কয়লা সংকটে বাঁশখালী এসএস বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন কমেছে ৫০ শতাংশ

মজুদকৃত কয়লা দিয়ে আগামী ১০ দিন একটি ইউনিটের বিদ্যুৎ উৎপাদন অব্যাহত রাখা সম্ভব।
বাশঁখালীর এসএস পাওয়ার প্ল্যান্ট। ছবি: সংগৃহীত

কয়লা সংকটের কারণে চট্টগ্রাম অঞ্চলের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র বাশঁখালীর এসএস পাওয়ার প্ল্যান্টের উৎপাদন হুমকির মুখে। 

কয়লার মজুদ কমে আসায় ১৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার কয়লাভিত্তিক এই কেন্দ্রের একটি ইউনিট বন্ধ রাখা হয়েছে। 

এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুটি ইউনিটে গড়ে উৎপাদন ১২২৪ মেগাওয়াট। এখানে বর্তমানে কয়লা মজুত আছে ৬৩ হাজার মেট্রিকটন, যা দিয়ে একটি ইউনিটে আগামী ১০ দিন বিদ্যুৎ উৎপাদন অব্যাহত রাখা সম্ভব।

দুইটি ইউনিট চালু রাখতে হলে ৫ দিনেই শেষ হয়ে যাবে মজুতকৃত কয়লা।

ইসলামী ব্যাংকে করা এলসির (লেটার অব ক্রেডিট) পেমেন্ট নির্ধারিত সময়ে না পাওয়ায় কয়লা খালাস বন্ধ রেখেছে ইন্দোনেশিয়ার সরবরাহকারী কোম্পানি।

সংশ্লিষ্টরা জানান, শতভাগ মার্জিন দিয়ে খোলা ৮টি এলসি খোলা হয় ইসলামী ব্যাংক গুলশান সার্কেল-১ শাখায়। এর মধ্যে ৫টি এলসির পেমেন্ট নির্ধারিত সময়ে হলেও আটকে গেছে তিনটি পেমেন্ট। এসব এলসি খোলা হয়েছিল প্রায় ৬ মাস আগে। দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এসব পেমেন্ট আটকে যায়। 

এসব এলসির পেমেন্ট করার নির্ধারিত সময় ছিল গত ৬, ১১ ও ২২ আগস্ট। সেসব পেমেন্ট এখনো ছাড় করেনি ইসলামী ব্যাংক।

এসএস পাওয়ার প্ল্যান্টের কর্মকর্তাদের অভিযোগ, চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙ্গরে কয়লাবাহী তিনটি জাহাজে প্রায় এক লাখ ৬৫ হাজার মেট্রিকটন কয়লা নিয়ে এলেও, পেমেন্ট জটিলতার কারণে খালাস হয়নি। 

ইন্দোনেশিয়ার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান নোবেল রিসোর্সেস এবং এপিজি থেকে প্রায় এক মাস আগে এই কয়লাগুলো আমদানি করে এসএস পাওয়ার প্ল্যান্ট।      

জানতে চাইলে এসএস পাওয়ার প্ল্যান্টের চিফ ফিন্যান্সিয়াল অফিসার এবাদত হোসাইন ভূঁইয়া দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ইসলামী ব্যাংকের সঙ্গে এসএস পাওয়ার প্ল্যান্টের কোনো দেনা-পাওনা কিংবা ঋণ নেই। তারপরও আমাদের তিনটি এলসির পেমেন্ট ছাড় করছে না তারা।'

তিনি আরও বলেন, 'ইসলামী ব্যাংক গুলশান সার্কেল-১ ব্রাঞ্চে এসএস পাওয়ারের চলতি হিসাব আছে। সেখানে প্রায় ১৬৫ কোটি টাকার মতো আমানত রয়েছে। সেখান থেকেও টাকা তুলতে পারছি না আমরা।'

অভিযোগের বিষয়ে মন্তব্য জানতে ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনিরুল মওলা এবং সংশ্লিষ্ট শাখা প্রধান সাজ্জাদ হোসাইনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তারা রিসিভ করেননি। পরে মেসেজ দেওয়া হলেও কোনো সাড়া দেননি।  

যোগাযোগ করা হলে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. রেজাউল করিম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এসএস পাওয়ার প্ল্যান্টে বিদ্যুৎ উৎপাদন যেন বিঘ্নিত না হয়, সেজন্য আমি ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। এছাড়াও বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে রূপালী ব্যাংকে নতুন এলসি খুলে কয়লা আমদানির ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছি। এসএস পাওয়ার প্ল্যান্ট কর্তৃপক্ষ কাজ করছে। আগামী দুয়েকদিনের মধ্যে সাগরে অপেক্ষমান কয়লাবাহী জাহাজ থেকে কয়লা খালাস শুরু হবে।'

তিনি আরও বলেন, 'সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদন বিষয়ে সচেষ্ট। এসএস পাওয়ার প্ল্যান্টের বিষয়ে জ্বালানি উপদেষ্টা বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে কথা বলেছেন যেন তাদের (এসএস পাওয়ার প্ল্যান্টের) ব্যাংকিং সমস্যা সমাধান হয়।'

Comments

The Daily Star  | English

Extreme weather events threatening food security

Since May last year, Bangladesh faced more than a dozen extreme weather events -- four cyclones, nine incidents of floods, and multiple spells of heavy rains, heatwaves, and cold waves -- and now they threaten food security..These events not only harmed individual farmers and food security

46m ago