ঘোড়াশাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্বাভাবিক হতে ১ সপ্তাহ সময় লাগতে পারে

নরসিংদীর ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র। ছবি: সংগৃহীত

নরসিংদীর ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের ৫ নম্বর ইউনিটের টারবাইনের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় সেফটি বাল্ব ফেটে যায়। এতে ইউনিটটি বন্ধ হয়ে যায়। এরপরও ইউনিটটি চালু করতে না পারায় সেটি স্বাভাবিক তাপমাত্রা হারায়। ফলে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে ৫০ ডিগ্রি তাপমাত্রার দরকার হবে, যাতে এক সপ্তাহের মতো সময় লাগতে পারে বলে বিদ্যুৎকেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে।

গত বুধবার দুপুরে দেশের একমাত্র বিদ্যুৎ সঞ্চালনকারী সংস্থা পাওয়ার গ্রিড অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) তদন্ত কমিটির সদস্যরা ইউনিটটি চালু করে দেওয়ার এক ঘণ্টার মাথায় আবারও সেটি বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ রয়েছে এ ইউনিটে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যুৎকেন্দ্রের এক সিনিয়র কর্মকর্তা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গ্রিড বিপর্যয়ের একদিন পর বুধবার দুপুর ১টা পর্যন্ত ইউনিটটি মেরামতের কাজ করা হয়। পরে ১টা ১৫ মিনিটে পিজিসিবির কর্মকর্তারা ইউনিটটি চালু করেন। কিন্তু তাড়াহুড়ো করে চালু করতে গিয়ে ইউনিটের টারবাইনের টেম্পারেচার বেড়ে গিয়ে এক ঘণ্টা পরেই সেটি আবার বন্ধ হয়ে যায়।'

তিনি বলেন, 'ইউনিট চলার জন্য মেটাল টেম্পারেচারের চেয়ে রোটর টেম্পারেচারের তাপমাত্রা মিনিমাম ৫০ ডিগ্রি কম-বেশি থাকতে হয়, তা না হলে টারবাইনে সমস্যা দেখা দেয়।'

বিদ্যুৎকেন্দ্র সূত্র জানায়, কোনো ইউনিট বন্ধ হয়ে গেলে সেটি তাৎক্ষণিক চালু করা না গেলে টেম্পারেচারের মাত্রা ঠিক করতে অন্তত ৪-৫ দিন সময় নিতে হয়। বুধবার ইউনিটে পাওয়ার দেওয়ার পর লোড দেওয়ার সময় দুটি টেম্পারেচার সমপরিমাণ থাকায় তা আর চালু করা সম্ভব হয়নি। ইউনিটটি পুনরায় চালু করতে আরও সপ্তাহখানেক সময় লাগতে পারে।

মঙ্গলবার দুপুর ২টা ৫ মিনিটে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ বিপর্যয় দেখা দিলে হঠাৎ করে ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের ৪ ও ৫ নম্বর ইউনিট দুটি বন্ধ হয়ে যায়। পরে এক ঘণ্টার মধ্যে ২৩০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ৪ নম্বর ইউনিটটি চালু করা গেলেও ১৮০ মেগাওয়াটের ৫ নম্বর ইউনিটটি চালু করা যায়নি। ইউনিটের সেফটি বাল্ব ফেটে যাওয়ায় তাৎক্ষণিক তা চালু করা সম্ভব হয়নি বলে জানান কর্মকর্তারা।

সেদিন জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়ের কারণে ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের সব এলাকা একসঙ্গে বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে। সংস্কার শেষে রাত ৯টার পর বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হলেও, একে একে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো পুরো লোডে ফিরে আসতে আরও কয়েক ঘণ্টা সময় লাগে।

পূর্বাঞ্চল গ্রিডে বিদ্যুৎ না থাকায় দেশের প্রায় ৬৫ শতাংশ মানুষকে প্রায় ৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন থাকতে হয়। কোনো কোনো এলাকা এর চেয়েও বেশি সময় অন্ধকারে ছিল।

এর কারণ অনুসন্ধানে বুধবার ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র পরিদর্শনে যায় পিজিসিবি গঠিত ৬ সদস্যের তদন্ত কমিটি। সেদিন সকাল সাড়ে ১১টার দিকে পিজিসিবির নির্বাহী পরিচালক ইয়াকুব এলাহী চৌধুরীর নেতৃত্বে তারা ঘোড়াশাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের কন্ট্রোলরুম পরিদর্শন করেন।

সেসময় তদন্ত কমিটির প্রধান ইয়াকুব এলাহী চৌধুরী জানান, জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারণে দেশের কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাওয়ার কন্ট্রোলরুম পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। সবগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে কী কারণে বিপর্যয় দেখা দেয়, তা জানা যাবে।

এদিকে, ঘোড়াশাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বন্ধ থাকা ৫ নম্বর ইউনিটটি চালু করতে কাজ চলছে।'

তবে কবে নাগাদ চালু হবে সে বিষয়ে তিনি এখনই কোনো ধারণা দিতে পারেননি।

Comments

The Daily Star  | English

Renewable ambitions still mired in uncertainty

Although the Awami League government made ambitious commitments to renewable energy before being ousted by a mass uprising in August last year, meeting those lofty goals remains a distant dream for the country.

10h ago