প্রতি ১২ ঘণ্টায় ১৫-২০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পাচ্ছে যমুনার পানি, বাড়ছে দুর্ভোগ 

বন্যার পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে যমুনা পাড়ের বাড়ি-ঘর। ছবি: স্টার

সিরাজগঞ্জে দ্রুত বাড়ছে যমুনা নদীর পানি, ক্রমেই অবনতি হচ্ছে বন্যা পরিস্থিতির। এতে স্থানীয়দের দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের আশঙ্কা বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হতে পারে। 

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, আজ শুক্রবার সকালে যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জের হার্ড পয়েন্টে ১৩ দশমিক ২৮ মিটার উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে, যা বিপৎসীমার ৩৮ সেন্টিমিটার ওপরে। 

একই সময়ে সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলায় যমুনার পানি ১৫ দশমিক ১২ মিটার উচ্চতায়, অর্থাৎ বিপৎসীমার ৩২ মিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। 

বাড়ি-ঘর তলিয়ে যাওয়ায় অনেকে নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটছেন। ছবি: স্টার

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. নাজমুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'উজানের তীব্র পানির চাপে যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। প্রতি ১২ ঘণ্টায় ১৫ থেকে ২০ সেন্টিমিটার করে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।'

আগামী দুই থেকে তিন দিন পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে, ফলে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতির আশঙ্কা রয়েছে বলে জানান তিনি।

যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে নদী পাড়ের নিচু এলাকা ও চর এলাকাগুলো প্লাবিত হয়েছে। সরেজমিনে সিরাজগঞ্জের বন্যা কবলিত এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, পানিতে তলিয়ে আছে বাড়ি-ঘর, ফসলের মাঠ। পানিবন্দি অনেক মানুষ বাড়ি-ঘর ছেড়ে রাস্তা ও বাধের ওপর আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। 

নদীর পাড়ে অস্থায়ী ছাউনি বানিয়ে কোনোরকমে বেঁচে আছেন এ বৃদ্ধা। ছবি: স্টার

সিরাজগঞ্জের হাট পাচিল গ্রামের বৃদ্ধা ফাজিলা বেগম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বন্যার পানির তোড়ে বাড়ি ভেঙে গেছে, সন্তানরা দূরের গ্রামে চলে গেছে। আমরা বুড়ো-বুড়ি যাওয়ার কোনো জায়গা না পেয়ে নদীর পাড়ে অস্থায়ী ছাউনি বানিয়ে কোনোরকমে বেঁচে আছি। বৃষ্টিতে খুব কষ্ট হচ্ছে, তার ওপর ঘরে কোনো খাবার নেই।'

সিরাজগঞ্জ জেলার ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আক্তারুজ্জামান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সিরাজগঞ্জের পাঁচ উপজেলার ৩৪টি ইউনিয়নের শতাধিক গ্রাম বর্তমানে বন্যা কবলিত। এসব এলাকার এক হাজার ২৭৬টি পরিবারের প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।'

পানি বাড়ার কারণে বাড়ি-ঘরে থাকতে পারছে না মানুষ। ছবি: স্টার

তিনি বলেন, 'বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হতে থাকায় পানিবন্দি মানুষের সংখ্যা আরও বাড়বে।'

ইতোমধ্যে জেলার বন্যাকবলিত এলাকায় ১৮০টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হলেও কেউ সেখানে যায়নি। তবে আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে এবং বন্যা কবলিতদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে বলেও জানান এ ত্রাণ কর্মকর্তা।

Comments

The Daily Star  | English

A new chapter for the nation begins

Chief Adviser Prof Muhammad Yunus yesterday said a new chapter has begun as the reform commissions have charted a course for a Bangladesh long aspired by its people.

9h ago