ঢাকায় শীত আসবে একটু দেরিতে

ফাইল ফটো

দেশ থেকে গত মাসের মাঝামাঝিতে বিদায় নিয়েছে মৌসুমি বায়ু। ইতোমধ্যে দেশের উত্তর ও উত্তরপূর্বাঞ্চলে তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে।

শ্রীমঙ্গলে শনিবার সকালে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৭ দশমিক নয় ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

তবে ঢাকায় এখনো ফ্যানের বাতাসের গুরুত্ব কমে যায়নি। কার্তিক মাস প্রায় শেষ, দরজায় কড়া নাড়ছে অগ্রহায়ণ। অথচ জাপটে ধরতে পারেনি শীত। দক্ষিণাঞ্চলে যেন চৈত্রের গরম।

সীতাকুণ্ডে এদিন সন্ধ্যায় ছিল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা—৩৩ দশমিক আট ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়াবিদদের মতে, ঢাকায় শীত আসবে একটু দেরিতে। তারা আরও বলছেন, নভেম্বরের শুরুতে দেশের আবহাওয়া যতটা শীতল হওয়ার কথা ছিল, এখনো ততটা হয়নি। এর একটি বড় কারণ হলো ঘূর্ণিঝড় দানা।

লঘুচাপ সৃষ্টির পরে কয়েকটি ধাপে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয় দানা। এরপর ভারতের ওডিশা উপকূলে আছড়ে পড়ে। লঘুচাপ, সুস্পষ্ট লঘুচাপ, নিম্নচাপ, গভীর নিম্নচাপ এরপর দানা ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়। এর আগেও দুটি লঘুচাপের সৃষ্টি হয়েছিল, তবে অল্প সময়ে সেগুলো গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে।

দানা আছড়ে পড়ার কিছুটা পরে সাগরে আরও একটি লঘুচাপ সৃষ্টির আবহ তৈরি হয়। ফলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উষ্ণতা কমেনি। এ ছাড়া, দেশের দক্ষিণ দিক থেকে এখনো বাতাস প্রবাহিত হচ্ছে। এই উষ্ণ বাতাস স্থলভাগকে শীতল হতে দিচ্ছে না।

পূর্বাভাস অনুসারে, আগামী ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় আরেকটি লঘুচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি, মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে থাকলেও এর বিস্তৃতি উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত রয়েছে। যার প্রভাব স্থলভাগে পড়ছে।

ডিসেম্বরের শেষ ভাগে গিয়ে ঢাকায় শীত জেঁকে বসতে পারে বলে মনে করছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঢাকায় হঠাৎ বজ্রসহ শিলাবৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির পরিমাণ ছিল ২২ মিলিমিটার। মৌসুমি বায়ু-পরবর্তী এই বৃষ্টির কথা আমরা আরও আগে থেকে বলে আসছিলাম।'

'আজ সন্ধ্যায় ঢাকার বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৫৬ শতাংশ। অথচ আবহাওয়া আরও শুষ্ক হয়ে যাওয়ার কথা। সামগ্রিকভাবে শীত কিছুটা দেরিতে আসছে বলা যায়,' যোগ করেন তিনি।

নাজমুল বলেন, 'নভেম্বরে উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোর তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে কমতে থাকবে। তবে শৈত্যপ্রবাহ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।'

আবহাওয়া অধিদপ্তর দীর্ঘকালীন পূর্বাভাসে জানিয়েছেন, এবার শীত মৌসুমে উত্তর-পূর্বাঞ্চল, মধ্যাঞ্চল ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে দুই থেকে তিনটি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। এই সময় তাপমাত্রা চার থেকে ছয় ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে নেমে আসবে।

এ ছাড়া, আট থেকে ১০টি মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ আসতে পারে।

তাপমাত্রা আট থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে মৃদু এবং ছয় থেকে আট ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বিবেচনা করে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

Comments

The Daily Star  | English

Govt warns of tough action against protesting NBR officials

The strike crippled activities at customs and ports, affecting exports, imports, and businesses.

30m ago