৪০৬ দিন পর অভিনয় ও অ্যাকশনে জ্বলে উঠলেন আরিফিন শুভ

৪০৬ দিন পর অভিনয় ও অ্যাকশনে জ্বলে উঠলেন আরিফিন শুভ
আরিফিন শুভ। ছবি: শেখ মেহেদী মোর্শেদ

'মিশন এক্সট্রিম' সিনেমার প্রথম পর্ব মুক্তির ঠিক ৪০৬ দিন পর মুক্তি পেয়েছে দ্বিতীয় পর্ব 'ব্ল্যাক ওয়ার'। প্রথম পর্ব যেখান থেকে শেষ হয়েছিল ঠিক সেখান থেকেই শুরু হয়েছে সিনেমাটির দ্বিতীয় পর্বের গল্প।

সিনেমাটির মূল গল্প জঙ্গিবাদ। সেখানে দেখানো হয়েছে জঙ্গিরা কীভাবে তাদের কর্মকাণ্ডের বিস্তার ঘটায় এবং জঙ্গিবাদ নির্মূলে পুলিশের ভূমিকা। পুলিশ অ্যাকশন থ্রিলার এই 'ব্ল্যাক ওয়ার' সিনেমার গল্প চমৎকারভাবে রুপালী পর্দায় লিখেছেন পরিচালক জুটি সানী সানোয়ার ও ফয়সাল আহমেদ।

এর আগে, প্রথম পর্ব মুক্তি পেয়েছিল ২০২১ সালের ৩ ডিসেম্বর। দ্বিতীয় পর্ব মুক্তি পেল চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি।

প্রথম পর্বে দর্শকের মনে যেসব প্রশ্ন উঠেছিল সেগুলোর উত্তরই যেন দ্বিতীয় পর্ব। তবে 'ব্ল্যাক ওয়ার' অনেক বেশি জমজমাট প্রথম পর্বের চেয়ে। বাংলাদেশের মতো জায়গায় অল্প বাজেটে এমন থ্রিলার অ্যাকশন সিনেমা নির্মাণ করা সত্যি কষ্টসাধ্য। তারপরেও তারা চেষ্টা করেছেন এটাই বড় ব্যাপার। কিন্তু, পুলিশ অ্যাকশন থ্রিলার সিনেমাটি কেন এই সময়ে মুক্তি পেল সেটা ঠিক বোঝা গেল না! কোনো উৎসবে যদি 'ব্ল্যাক ওয়ার' মুক্তি পেত তাহলে আরও দর্শকের কাছে পৌঁছে যেত।

সিনেমাটির বড় প্রাপ্তি আরিফিন শুভর অভিনয় ও অ্যাকশন দৃশ্য। মাত্র ৪ মিনিটের অ্যাকশন দৃশ্যের জন্য বাংলাদেশের কোনো নায়ক দীর্ঘ ৯ মাস কঠোর পরিশ্রম করেছেন কিনা আমাদের জানা নেই। কিন্তু শুভ সেটা করেছেন। চরিত্রটির জন্য সিক্সপ্যাক শরীর তৈরি করেছেন। সিনেমার সেই ৪ মিনিটের অ্যাকশন দৃশ্যে পর্দা থেকে এক মুহূর্তের জন্যও চোখ সরানো যায়নি। চরিত্রের জন্য এমন নিবেদিত নায়ককে সময়ের সেরা বলা যায়। 'ব্ল্যাক ওয়ার' সিনেমায় তার অভিনীত চরিত্রটির বিকল্প বাংলাদেশে আর কোনো নায়কের দেখা পাওয়া অসম্ভব।

চরিত্রের জন্য এমন নিবেদিত নায়ককে সময়ের সেরা বলা যায়। 'ব্ল্যাক ওয়ার' সিনেমায় তার অভিনীত চরিত্রটির বিকল্প বাংলাদেশে আর কোনো নায়কের দেখা পাওয়া অসম্ভব।

আরিফিন শুভ পরিমিত ও পরিশীলিত অভিনয়ে মুগ্ধ করেছেন দর্শকদের। বিশেষ করে তার মায়ের আইসিইউতে থাকার খবর শোনার পরেও মিশনে যাওয়ার দৃশ্য, মনোজ প্রামাণিকের সঙ্গে কোরআনের আয়াত নিয়ে দীর্ঘ কথোপকথন ছিল অসাধারণ। তার মতো অভিনয়, অ্যাকশন, স্মার্ট নায়কের সংখ্যা বাংলা সিনেমায় হাতে গোনা।

অভিনয় দিয়ে নিজের দিকে চোখ ফেরাতে বাধ্য করেছেন সাদিয়া নাবিলা। সিনেমায় যার চোখ সবচেয়ে বেশি অভিনয় করেছে। কয়েকটি দৃশ্যে তার চোখের দুর্দান্ত অভিনয় মন জুড়িয়েছে। চোখ আর অভিনয় পারদর্শিতা  মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে পর্দায়। বিশেষভাবে নিজের প্রেমিকের মৃত্যুর খবর শোনার পর নাবিলার চোখের অভিনয় দর্শকের মাঝে মুগ্ধতা ছড়িয়েছে।

সিনেমাটির অন্যতম নায়িকা জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশীর এই পর্বে তেমন কিছু করার ছিল না। ঠিক সে কারণেই আলো ছড়াতে পারেননি। তবে স্নিগ্ধ সতেজ লেগেছে পর্দায়।

বরাবরের মতো তাসকিন গল্পের চরিত্র হয়ে উঠতে চেয়েছেন। কিন্তু, আগের সিনেমাগুলোতে খলনায়ক হিসেবে যতোটা ক্ষুরধার ছিলেন এই সিনেমায় ততোটা ধারালো লাগেনি। সুমিত সেনগুপ্ত নিজের অভিনীত চরিত্র হওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন। কিন্তু, তার অভিনীত চরিত্রটির ব্যাপ্তি আরেকটু বেশি হলে হয়তো জ্বলে উঠতে পারতেন। ফজলুর রহমান বাবু ছোট একটি চরিত্রে অভিনয় করেও দর্শকদের মনে জায়গা করে নিয়েছেন, মনোজ প্রামাণিকের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। তবে মিশা সওদাগর, ইরেশ জাকের জ্বলে উঠতে পারেননি চরিত্রের গন্তব্যহীনতার কারণে।

'ব্ল্যাক ওয়ার' সিনেমায় নোবেলের কণ্ঠে 'মা' গানটি সিনেমার দৃশ্যের সঙ্গে দারুণ মানানসই ছিল। অচেনা এক গভীর আবেগে ভাসিয়েছে গানটির কথা, সুর ও সংগীত। আইটেম গান 'চালাও গুলি' সিনেমায় না থাকলেও  কোনো প্রভাব পড়ত না গল্পে। আরেকটি বিষয় সিনেমার মধ্যে বিভিন্ন পণ্যের বিজ্ঞাপনের প্রমোশন দৃষ্টিকটু লেগেছে। সবকিছু ছাপিয়ে যারা অ্যাকশন থ্রিলার সিনেমা দেখতে পছন্দ করেন তারা সিনেমাটি দেখতে সিনেমা হলে যেতে পারেন। হয়তো হতাশ হবেন না।

Comments

The Daily Star  | English

World leaders split as ICC issues arrest warrant for Netanyahu

The court also issued warrants for Israel's former defence minister as well as Hamas's military chief Mohammed Deif

11m ago