দেড় কিলোমিটার এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে লাইনচ্যুত ট্রেনের তেল

চট্টগ্রামের হালিশহরে ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে পড়ে যাওয়া তেল আশপাশের খাল থেকে সংগ্রহ করে বিক্রি করছেন স্থানীয়রা। ছবি: রাজীব রায়হান

চট্টগ্রামে রেলওয়ের চিটাগাং গুডস পোর্ট ইয়ার্ডে (সিজিপিওয়াই) একটি তেলবাহী ট্রেনের তিনটি ওয়াগন লাইনচ্যুত হয়ে ছিটকে পড়া বিপুল পরিমাণ তেল বিভিন্ন খাল হয়ে প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে।

পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক মনির হোসেন জানান, চট্টগ্রামের সিজিপিওয়াই খাল, গুপ্তা খাল ও মহেশ খাল দিয়ে তেল ছড়িয়ে পড়েছে।

এই খালগুলো যুক্ত হয়ে কর্ণফুলী নদীতে গিয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে নদীতে তেল ছড়িয়ে পড়েছে কি না তা জানতে পানির নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

সরেজমিনে দেখা যায়, ওয়াগন থেকে পড়া তেলে খালের পানি রং পাল্টে গেছে। ছিটকে পড়া তেল বালতিতে করে সংগ্রহ করছেন স্থানীয় লোকজন। রমজান আলী বাপ্পী নামের একজন জানান, বুধবার রাত থেকে তিনি ৮০ লিটার ডিজেল সংগ্রহ করেছেন। প্রতি লিটার তেল ৫০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন তিনি।

তেলবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে ছড়িয়ে পড়া তেল সংগ্রহ করছে স্থানীয় লোকজন। ছবি: রাজীব রায়হান

পরিবেশবাদীরা বলছেন, ছড়িয়ে পড়া তেল খালের খাদ্যশৃঙ্খল ও বাস্তুসংস্থানে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলবে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ফরেস্ট্রি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সের সাবেক অধ্যাপক মোহাম্মদ কামাল হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পানির উপরিভাগে থাকা জলজ প্রাণীর খাদ্য ধ্বংস করে দেবে তেল। অক্সিজেন সংকটে অনেক জলজ প্রাণি মারা যাবে।'

এদিকে, পরিবেশগত ক্ষতি নিরূপনে পরিবেশ অধিদপ্তরের দুটি দল ইতোমধ্যে ওই এলাকা পরিদর্শন করেছে এবং নমুনা সংগ্রহ করেছে।

তদন্ত করে এই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ অধিপ্তর চট্টগ্রাম নগর কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মিয়া মাহমুদুল হক।

রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি) সিজিপিওয়াই ফাঁড়ির অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ ইয়াসিন ডেইলি স্টারকে বলেন, ঘটনার ২০ ঘণ্টা পর রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ লাইনচ্যুত ওয়াগনগুলো উদ্ধার করেছে।

সিজিপিওয়াই এর মাস্টার আব্দুল মালেক বলেন, ডিজেলের ওয়াগন বহনকারী ট্রেনটি মেয়াদোত্তীর্ণ ইঞ্জিন দিয়ে চলছিল।

এদিকে ঘটনা তদন্তে বাংলাদেশ রেলওয়ের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা তারেক বিন ইমরানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

তারেক বিন ইমরান ডেইলি স্টারকে বলেন, আমরা ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছি এবং ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। আমরা দ্রুত দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করে রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন দেব।

Comments

The Daily Star  | English

Palak admits shutting down internet deliberately on Hasina's order

His testimony was recorded by the International Crime Tribunal's investigation agency following a questioning session held yesterday

23m ago