বন্যার পানিতে ভিজে শেষ বান্দরবান জেলা গণগ্রন্থাগারের ৩০ হাজার বই

গ্রন্থাগারের বারান্দায় ভিজে যাওয়া বইয়ের স্তূপ। ছবি: স্টার

বান্দরবানের ভয়াবহ বন্যায় প্লাবিত জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগারের ৩০ হাজারের বেশি বই ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে। সেইসঙ্গে বিনষ্ট হয়েছে গ্রন্থাগার কার্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র এবং ১৯৮৮ সাল থেকে বাঁধাই করে রাখা বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিক, সাপ্তাহিক ও মাসিক পত্রিকার কপি।

আজ রোববার জেলার একমাত্র এই গণগ্রন্থাগারে গিয়ে দেখা যায়, ভিজে নষ্ট হয়ে যাওয়া বইগুলো লাইব্রেরি ভবনের বারান্দাসহ বিভিন্ন জায়গায় স্তূপ করে রাখা হয়েছে। কিছু বই তখনো জমে থাকা পানিতে ভাসছে। গ্রন্থাগারের আবসাবপত্র ও বইয়ের তাকগুলোতে জমে আছে কাদামাটি। কিছু কর্মী তা পরিষ্কারের চেষ্টা করছেন।

এই গ্রন্থাগারের সহাকারী গ্রন্থাগারিক মা শৈ থুই চাক দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, চলতি মাসের ২ তারিখ থেকে ৮ তারিখ পর্যন্ত টানা বৃষ্টিতে বান্দরবানের অধিকাংশ এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়ে। এতে একতলা গ্রন্থাগার ভবনটিতেও পানি প্রায় ১০ ফুট উচ্চতায় পৌঁছায়। ফলে ভেতরে থাকা কোনো বইই রক্ষা করা সম্ভব হয়নি।

কিছুই বাঁচানো যায়নি। ছবি: স্টার

তার কাছ থেকে আরও জানা যায়, এক সময় এই গ্রন্থাগারের সংগ্রহে বইসহ বিভিন্ন দেশি-বিদেশি পত্রিকা, জার্নাল ও ঐতিহাসিক নথিপত্রের সংখ্যা ছিল ৩৮ হাজারের বেশি। ২০১৯ সালের বন্যায় ৮ হাজারের মতো বই নষ্ট হয়ে যায়। এবার এর কিছুই বাঁচানো যায়নি।

এবারের বন্যায় বইপত্রের পাশাপাশি গ্রন্থাগারের ২টি কম্পিউটার, ১টি প্রজেক্টর ও স্ক্যানার এবং ৪টি সিসিটিভি ক্যামেরাও নষ্ট হয়েছে বলে জানান মা শৈ থুই চাক।

এদিন গ্রন্থাগারের সামনে কথা হয় এখানকার নিয়মিত পাঠক ও চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী অং সাই ম্যা মারমা এবং প্রিয়তোষ দাশের সঙ্গে।

তাকে থাকা ভেজা বইয়ে কাদামাটির স্তর। ছবি: স্টার

তাদের ভাষ্য, এই গ্রন্থাগারের সংগ্রহে থাকা দেশি-বিদেশি লেখকদের বই, জার্নাল, পত্রিকাগুলো ছিল তাদের অবসর কাটানোর সঙ্গী। নিয়মিত যাতায়াত থাকায় এগুলোর সঙ্গে তাদের দারুন একটি সম্পর্ক হয়ে গিয়েছিল। এখন বন্যার পানিতে নষ্ট হয়ে যাওয়া বইগুলো দেখে তাদের খুবই কষ্ট লাগছে।

অং সাই ম্যা মারমা বলেন, 'এই কষ্ট বোঝানোর ভাষা আমাদের নেই।'

সংগ্রহে থাকা পুরোনা নথিপত্রেরও একই দশা। ছবি: স্টার

বন্যার ক্ষত সারিয়ে তুলে গ্রন্থাগারটিতে দ্রুত পাঠের পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে যথাযথ উদ্যোগ নেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি আবেদন জানান তারা।  

এবাবের বন্যায় বান্দরবানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে জানতে চাইলে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফরিদুল আলম হোসাইনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বন্যায় বান্দরবান ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ ছাড়া প্রায় সবগুলো স্কুল কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে বন্যার কারণে অনেকদিন বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকার কারণে ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা যায়নি।'

Comments

The Daily Star  | English

Public admin reforms: Cluster system may be proposed for ministries

The Public Administration Reform Commission is likely to recommend reducing the number of ministries and divisions to 30 from 55 to improve coordination and slash the government’s operational cost.

6h ago