খালের ওপর পাহাড় ধস, বগালেক থেকে রুমা বাজারে চলাচল বন্ধ
বান্দরবানের রুমায় কয়েক দিনের প্রবল বর্ষণে পাহাড় ধসে রুমাখালের ক্রাইখ্যংমুখ এলাকায় বাঁধ তৈরি হয়েছে। এতে রুমাখাল থেকে প্রবাহিত পাহাড়ি ঢলের নেমে আসা পানি জমে প্রায় ২ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে লেকের মতো তৈরি হয়েছে।
এ অবস্থায় সেখানকার ৫টি পাড়ার ১২০-১৩০টি পারিবারের লোকজন বের হতে পারছেন না।
এ ছাড়া বাঁধটি হঠাৎ করে ভেঙে গেলে জমে থাকা পানির প্রবল স্রোতে আশেপাশের কৃষি জমি ও ক্ষেতখামারের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।
সরে জমিনে দ্য ডেইলি স্টার প্রতিবেদক দেখেন, ক্রাইখ্যং মুখের একটু উপরে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে।
বাঁধের পাশের এলাকায় বসবাসকারী কয়েকজন নারী জানান, গত সোমবার ভোরের দিকে বিকট শব্দ শোনা যায়। সকালে দেখেন, বিশাল জায়গার জুড়ে পাহাড় ধসে রুমা খালে মাটি জেমেছে। এতে সল্প সময়ের মধ্যে খালের উজানে পানি বাড়তে থাকে।
রুমা সদর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার ভাগ্যমনি পাড়ার বাসিন্দা জনমনি ত্রিপুরা (৪৫) জানান, পাহাড় ধসে রুমাখালের কৃত্রিম বাঁধ তৈরি হয়েছে। বাঁধের ফলে উজানের দিকে পানি বেড়েই চলেছে। ফলে ভাগ্যমনি পাড়াসহ ওই এলাকায় কয়েকটি পাড়ার লোকজন বাজারে আসা-যাওয়া করতে পারছেন না। তাদের বাজারে যাওয়ার একমাত্র পথ রুমাখাল।
তিনি আরও জানান, টানা বৃষ্টিতে অন্যান্য স্থানে পানি নেমে গেলেও ক্রাইখ্যং পাড়া এলাকার রুমা খালের মুখে বাঁধের পানি বাড়তে থাকে। এতে বেশ কয়েকটি পাড়ার লোকজন পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানিতে ওই এলাকার অনেক কলা, পেপে, আনারসসহ বিভিন্ন ফল ও ফসলের ক্ষেত ডুবে গেছে।
ওই এলাকার সাবেক মেম্বার শৈ হ্লা প্রু মারমা জানান, ধসে যাওয়া পাহাড়টি অন্ততপক্ষে ৩০-৫০ একরজুড়ে। এতে রুমা খালে প্রায় ১ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে মাটি জমেছে। মাটির উচ্চতা কমপক্ষে ২৫ ফুটের বেশি হবে বলে জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, বাঁধের উজানের দিকে বগামুখ পাড়া, ভাগ্যমনি ত্রিপুরা পাড়া ও উবাংকই পাড়া রয়েছে। তা ছাড়া পাহাড়ে উপরে খুলেন খুমি পাড়া ও প্রলুনতং নামে ২টি পাড়া আছে। এ খাল দিয়েই তাদের রুমা বাজারে যাওয়ার মূল রাস্তা।
রুমা উপজেলার প্রেসক্লাবের সভাপতি শৈ হ্লা চিং মারমা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'রুমাখালের ওপর নির্ভরশীল ৫টি গ্রামের হাজারখানেক মানুষের। এ ছাড়া লেক তৈরি হওয়ার কারণে রুমা বাজার থেকে বগালেক, কেউ কারাডং, তাজিংডং এলাকার মানুষের যাতায়াত বন্ধ হয়ে পড়েছে।' বাধঁটি এমনভাবে তৈরি হয়েছে, সহজে সেটি সরানো যাবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মাহবুবুর হক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ফায়ার সার্ভিসের মাধ্যমে বাঁধের সমস্যাটি সমাধান করা যায় কি না তা দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।'
Comments