৩ বছরে শিশুদের এইডসের চিকিৎসা-প্রতিরোধে উল্লেখযোগ্য উন্নতি নেই: ইউনিসেফ

জাতিসংঘ শিশু তহবিল ইউনিসেফ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গত ৩ বছরে শিশু, কিশোর-কিশোরী ও গর্ভবতী নারীদের মধ্যে ঘাতক ব্যাধি এইডসের চিকিৎসা ও প্রতিরোধের ক্ষেত্রে তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়নি।

জাতিসংঘ শিশু তহবিল ইউনিসেফ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গত ৩ বছরে শিশু, কিশোর-কিশোরী ও গর্ভবতী নারীদের মধ্যে ঘাতক ব্যাধি এইডসের চিকিৎসা ও প্রতিরোধের ক্ষেত্রে তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়নি।

আজ মঙ্গলবার ইউনিসেফের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই স্থবিরতাকে 'নজিরবিহীন' বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

ইউনিসেফের শিশু, এইচআইভি ও এইডস সংক্রান্ত সর্বশেষ বৈশ্বিক স্ন্যাপশট প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২১ সালে প্রায় ১ লাখ ১০ হাজার শিশু ও কিশোর-কিশোরী (০-১৯ বছর বয়সী) এইডসজনিত কারণে মারা গেছে। নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে আরও ৩ লাখ ১০ হাজার। ফলে ১৯ বছরের কম বয়সীদের মধ্যে এইচআইভি আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ২৭ লাখে উন্নীত হয়েছে।

বিশ্ব এইডস দিবসকে সামনে রেখে ইউনিসেফ সতর্ক করেছে, শিশু, কিশোর-কিশোরী ও গর্ভবতী নারীদের এইচআইভি প্রতিরোধ ও চিকিৎসার ক্ষেত্রে গত ৩ বছরে উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি হয়নি। এখনো অনেক অঞ্চলে করোনাভাইরাস সংক্রমণের আগের পর্যায়ের চিকিৎসা সুবিধা ফিরে আসেনি।

ইউনিসেফের এইচআইভি-এইডস বিষয়ক সহযোগী প্রধান আনুরিতা বেইনস বলেন, 'যদিও এইডসের চিকিৎসা ও প্রতিরোধের ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরেই শিশুরা প্রাপ্তবয়স্কদের চেয়ে কম প্রাধান্য পাচ্ছে, তবুও গত ৩ বছরে এ বিষয়ে যে স্থবিরতা দেখা গেছে, তা নজিরবিহীন। ফলে অনেক কম বয়সী মানুষ নতুন করে অসুস্থতা ও মৃত্যুর ঝুঁকিতে পড়েছে।'

'প্রতিদিন ৩ শতাধিক শিশু ও কিশোর-কিশোরী এইডসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে হেরে যাচ্ছে', যোগ করেন তিনি।

২০২১ সালের তথ্য অনুযায়ী, এইচআইভি আক্রান্ত জনগোষ্ঠীর মাত্র ৭ শতাংশের প্রতিনিধিত্ব করলেও শিশু ও কিশোর-কিশোরীরা এইডসজনিত কারণে মৃত্যুর ১৭ শতাংশ ও নতুন করে আক্রান্তের ২১ শতাংশের জন্য দায়ী।

ইউনিসেফ সতর্ক করেছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে এইডস নির্মূল করা প্রায় অসম্ভব একটি বিষয় হবে। এইচআইভি আক্রান্ত শিশুর মোট সংখ্যা কমে গেলেও, শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের আওতার মধ্যে থাকা চিকিৎসা সুবিধার ব্যবধান বাড়ছে। এই ব্যবধান সৃষ্টির পেছনে মূলত দায়ী করোনাভাইরাস মহামারি ও অন্যান্য বৈশ্বিক সংকট।

বেইনস আরও বলেন, 'সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছে এমন জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছানোর জন্য নতুন রাজনৈতিক অঙ্গীকার, কৌশলগত অংশীদারিত্ব ও সম্পদ প্রয়োজন, যার মাধ্যমে চলমান কর্মসূচিগুলোর কলেবর বাড়ানো সম্ভব হবে। এটা করতে পারলেই আমরা কেবল শিশু, কিশোর-কিশোরী ও অন্তঃসত্ত্বা নারীদের মধ্যে এইডস নির্মূল করতে পারব।'

Comments