বান্দরবানে বাড়ছে নিউমোনিয়া ও ডেঙ্গু রোগী

বান্দরবান সদর হাসপাতাল। ছবি: স্টার

বান্দরবানে বাড়ছে ডেঙ্গু ও শিশুদের ঠান্ডাজনিত রোগ নিউমোনিয়া। সদর হাসপাতালে বেড়েছে রোগীর চাপ। হাসপাতালে বেডের তুলনায় রোগীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় অনেককে মেঝেতেই চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

আজ বৃহস্পতিবার বান্দরবান সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, শিশুদের জন্য আলাদা ওয়ার্ড না থাকায় মহিলা ওয়ার্ডে শিশুদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে ওয়ার্ডে কোনো বেড খালি নেই। তাই বেড না পেয়ে হাসপাতালের মেঝেতেই চিকিৎসা নিচ্ছে অনেক শিশু।

বান্দরবান সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. ইকবাল হোসাইন দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ১৯ শিশু ভর্তি হয়েছে। আবার অনেকেই বহির্বিভাগ থেকে এ নিউমোনিয়ার চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছে। আরও অনেক রোগী ভর্তির জন্য সিরিয়ালে আছে।

এছাড়া ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১৯ জন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে এবং গত তিন মাসে জেলায় ৭৬৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে।

বান্দরবান সদরস্থ বরিশাল পাড়া এলাকার বাসিন্দা পারভিন আক্তার জানান, তার ৭ মাস বয়সী শিশুর দুই দিন ধরে শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। গতকাল রাতে শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছেন। কিন্তু বেড খালি না থাকায় মেঝেতে বিছানা করে সেখানেই চিকিৎসা নিচ্ছেন ছেলের।

হাসপাতালে ভর্তি হাফেজ ঘোনা এলাকার শিশু মো. আবদুল্লাহ (৭)। আবদুল্লাহর মা শাহনাজ বেগম জানান, প্রচণ্ড জ্বর হয় আবদুল্লাহর। ডাক্তারের পরামর্শে ডেঙ্গু পরীক্ষা করালে রিপোর্টে ডেঙ্গু পজিটিভ আসে।

বান্দরবান সদর হাসপাতাল আবাসিক কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. এস এম ইকবাল জানান, হাসপাতালটি ১০০ শয্যার হলেও পুরুষ-মহিলা দুই ভাগে বিভক্ত। পুরুষ ওয়ার্ডে রোগীর সংখ্যা কম হলেও শিশু-মহিলা মিলে রোগীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় ফ্লোরে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, সিভিল সার্জনের নির্দেশনায় ২৪ ঘণ্টা রোগীদের সেবাদানের জন্য সার্বক্ষণিক ২ জন ডাক্তার হাসপাতালে অবস্থান করছেন।

বান্দরবান জেলা সিভিল সার্জন ডা. নীহার রঞ্জন নন্দী বলেন, ঋতু পরিবর্তনের কারণে বেশিরভাগ শিশুরা নিউমোনিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। তাই এ সময়টাতে পরিবারের পক্ষ থেকেও সচেতনতার দরকার। শিশুদের বাড়তি যত্ন নিতে হবে। বাচ্চারা যাতে ধুলোবালি, অতিরিক্ত ঠাণ্ডা বা অতিরিক্ত গরম না লাগায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

নীহার রঞ্জন নন্দী আরও বলেন, বান্দরবান পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় মশার উপস্থিতি বেশি।

বর্তমানে সারা দেশে যেহেতু ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাই বান্দরবানেও গত ৩ মাস ধরে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে।

তিনি আর‌ও বলেন, ডেঙ্গু রোগের ধরনটি ভিন্ন প্রকৃতির। এ রোগের চিকিৎসা ব্যবস্থা থাকলেও কোনো রোগী দ্বিতীয়বার এই রোগে আক্রান্ত হলে জীবন নাশের শঙ্কা থাকে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তাই যতটুকু সম্ভব মশা থেকে সতর্ক থাকতে হবে এবং ঘুমানোর আগে মশারি ব্যবহার করতে হবে বলেও পরামর্শ দেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Made with US cotton? Pay less at US customs

US customs will apply a tariff rate only to the non-American portion of a product's value

9h ago