সোলার মূল উৎস না, আমরা হাইড্রোজেন পলিসিতে যাচ্ছি: বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী

ছবি: সংগৃহীত

বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধানে বাংলাদেশ হাইড্রোজেন পলিসিতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

ইতোমধ্যে নীতিমালা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে বলেও জানান তিনি। আজ বৃহস্পতিবার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

নসরুল হামিদ বলেন, আমরা চেষ্টা করেছি, কত দ্রুত আরও উপযোগী পরিবহন সেবায় যেতে পারি। বিদ্যুৎ বিভাগ ইভি (ইলেকট্রনিক ভেহিকেল) পলিসি তৈরি করেছে। আমরা গেজেট করে দিয়ে দিয়েছি। এখন জনগণের ওপর নির্ভর করছে কীভাবে তারা ইলেকট্রনিক ভেহিকেল কিনবে। ডিজেল বা পেট্রলচালিত গাড়িগুলো ২০ শতাংশ উপযোগিতায় চলে। ইলেকট্রিক চার্জ করে সেই গাড়ি চালালে তার উপযোগিতা বেড়ে ৮০ শতাংশ হবে। এভাবে আমরা খরচ কমাতে পারি, কার্বন নিঃসরণ কমাতে পারি। ১৮ থেকে ২০ শতাংশ কার্বন নিঃসরণের জন্য দায়ী পরিবহন ব্যবস্থা। এনার্জি বড় আকারে কার্বন নিঃসরণ করে। এর সমাধানও সারা বিশ্ব এখন চিন্তা করছে।

তিনি আরও বলেন, উন্নত বিশ্ব এই জ্বালানি সংকটের মধ্যে তাদের কয়লাভিত্তিক যে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো ছিল সেগুলো চালু করে দিয়েছে। জার্মানি বলেছিল, আমরা শতভাগ ক্লিন এনার্জিতে যাচ্ছি। তাদের মতো দেশ এখন ষাটের দশকের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু করেছে। কারণ তারা স্বল্প মূল্যে এনার্জি সরবরাহ করতে জনগণের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

সৌর বিদ্যুৎ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশে যদি ১০০ মেগাওয়াট সোলার করতে চাই, সাড়ে ৩০০ একর অকৃষি জমি লাগবে। আমাদের দরকার ১০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। আমরা যদি ১০ হাজার মেগাওয়াট সোলার দিয়ে করতে চাই, সাড়ে ৩০ হাজার একর অকৃষি জমি লাগবে। কোথায় পাব? বাংলাদেশের ৬০ শতাংশ জমি হলো জলাভূমি। বাকি ৪০ শতাংশের মধ্যে ৩০ শতাংশ কৃষি জমি। তারপরও আমাদের এই চ্যালেঞ্জ নিতে হচ্ছে যে, কারণ আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ—আমরা নবায়ণযোগ্য জ্বালানি দিতে চাই।

ইউক্রেনে যুদ্ধ লাগার সঙ্গে সঙ্গে আপনারা দেখেছেন, ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে রাশিয়া। আমরা ভাগ্যবান, এ দেশে কিছু গ্যাস আমরা উৎপন্ন করি, ২ হাজার ৩০০ এমএমসি গ্যাস। এই গ্যাস তো সারা জীবন থাকবে না! এটাও মাথায় রাখতে হবে। ভারতের গ্যাস অনেক আগে শেষ হয়ে গেছে। তাদের শিল্পের বিকাশ তো থেমে থাকেনি। গ্যাসের পাওয়ার প্ল্যান্ট আমরা একের পর এক করে গেছি এবং কারখানায় সংযোগ দিয়েছি। গত ১১ বছরে ১ হাজার এমএমসি গ্যাসের ক্যাপাসিটি বাড়ানো হয়েছে। কারাখানা এবং পাওয়ার প্ল্যান্টকে সাপোর্ট দিতে হয়েছে। আমাদের নিজেদের গ্যাস দিয়ে যেহেতু সম্ভব হয়নি তাই আমরা আমদানি শুরু করি। কাতার এবং ওমানের সঙ্গে আমাদের দীর্ঘ মেয়াদি চুক্তি আছে। আমরা স্পট মার্কেট থেকেও কিনি। এখন অবিশ্বাস্য দাম, যে কারণে আমরা বন্ধ করে দিয়েছি। জ্বালানি খরচ সাধ্যের বাইরে চলে গেছে। সরকার ভর্তুকি দিচ্ছে, সার, গ্যাস, কৃষি সব খাতে, বলেন তিনি।

সমস্যা সমাধানে মন্ত্রণালয় কী করছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই সমস্যা সমাধানে নবায়ণযোগ্য শক্তি বিকল্প হতে পারে কিন্তু আমাদের ভূমি কোথায়! যে কারণে আমরা এখন হাইড্রোজেন পলিসিতে যাচ্ছি। আমরা জানি না, হয়তো এটাই ভবিষ্যত। অনেক দেশ ইতোমধ্যে শুরু করেছে। আমরা একটি নীতিমালা তৈরি করছি। সারা পৃথিবী এখন বিকল্প উৎস খুঁজছে। সোলার একটি উৎস তবে বাংলাদেশে এটি মূল উৎস হতে পারে না।

Comments

The Daily Star  | English
Tamim Iqbal

Tamim announces retirement from international cricket, again

Bangladesh's star opener Tamim Iqbal announced his retirement from international cricket through a post from his official Facebook page today.

4h ago