বিপৎসীমার উপরে হালদার পানি, বেড়িবাঁধের ১৬ স্থানে ভাঙন

বুধবার বিকাল ৩টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে ২২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
হালদা নদীর পানি বৃদ্ধিতে বুধবার বেড়িবাঁধের অন্তত ১৬ জায়গায় ভাঙন দেখা দেয়। ছবি: সংগৃহীত

টানা বর্ষণ ও হালদা নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলা ও আশপাশের এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।

আজ বুধবার সন্ধ্যা ৬টা দিকে হালদার পানি নারায়ণহাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ১ দশমিক ০৮ মিটার উপরে প্রবাহিত হচ্ছিল বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে।

হালদা নদীর উজান থেকে আসা পানির স্রোতে উপজেলার নারায়ণহাট, ভুজপুর, পাইন্দং, লেলাং, সমিতিরহাট, হারুয়ালছড়ি, সুয়াবিলসহ এই উপজেলার অধিকাংশ নিচু এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।

ফটিকছড়ি উপজেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, অন্তত ৩ লাখ মানুষ বন্যার কারণে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।

আজ বুধবার সন্ধ্যা ৬টা দিকেও নদীর পানি নারায়ণহাট পয়েন্টে বিপদসীমার ১ দশমিক ০৮ মিটার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছিল।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোজ্জামেল হক চৌধুরী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ফটিকছড়ি পৌরসভা ছাড়া এ উপজেলার বাকি এলাকাগুলো বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। ঘরবাড়ি ডুবে যাওয়ায় লোকজনকে আশ্রয় দিতে আমরা ৩৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্রে রূপান্তর করেছি।'

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (হাটহাজারী বিভাগ) উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সোহাগ তালুকদার ডেইলি স্টারকে জানান, বন্যায় হালদা নদীর পয়েন্টে থাকা বাঁধের ১৬টি স্থানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

হালদা নদী ছাড়াও লেলাং খাল, ধুরুং খাল, সর্তা খাল, ফটিকছড়ি খাল, মন্দাকিনী খাল, গজারিয়া খাল, তেলপারি খাল, কুতুবছড়ি খালের তীর ভেঙে পানি লোকালয়ে ঢুকছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, অন্তত ২০টি মাছের ঘের, শত শত একর ধানক্ষেত, গ্রামীণ রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় জীবন-জীবিকা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।

এছাড়া হেঁয়াকো থেকে ফটিকছড়ি, ঝংকার মোড় থেকে রাউজান, নাজিরহাট থেকে কাজিরহাট পর্যন্ত সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় অন্তত ৮টি ইউনিয়নের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।

নারায়ণহাট এলাকার কৃষক সঞ্জয় দেব জানান, তার দুই কানি ধান ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে।

তিনি আরও বলেন, 'পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় আমি আমার ফসল রক্ষা করতে পারিনি।'

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. হাসান জানান, তারা কৃষকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ক্ষয়ক্ষতির পরিসংখ্যান সংগ্রহ করছেন।

চট্টগ্রামের পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, বুধবার বিকাল ৩টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে ২২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

Comments