স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে পটুয়াখালী উপকূলের জনজীবন
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং-এর প্রভাবে পটুয়াখালীর উপকূলজুড়ে টানা বর্ষণ থেমেছে। সোমবার রাত ৮টার পর থেকে বৃষ্টি থেমে গেলেও তার আগে দুদিনে প্রায় ২০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া বিভাগ।
আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে আকাশে হালকা মেঘ রয়েছে এবং মেঘের ফাঁক দিয়ে সূর্য উঁকি দেওয়ায় জনজীবনে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে।
জেলার ৮ উপজেলার বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ৬০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে বলে জানান জেলা ত্রাণ ও পূণর্বাসন কর্মকর্তা সুমন কমুার দেবনাথ।
তিনি জানান, জেলায় মোট ৭০৩টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছিল এবং আশ্রয়গ্রহণকারীদের মধ্যে উপজেলা ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে রাতে শুকনো খাবার ও খিচুড়ি বিতরণ করা হয়েছে।
জেলার ৮ টি উপজেলার মধ্যে ৫ উপজেলায় এখনো বিদ্যুৎ সরবরাবহ স্বাভাবিক হয়নি। গ্রামীণ জনপদে গাছপালা ভেঙেপড়াসহ ক্ষয়ক্ষতির বিষয়গুলো পরীক্ষা করেই বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করা হবে বলে জানান পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার শাহ মো. আব্দুর রহমান।
এদিকে টানা বর্ষণে পটুয়াখালী জেলার বিভিন্ন এলাকার অসংখ্য মাছের ঘের ও পুকুর পানিতে তলিয়ে গেছে। নদ-নদীর পানির উচ্চতা ২ থেকে ৩ ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি প্রবেশ করে প্লাবিত হয়েছে জেলার অর্ধশতাধিক গ্রাম। এ ছাড়া বাতাসের চাপ অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে।
ঝড়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণে কাজ শুরু হয়েছে বলে জানান, পটুয়াখালী জেলা মৎস্য অফিসার আজহারুল ইসলাম।
কিছু দুর্বল বেড়িবাঁধ ক্ষগ্রিস্থ হয়েছে উল্লেখ করে পটুয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফ হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা নিরুপণে কাজ শুরু করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ কামাল হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, ঘূর্ণিঝড়ে বেড়িবাধ, ঘরবাড়িসহ মৎস্য ও ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণের জন্য মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া আজ সকালে পটুয়াখালী সদর উপজেলার প্রতাপপুর খেয়াঘাটে নুরুল ইসলাম (৩৫) নামে নিখোঁজ হওয়া ট্রলার শ্রমিকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
তার বাড়ি পটুয়াখালী সদর উপজেলার লোহালিয়া ইউনিয়নের প্রতাপপুর গ্রামে। সোমবার রাত ৯টা থেকে নিখোঁজ ছিল। পটুয়াখালী থেকে ইট বোঝাই করে বকা এলাকায় যাওয়ার পথে ট্রলারটি ডুবে গেলে তিনি নিখোঁজ হন।
Comments