পরীমনির ব্যক্তিজীবন নিয়ে যত সরব, অভিনয় নিয়ে তত চুপ!
মুহম্মদ জাফর ইকবালের লেখা 'রাতুলের রাত রাতুলের দিন' উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে শিশুতোষ সিনেমা 'অ্যাডভেঞ্চার অব সুন্দরবন'।
আবু রায়হান জুয়েল পরিচালিত সিনেমাটিতে অভিনয় করেছেন- পরীমনি, সিয়াম আহমেদ, শহীদুল আলম সাচ্চু, আজাদ আবুল কালাম, কচি খন্দকার, আশিষ খন্দকার, আবু হুরায়রা তানভীরসহ অনেকে।
কিছুদিন আগে সিনেমাটির বিশেষ প্রদর্শনী শেষে মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, 'সিনেমাটি দেখতে আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। ছোটদের সিনেমা যেমন হওয়া উচিত ঠিক তেমন হয়েছে। সিনেমাটিতে পরীমনি, সিয়াম ভালো অভিনয় করেছে। তবে, একটা বিষয় ঠিক করেছি এখন থেকে আগের কোনো বই থেকে সিনেমা নির্মাণ করতে অনুমতি দেব না। শুধু সিনেমার জন্যই আলাদা করে লিখব।'
পরীমনির সঙ্গে বিশেষ প্রদর্শনীতে সিনেমাটি দেখা শেষে স্বামী শরিফুল রাজ বলেন, 'আমার খুব ভালো লেগেছে পরীর অভিনয়। ও তো একজন জাতশিল্পী। দুর্দান্ত অভিনয় করেছে, আমার মন ছুঁয়ে গেছে।'
'অ্যাডভেঞ্চার অব সুন্দরবন' সিনেমাটি গত ২০ জানুয়ারি মুক্তি পেয়েছে। মুক্তির পর থেকে ছোটদের পছন্দের তালিকায় চলে এসেছে। শিশু-কিশোর বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে সিনেমাটি দেখতে ভিড় করছে। তাদের পাশাপাশি বড়দের অনেকেই সিনেমা দেখতে প্রেক্ষাগৃহে আসছেন।
'রাতুলের রাত রাতুলের দিন' উপন্যাসের পাতার নিশ্চুপ হয়ে থাকা চরিত্র থেকে সিনেমার পর্দায় দারুণভাবে 'তৃষা' হয়ে উঠেছেন পরীমনি। যার স্বাভাবিক অভিনয় চোখ, মন হৃদয় জুড়ে গেঁথে থাকবে দীর্ঘদিন। অভিনয়, অভিব্যক্তি একবারের জন্য বাড়তি কোনো কিছু মনে হয় না। সিনেমার গল্প-চরিত্র যুতসই হলেই এমনিতেই জাত অভিনেত্রী হয়ে জ্বলে উঠেন। তবে, এই অভিনেত্রীর ব্যক্তিজীবন নিয়ে সবাই যেভাবে সরব। অভিনয় নিয়ে ঠিক ততোটা চুপচাপ।
রাতুল চরিত্রে সিয়াম আহমেদ যেভাবে নিজেকে মেলে ধরেছেন তাকে তাকে ছাড়া এই চরিত্রে অন্য কাউকে ভাবাই যাচ্ছে না। প্রথম থেকেই খুব জমিয়ে অভিনয় করেছেন তিনি। তাকে ছাড়া চরিত্রটি অসম্পূর্ণ মনে হতে পারে। তবে কয়েক জায়গায় গলা মোটা করে অভিনয় করেছেন, যা খুবই বিরক্তকর মনে হয়েছে।
সিনেমার দ্বিতীয়ার্ধে পুরো আলো নিজের দিকে টেনেছেন 'নসু ডাকাত' চরিত্রের অভিনয়শিল্পী আশিষ খন্দকার। অভিনয়, অভিব্যক্তি, চোখের ব্যবহার করে আলাদা কিছু দেখিয়েছেন এই অভিনেতা। অবশ্য কিছু জায়গায় তার অতি অভিনয় চোখে লেগেছে। এছাড়া কবি চরিত্রের অভিনয়শিল্পী আজাদ আবুল কালাম যথাযথ ছিলেন। কিছু জায়গায় তাকে কৌতুকশিল্পী মনে হয়েছে। সিরিয়াস চরিত্রের বাইরে এমনভাবে প্রথম দেখা গেল তাকে। সে কারণে হয়তো তাকে কিছুটা অচেনা লেগেছে।
সিনেমায় কয়েকটি গান আছে। সিনেমাটির জন্য প্রথমবার গান লিখেছেন মুহম্মদ জাফর ইকবাল নিজেও। তার লেখা গানটি মোটামুটি। তবে, সিনেমাটির অন্য একটি গান 'আসল ছাইড়া নকল রঙে' সিনেমার গল্পে দারুণভাবে মানিয়ে গেছে।
পরিচালক হিসেবে আবু রায়হান জুয়েলের প্রথম সিনেমা মনেই হয়নি। তার পরিচালিত দ্বিতীয় সিনেমার অপেক্ষায় দর্শক থাকতেই পারেন।
Comments