১৫ দিনে ৩ বার ডুবল সিলেট নগরী

পানিতে তলিয়ে গেছে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকা। ছবি: শেখ নাসির/স্টার

গতরাতে টানা তিন ঘণ্টার বৃষ্টিতে সিলেট নগরীর বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। জলাবদ্ধতার কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন এসব এলাকার বাসিন্দারা। এ নিয়ে গত ১৫ দিনে তিনবার পানিতে ডুবেছে সিলেট নগরী।

আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজিব হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শনিবার রাত ৯টা থেকে ১২টা পর্যন্ত ২২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।'

সিলেট শহরের বাসিন্দারা জানান, নগরীর সুবিদবাজার, পাঠানটুলা, মদিনা মার্কেট, কালীবাড়ি, ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বাগবাড়ী, জিন্দাবাজার, শিবগঞ্জ, যতরপুর, সোবহানীঘাট, তালতলা, উপশহর, দরগা মহল্লা, পীর মহল্লা, চৌহাট্টা, মেজরটিলা, শেখঘাট ও বেতারবাজারসহ অন্তত ৫০টি এলাকায় পানি বেড়ে সড়কসহ ঘরবাড়ি ডুবে যায়। এ ছাড়া, মিরাবাজার রোড, বিমানবন্দর সড়ক, ওসমানী মেডিকেল থেকে বর্ণমালা পয়েন্ট ও পাঠানটুলা সড়কসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। 

ছবি: শেখ নাসির/স্টার

মাত্র কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতে সিলেট নগরীতে এমন জলাবদ্ধতায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনেক বাসিন্দা। 

কেউ কেউ ঘরবাড়ি, দোকান ও রাস্তায় জলাবদ্ধতার ছবি এবং ভিডিও পোস্ট করে ক্ষোভের কথা লিখেছেন।

এম এ কাইয়ুম নামে এক বাসিন্দা লিখেছেন, 'ফের ডুবল সিলেট নগরী। দেড় ঘণ্টার বৃষ্টিতে সিলেট নগরীর অধিকাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে।'

আরেক ভুক্তভোগী সাজিদুল হাসান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পাহাড়ি ঢল ও ভারী বর্ষণের কারণে গত ২৯ মে মধ্যরাত থেকে সিলেটের ১০টি উপজেলা ও শহরে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পরে ২ জুন আবার বন্যা হয়। আজ ভোরেও পানিতে তলিয়ে গেছে নগরী।'

তবে কিছু কিছু জায়গার পানি নামতে শুরু করলেও সুরমা নদী এখনো পুরোপুরি টইটুম্বুর। যে কারণে নগরীর জলাবদ্ধতা সমস্যার দ্রুত কোনো সমাধান হচ্ছে না।

ছবি: শেখ নাসির/স্টার

পরিকল্পিত ও পরিবেশবান্ধব সিলেটের দাবিতে প্রায় দুই দশক ধরে নাগরিক আন্দোলন করছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম।

তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত ১৫ দিনে তিনবার ডুবেছে সিলেট নগরী।'

অল্প বৃষ্টিতেই নগরীতে জলাবদ্ধতা তৈরির কারণ সম্পর্কে আব্দুল করিম কিম বলেন, 'মূলত দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা না করে ড্রেন ও বক্স কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে। যা বৃষ্টির পানি প্রবাহ ধারণ করতে পারে না। প্রাকৃতিক ছড়াকে গার্ড ওয়াল দিয়ে সম্পূর্ণ আচ্ছাদিত করায় দুই পাশের মাটি আর পানি শোষণ করে না।'

জলাবদ্ধতার জন্য সুরমা নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি নাগরিকদের অসচেতনতাকেও দায়ী করেন তিনি।

আব্দুল করিম কিম বলেন, 'প্লাস্টিক ও পলিথিন বর্জ্য ড্রেনে ও ছড়ায় ফেলা বন্ধ না করলে এমন ভোগান্তির অবসান কোনো কালেই হবে না।'

উপশহর এলাকার বাসিন্দা সাদ্দাম মিয়া ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অপরিকল্পিত ড্রেন ব্যবস্থা ও অপরিকল্পিত উন্নয়ন সিলেটের মানুষকে ডুবিয়ে দিয়েছে। বিগত মেয়র হাজার হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন করেছিলেন যা অভিশাপে পরিণত হয়েছে। এই জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তির জন্য ড্রেনগুলো আবার খুলে দিতে হবে, যাতে সেগুলো সহজে পরিষ্কার করা যায়।'

সিলেট সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাজলু লস্কর ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সিলেট সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনে কাজ করছেন।'

Comments

The Daily Star  | English

Uncovering the silent deaths of migrant women

In the shadows of booming remittance flows and the quiet resilience of Bangladesh’s labour diaspora, a disturbing reality persists: numerous Bangladeshi female migrant workers, particularly those employed as domestic help in Gulf countries, are returning home in coffins.

17h ago