মৌসুমের সর্বোচ্চ ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
চুয়াডাঙ্গায় বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) দেশের ও এই মৌসুমের সর্বোচ্চ ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া মাঝারি দাবদাহ থেকে আজ এটা তীব্র তাপপ্রবাহে রূপ নিয়েছে।
এই টানা তাপদাহে জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়ছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তীব্র গরমে আর আগুন ঝরা আবহাওয়ায় সড়কে মানুষ ও যানবাহন চলাচল কমেছে। পশুপাখির অবস্থাও করুণ।
অন্যদিকে, নজিরবিহীন গরমে রোজাদারদের অবস্থাও কাহিল।
প্রখর রোদের কারণে শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষ চরম বিপাকে পড়েছেন। তীব্র গরমে বয়স্ক ও শিশুরা সব থেকে বেশি বিপাকে পড়েছে। অতিরিক্ত গরমে অসুস্থতার পরিমাণও বাড়ছে। জেলা সদরের হাসপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতেও বেড়েছে শিশুসহ বিভিন্ন বয়সী রোগীর সংখ্যা।
জরুরি কাজ না থাকলে মানুষজন তেমন বাইরে বের হচ্ছেন না।
দিনমজুর রবিউল মিয়া বলেন, এতো তাপদাহ সহ্য করা কঠিন। জমিতে বেশিক্ষণ কাজ করতে পারলাম না। এখন এই ছায়ায় বসে আছি। আজ কাজ শেষ করতে দেরি হবে।
ফল বিক্রেতা ইয়ার আলী বলেন, কোনো বিক্রি নেই। গাছের নিচে শুয়ে-বসে সময় কাটাচ্ছি। এভাবে চললে সংসার চালানোই দায় হয়ে যাবে।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা গেছে, গত ২ এপ্রিল ৩৩ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় রেকর্ড করা হয়। যা ছিল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এরপর থেকে আজ পর্যন্ত একটানা দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা এ জেলায় রেকর্ড করা হচ্ছে। গত ৩ এপ্রিল ৩৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ৪ এপ্রিল ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ৫ এপ্রিল ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ৬ এপ্রিল ৩৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ৭ এপ্রিল ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ৮ এপ্রিল ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ৯ এপ্রিল ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ১০ এপ্রিল ৩৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও ১১ এপ্রিল অর্থাৎ গত মঙ্গলবার ৩৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং গতকাল ১২ এপ্রিল ৩৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। আজ ১৩ এপ্রিল ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে দুপুরে।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ জামিনুর রহমান বলেন, আজ ১৩ এপ্রিল দুপুর ৩টায় চুয়াডাঙ্গায় ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এটি এই মৌসুমের ও দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।
তিনি আরও বলেন, গত ২ এপ্রিল থেকে আজ ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা এই চুয়াডাঙ্গায় রেকর্ড হলো। আপাতত বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই। ফলে এই তাপমাত্রা আরও বাড়বে। আর আজ থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে।
তিনি বলেন, চুয়াডাঙ্গা জেলা কর্কটক্রান্তি রেখার কাছাকাছি হওয়ায় মার্চ ও এপ্রিল মাসের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি থাকে। এ বছর পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় মার্চে গড় তাপমাত্রা বেড়ে গেছে। এরই ধারাবাহিকতায় এপ্রিলে তাপমাত্রা আরও বেড়েছে।
Comments