢাকার পরেই আছে বরিশাল। আর আক্রান্তের দিক থেকে রাজধানী ও চট্টগ্রামের পর আছে এই বিভাগ।
বর্তমানে ডেঙ্গু আক্রান্ত এক হাজার ১৫৫ জন বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাদের মধ্যে বরিশাল জেলায় ৪৬১ জন, পটুয়াখালীতে ২৬২ জন ও পিরোজপুরে ১৬৭ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় এ বিভাগে ২৯৪ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। গত সেপ্টেম্বরে বরিশাল বিভাগে সর্বোচ্চ ডেঙ্গু আক্রান্তের রেকর্ড হয়।
শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে ১০০ শয্যার বিপরীতে বর্তমানে ভর্তি রয়েছেন নয় শতাধিক রোগী। ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাবের পরে মেডিসিন ওয়ার্ডটিকে ডেঙ্গু চিকিত্সার জন্য নিবেদিত ওয়ার্ড হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয় এবং বর্তমানে সেখানে প্রায় ২৫০ জন ডেঙ্গু রোগী রয়েছে।
শয্যা সংকটের কারণে রোগীরা হাসপাতালটির টয়লেটের আশেপাশের স্থানও ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছেন।
শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. সাইফুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ডেঙ্গু রোগীদের জন্য আমরা হাসপাতালের যেখানে সম্ভব, সব জায়গাই কাজে লাগাচ্ছি।'
বরিশাল বিভাগের স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল ডেইলি স্টারকে বলেন, গ্রামাঞ্চলে পানি জমে থাকা এবং মানুষের মধ্যে সচেতনতার অভাবের কারণে এই বিভাগে ডেঙ্গু দ্রুত ছড়াচ্ছে।
পিরোজপুরের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ হাসনাত ইউসুফ জাকি বলেন, জেলার বেশিরভাগ ডেঙ্গু রোগী নেছারাবাদের। সেই উপজেলায় নার্সারি ও বাগান থাকার কারণে শ্রমিকদের মধ্যে ডেঙ্গু সংক্রমণের হার বেশি।
পটুয়াখালী সিভিল সার্জন ডা. এস এম কবির হাসান বলেন, জেলায় ডেঙ্গু সংক্রমণের আশঙ্কাজনক হারের মধ্যে হাসপাতালগুলোতে শয্যা সংকট দেখা দিয়েছে।
বরিশাল সিটি করপোরেশনের কনজারভেশন অফিসার ডা. রবিউল ইসলাম বলেন, 'শহরে খাল, জলাশয় ও অসংখ্য ড্রেন থাকার কারণে মশা নির্মূল কার্যক্রম চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। তবে আমরা ডেঙ্গুর বিস্তার রোধে আপ্রাণ চেষ্টা করছি।'
পটুয়াখালী পৌরসভার মেয়র মহিউদ্দিন আহমেদ ও পিরোজপুর পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা বনি আমিন সচেতনতামূলক প্রচারণার ওপর জোর দেন।
ড্রেন পরিষ্কার রাখার জন্য প্রতিনিয়ত স্প্রে করা হচ্ছে বলেও জানান তারা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গতকালের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, এর আগের ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে অন্তত দুই হাজার ৫৬৪ জন ডেঙ্গু রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
Comments