চট্টগ্রামে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী, একদিনে ২২ জন হাসপাতালে ভর্তি

ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। গতকাল বুধবার জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে মোট ২২ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। সিটি করপোরেশন এলাকার বাইরে উপজেলা থেকেও ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে।

চট্টগ্রামে ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিশুও রয়েছে। চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, আক্রান্ত রোগীদের এক-তৃতীয়াংশই শিশু।

সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, বুধবার পর্যন্ত এই বছর চট্টগ্রামের বিভিন্ন হাসপাতালে মোট ৩৭৮ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ১২৯ জন রোগী চমেক হাসপাতালে এবং ২৪৯ জন রোগী অন্যান্য হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।

চমেক হাসপাতাল ব্যতীত বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি থাকা ২৪৯ জন রোগীর তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গত জানুয়ারিতে মাত্র পাঁচ জন এবং ফেব্রুয়ারিতে একজন ডেঙ্গু আক্রান্ত হন। এরপর টানা তিন মাস কোনো ডেঙ্গু রোগী পাওয়া যায়নি। এর পর জুনে ১৭ জন আক্রান্ত হন। জুলাই মাসে তা বেড়ে ৫০-এ দাঁড়ায়। আগস্টে ৭৬ জন এবং এ মাসের প্রথম দুই সপ্তাহেই ১০০ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন।

চমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আলাদাভাবে তথ্য সংরক্ষণ করে।

চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াস চৌধুরী বলেন, 'চট্টগ্রামের হাসপাতাল এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা আছে। সিটি করপোরেশন এলাকা ছাড়াও উপজেলাগুলোতেও ডেঙ্গু রোগী পাওয়া যাচ্ছে।

এদিকে বুধবার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ২২ জনের মধ্যে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নয় জন, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে একজন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একজন ও ১২ জন রোগী বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

সিভিল সার্জনের মতে, সেপ্টেম্বরে বৃষ্টি বেশি হওয়ায় এডিস মশার বংশবৃদ্ধি হচ্ছে, তাই ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে।

যোগাযোগ করা হলে, চমেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. অং সুই প্রু মারমা বলেন, বুধবার হাসপাতালে মোট ২৬ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন ছিলেন। ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পর্যাপ্ত শয্যা রাখা হয়েছে।

চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান বলেন, ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে আলাদা কর্নার খোলা করা হয়েছে।

এডিস মশা ও লার্ভা নির্মূলে জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহে নগরীতে 'ক্র্যাশ প্রোগ্রাম' শুরু করে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। গত ২৬ জুলাই নগরীর নাসিরাবাদ হাউজিং সোসাইটি এলাকায় এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী।

চসিক এর ভারপ্রাপ্ত প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা আবুল হাসেম বলেন, 'আমরা সংবাদপত্রে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছি। কারও বাড়ির আঙিনায় বা প্রতিষ্ঠানের কোথাও পানি থাকলে আমরা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছি।'

চট্টগ্রাম জেলা কীটতত্ত্ববিদ এন্তেজার ফেরদাউস দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, মশার লার্ভা মারার জন্য চসিক এর কর্মীরা দিনের বেলায় কীটনাশক স্প্রে করেন। অথচ কীটনাশক স্প্রে করার উপযুক্ত সময় হলো সূর্যোদয়ের পর এবং সন্ধ্যায় সূর্যাস্তের আগে। এ সময় ওষুধ ছিটিয়ে বেশি মশা মারা যায়।

'আমাদের গবেষণায়, আমরা দেখেছি যে মশার ঘনত্ব সূর্যোদয়ের এক ঘণ্টা পরে এবং সূর্যাস্তের এক ঘণ্টা আগে বেশি থাকে। আমরা এটি চসিককে বলেছি কিন্তু তারা দিনের বেলায় বিশেষ করে অফিস সময়ে কীটনাশক স্প্রে করছে। তাই এতে ভালো ফল পাওয়া যাচ্ছে না।'

যোগাযোগ করা হলে চসিক এর উপ প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোরশেদুল আলম চৌধুরী বলেন, এই বিষয়ে বৃহস্পতিবার চসিক এর সাধারণ সভায় আলোচনা হয়েছে। উড়ন্ত মশা মারার জন্য আমরা আগামী রোববার থেকে সূর্যাস্তের এক ঘণ্টা আগে কীটনাশক স্প্রে করব।'

Comments

The Daily Star  | English

Fire service & civil defence: High-risk job, low pay

Despite risking their lives constantly in the line of duty, firefighters are deprived of the pay enjoyed by employees of other departments, an analysis of their organograms shows.

8h ago