চট্টগ্রামের পাহাড় থেকে সরানো হলো ১৫০ পরিবারকে
ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে ব্যাপক ভূমিধসের আশঙ্কায় চট্টগ্রামের আকবরশাহ এলাকায় পাহাড়ের পাদদেশে অবৈধভাবে বসবাসকারী ১৫০ পরিবারকে সরিয়ে নিয়েছে জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী পরিবারগুলোকে খাদ্য ও পানীয় সরবরাহ করা হয়েছে।
৪ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের একটি বিশেষ দল শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত কৈবল্যধামের ফয়স লেক ঝিল এলাকার পাহাড়ে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে।
রাতে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান পাহাড়ি এলাকা পরিদর্শন করেন এবং উচ্ছেদ হওয়া লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি জনগণকে নিরাপদ এলাকায় থাকতে এবং পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বের না হতে অনুরোধ করেন।
জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, শহরের ২৬টি ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে প্রায় ৬ হাজার ৫৫৮টি পরিবারকে অবৈধ বসবাসকারী হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের জ্যেষ্ঠ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও এনডিসি মো. তৌহিদুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে, আমাদের কর্মীরা গত ২ দিন ধরে মাইকের মাধ্যমে বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলছেন। আজকে আমরা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেছি। আমাদের কাছে ব্যাপক ভূমি ধসের আশঙ্কার তথ্য রয়েছে।'
'আমাদের কাছে তথ্য আছে যে ঘূর্ণিঝড়ের সময় ২০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত হতে পারে। এতে ভূমিধস হতে পারে।'
২০১৭ সালের জুন মাসে চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি এবং বান্দরবান জেলায় প্রবল বর্ষণে সৃষ্ট ভূমিধসে প্রায় ১৭০ জন মারা গিয়েছিল। এর ফলে কয়েকদিন ধরে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল বিভিন্ন উপজেলা।
এর আগে, ২০০৭ সালে চট্টগ্রামে ব্যাপক ভূমিধসে ১২৭ জনের প্রাণহানি হয়। সেই সময় সরকার কর্তৃক গঠিত একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি পাহাড়ে বসবাসকারী পরিবারগুলিকে স্থায়ীভাবে নিরাপদ স্থানে পুনর্বাসন সহ ৩৬টি সুপারিশ করেছিল।
সুপারিশগুলোর মধ্যে ছিল—ভূমিধসের ঝুঁকিতে থাকা পরিবারগুলোকে স্থানান্তর, নিরাপদ স্থানে পুনর্বাসন, পাহাড়ের ৫ কিলোমিটারের মধ্যে আবাসন নিষিদ্ধ করা, ঢাল রক্ষায় প্রাচীর নির্মাণ এবং পাহাড় থেকে নির্বিচারে বালু উত্তোলন বন্ধ করা।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন, সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্তৃপক্ষ সেসব সুপারিশ এখনো পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে পারেনি।
Comments