কনকনে ঠান্ডায় লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামের জনজীবন বিপর্যস্ত

খড়কুটোতে আগুন জ্বালিয়ে কনকনে ঠান্ডা থেকে বাঁচার চেষ্টা। ছবি: স্টার

কনকনে ঠান্ডা আর সঙ্গে হিমেল বাতাসের দাপটে উত্তরের সীমান্তবর্তী লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামের জনজীবন বিপর্যস্ত। ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক কাজকর্ম। নিদারুন কষ্টে রয়েছেন ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমার, গঙ্গাধর, তিস্তা ও ধরলা নদী তীরবর্তী, চরাঞ্চল ও খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ।

গত সোমবার থেকে সূর্যের দেখা মিলছে না। কাজের সন্ধানে ঘরের বাইরে যেতে পারছেন না শ্রমজীবিরা। চরাঞ্চলে বসবাসকারী অধিকাংশ মানুষের প্রয়োজনীয় শীতবস্ত্র না থাকায় কষ্টে পড়েছেন তারা। নেহাত প্রয়োজন ছাড়া লোকজন ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না।

শীতার্তরা বলছেন, প্রয়োজনীয় শীতবস্ত্রের অভাবে শীতার্ত দু:স্থ মানুষের ভরসা খড়কুটোর আগুন। একসাথে বসে আগুন জ্বালিয়ে শরীর তা দিচ্ছেন ঠান্ডার দাপট থেকে রক্ষা পেতে।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার চর খাটামারী এলাকার দিনমজুর আসলাম মিয়া (৫৪) দ্য  ডেইলি স্টারকে বলেন, 'খুব জার বারি গ্যাইছে। আইতের বেলাতে আরও বেশি জার নাগে। জারের ঠ্যালা থাকি বাইচবার জইন্যে হামরাগুলা জাইবরা-জঙ্গল নিয়া আগুন ধরে দিয়া শরীল গরম কইরবার নাগছি।'

'এ জার যদি থাকে তাকহইলে হামারগুলার কাজ কাম হবার নয়। হামরাগুলা না খ্যায়া থাইকমো,' তিনি বলেন।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ধরলা নদীর চর সারডোব এলাকার কৃষক মোবারক আলী (৬৩) বলেন, 'কিষানের ঘর খ্যাতো কাজ ইরবার পাবার নাগছে না জারের ঠ্যালায়। জারের ঠ্যালায় হামরাগুলা নিজের ঘরোক টোপলা করি থুইবার নাগছি।' 'হাত-পা ঠান্ডায় টাডারি কইরবার নাগছে। শরীল কোকরা নাগি যায়। কাইও কাইও খ্যাতোত কাজ করি গ্যাইলেও ম্যালাক্ষণ থাইকবার পায় না,' তিনি বলেন।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার তিস্তা নদীর চর কালমাটি এলাকার শীতার্ত দিনমজুর সুরুজ মিয়া (৫০) বলেন, 'হামারগুলার গরম কম্বল নাই। জাইবরা-জঙ্গল জড়ো করি আগুন ধরে দিয়া শরীল গরম কইরবার নাগছি। জার থাকি এ্যাকনা রেহাই পাই। আগুন নিভি গ্যাইলে ফির জার নাগে,'

তিনি বলেন। 'হামার গুলার টাকাও নাইযে হামরা কম্বল কিনমো। ছেঁড়া-ফাটা কাপড়ের দোকানোতও দাম বেশি। হামরাগুলা কষ্টোত আছোং।'

কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পযর্বেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, বুধবার সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। সোমবার থেকে সূর্যের আলো পাওয়া যাচ্ছে না। রাতে ঠান্ডার প্রকোপ আরও বেড়ে যায়। সন্ধ্যা থেকে কুয়াশা পড়তে শুরু করে এবং সকাল বেলা চারদিক কুয়াশাচ্ছন্ন হয়ে যায়।

কুড়িগ্রাম জেলা ত্রাণ ও পুর্নবাসন কর্মকর্তা আব্দুল হাই সরকার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, উপজেলা প্রশাসন ও ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে সরকারি বরাদ্দের কম্বল বিতরণ চলছে। শীতার্তদের জন্য পর্যাপ্ত কম্বলের বরাদ্দ চেয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Each martyr family to get Tk30 lakh: Prof Yunus

Chief Adviser Prof Muhammad Yunus today said each martyr's family will get Tk 30 lakh from the government, reiterating that his government will rehabilitate families of all mass-uprising martyrs and bear the full expanses of the treatment of all the injured..In a televised address to the n

9m ago