সিনেমাতে আসল বীরের খোঁজ
গতকাল সারাদেশের ৩৪টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে সাইদুল ইসলাম রানা পরিচালিত 'বীরত্ব'। মুক্তির প্রথম দিনে দারুণ সাড়া ফেলেছে সিনেমাটি। কয়েক মাস ধরে বাংলা সিনেমার পালে নতুন বাতাস বইছে। সেই পালে যুক্ত হয়েছে 'বীরত্ব'।
'বীরত্ব' সিনেমা দেখতে দেখতে দর্শক গল্পের কোথায় বীর আছেন সেটা খুঁজবেন। মনে হতে পারে আদৌ কী তেমন কেউ আছে সিনেমার গল্পে। কিন্তু, একসময় নিজেই পেয়ে যাবেন সেই বীরের সন্ধান। আর বীর হলেনে ইমন, গল্পে যার চরিত্রের নাম রাজু। দর্শক বীরত্বের ছাপ খুঁজে পাবেন পুরো সিনেমার গল্পে। একজন চিকিৎসক কীভাবে মানুষের জন্য নিজেকে বিলিয়ে দিয়ে দামি ক্যারিয়ার, প্রেম, মা সবকিছু হারিয়ে ফেললেন। মূলত রাজুর গল্প থেকেই বীরত্ব সিনেমার নাম হয়েছে।
প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত ইমনের অভিনয় ছিল সাবলীল। ইমনের মেয়ের চরিত্রের শিশুশিল্পী মুনতাহা এমেলিয়াও দারুণ অভিনয় করেছেন। বাবা-মেয়ের দৃশ্য দর্শকদের চোখে গেঁথে থাকার মতো। মনেই হয়নি তারা বাবা-মেয়ের অভিনয় করছেন। তারা ২ জনই চরিত্র হয়ে উঠেছেন, মিশে গেছেন অভিনয়ের সঙ্গে। যারা এর আগে ইমনের অভিনয় দেখেছেন এই সিনেমায় তার পরিমিত অভিনয়ে চমকিত ও মুগ্ধ হবেন।
'বীরত্ব' সিনেমার গল্পকে আরও বেগবান করেছেন নিপুণ। সিনেমায় তার চরিত্র লুৎফা। একজন যৌনকর্মীর ভূমিকায় তিনি অভিনয় করেছেন। অভিনয়ের জাদুতে দারুণভাবে সেই চরিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন নিপুণ। চরিত্রটি ছোট হলেও সিনেমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
টেলিভিশনের অভিনেতা আহসান হাবিব নাসিমকে দর্শকরা অন্যভাবে পাবেন এই সিনেমাতে। তার গেটআপ-লুকে নিয়ে কিছুটা বিভ্রান্ত হতে পারবেন দর্শক। চরিত্র হয়েই পর্দায় মন কেড়েছেন শেষ পর্যন্ত। ভিলেন চরিত্রের ইন্তেখাব দিনার বাণিজ্যিক সিনেমায় কতোটা মানানসই সেজন্য আরও অপেক্ষা করতে হবে। তবে, সিনেমার অনেক ভিলেনের চেয়ে ভালো এটা বলা যায়। অভিনয়ে তিনি হুমায়ুন ফরিদীর ভক্ত সেটা তার সংলাপ বলা, ম্যানারিজমে বারবার বোঝা গেছে।
নায়িকা চরিত্রের নবাগত সালওয়া অভিনয় করেছেন নায়ক ইমনের সঙ্গে। তার অভিনয় গানের দৃশ্যে নায়িকা হিসেবে সবটুকু সুযোগ থাকার পরও নিজের প্রতি সদ্ব্যবহার করতে পারেননি। আইটেম গানে জান্নাত মিষ্টিকে দেখতে মন্দ লাগেনি। তবে, ভিলেন দেখাতে হলে কেন আইটেম গান রাখতে হবে সেটা ঠিক বোঝা গেল না।
অন্যান্য চরিত্রে জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, আরমান পারভেজ মুরাদ, রওনক হাসান, মুনিরা মিঠু, বড়দা মিঠু, শামীম ভিস্তি, কচি খন্দকার, জেসমীন, প্রিয়ন্তীসহ অনেকেই অভিনয় করেছেন। এসব চরিত্রের উপস্থিতি খুব ছোট হলেও অভিনয় করতে রাজি হয়েছেন এটাই পরিচালকের বিরাট প্রাপ্তি।
তবে, আবহসংগীতের বিষয়ে পরিচালককে আরও মনোযোগী হওয়া উচিত ছিল। মনে দাগ কাটার মতো কোনো গান ছিল না পুরো সিনেমায়। গল্পের সময়সীমা কমিয়ে আরও ছোট করলে কোনো সমস্যা হতো না।
Comments