বর্ণাঢ্য আয়োজনে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র, শেখ হাসিনা,
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে পুরস্কার প্রদান করা হয়। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে তারার মেলা বসেছিল বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে। দেশের বরেণ্য চলচ্চিত্র তারকাদের ছবি ও পোস্টারে ভরা ছিল চারদিক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে পুরস্কার প্রদান করা হয়।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হাসানুল হক ইনু এবং সভাপতিত্ব করেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন তথ্যসচিব মো. হুমায়ুন কবীর খন্দকার। এরপর আজীবন সম্মাননা ও পুরস্কারপ্রাপ্তদের নাম ঘোষণা করা হয় এবং পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

এবার আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন ইলিয়াস কাঞ্চন ও ডলি জহুর। পুরস্কার নিয়ে ডলি জহুর বলেন, 'বঙ্গবন্ধু এফডিসি প্রতিষ্ঠাসহ চলচ্চিত্রের শিল্পের জন্য বড় অবদান রেখেছিলেন। আমার আজীবন সম্মাননা প্রাপ্তির জন্য বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। এই সম্মাননা গ্রহণ করে নিজেকে ধন্য মনে করছি। জুরিবোর্ডকেও ধন্যবাদ।'

সভাপতির বক্তব্যে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, 'এদেশের সিনেমার গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস আছে। অনেক কালজয়ী সিনেমা আছে আমাদের। বাংলাদেশের সিনেমা দিন দিন এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের চলচ্চিত্র ঘুরে দাঁড়িয়েছে।'

তিনি আরও বলেন, 'বাংলাদেশের সিনেমা হাওয়া কলকাতায় ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে। হাওয়া সিনেমার জন্য কলকাতায় এক কিলোমিটার লাইন হয়েছিল টিকিটের জন্য। দেশের ভেতরে নতুন নতুন সিনেপ্লেক্স হচ্ছে। নতুন নতুন মেধাবী পরিচালকরা আসছেন, শিল্পীরা আসছেন। এটা আনন্দের সংবাদ।'

প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, '২০২১ সালের জন্য যারা বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পেলেন, সবাইকে অভিনন্দন ও আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। এটা মহান স্বাধীনতার মাস। ৭ মার্চ ঐতিহাসিক দিন। ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন। ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস। এরকম একটি গুরুত্বপূর্ণ মাসে পুরস্কার দিতে পেরে ভালো লাগছে।'

২০২১ সালের জন্য মোট ৭ ক্যাটাগরিতে ৩৪টি পুরস্কার দেওয়া হয় আজ। সেরা অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছেন যৌথভাবে  মীর সাব্বির (রাত জাগা ফুল) এবং সিয়াম আহমেদ (মৃধা বনাম মৃধা)। সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছেন যৌথভাবে আজমেরি হক বাঁধন (রেহানা মরিয়ম নূর) এবং তাসনোভা তামান্না (নোনা জলের কাব্য)।

সেরা সিনেমার পুরস্কার দেওয়া হয়েছে লাল মোরগের ঝুঁটি ও নোনা জলের কাব্য সিনেমাকে। এছাড়া সেরা পরিচালকের পুরস্কার পেয়েছেন নোনা জলের কাব্য সিনেমার পরিচালক রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত। পার্শ্ব চরিত্রে  অভিনয়ের জন্য সেরা অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছেন এম ফজলুর রহমান বাবু (নোনা জলের কাব্য), সেরা পার্শ্ব অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছেন শম্পা রেজা (পদ্মপুরাণ)।

খল চরিত্রের জন্য পুরস্কার পেয়েছেন আবদুল মান্নান জয়রাজ (লাল মোরগের ঝুঁটি)। কৌতুক চরিত্রে সেরা অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছেন প্রভাষ কুমার ভট্টাচার্য মিলন (মৃধা বনাম মৃধা)।

সেরা শিশুশিল্পীর পুরস্কার পেয়েছে আফিয়া তাবাসসুম (রেহানা মরিয়ম নূর)। শিশুশিল্পী শাখায় বিশেষ পুরস্কার পেয়েছে জান্নাতুল মাওয়া ঝিলিক (যা হারিয়ে যায়), সেরা সংগীত পরিচালকের পুরস্কার পেয়েছেন সুজেয় শ্যাম (যৈবতী কন্যার মন), সেরা গায়ক হিসেবে পুরস্কার পেয়েছেন কে এম আবদুল্লাহ আল মুর্তজা মুহিন (শোনাতে এসেছি আজ, পদ্মপুরাণ)।

সেরা গায়িকা চন্দনা মজুমদার (দেখলে ছবি পাগল হবি, পদ্মপুরাণ)। সেরা গীতিকার গাজী মাজহারুল আনোয়ার (অন্তরে অন্তর জ্বালা, যৈবতী কন্যার মন)। সেরা সুরকার সুজেয় শ্যাম (অন্তরে অন্তর জ্বালা, যৈবতী কন্যার মন)।

সেরা কাহিনীকার রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত (নোনা জলের কাব্য), সেরা চিত্রনাট্যকার নুরুল আলম আতিক (লাল মুরগের ঝুঁটি)। সেরা সংলাপ রচয়িতা তৌকির আহমেদ (স্ফুলিঙ্গ)।

সেরা সম্পাদক সামির আহমেদ (লাল মুরগের ছুটি), সেরা শিল্প নির্দেশক শিহাব নুরুরন নবী (নোনা জলের কাব্য), সেরা চিত্রগ্রাহক দলগত সৈয়দ কাশেফ শাহবাজি, সুমন কুমার সরকার, মাজহারুল ইসলাম রাজু (লাল মুরগের ঝুটি), সেরা শব্দগ্রাহক শৈব তালুকদার (রেহানা মরিয়ম নূর), সেরা পোশাক ও সাজসজ্জা ইদিলা কাছরিন ফরিদ (নোনা জলের কাব্য), সেরা রূপসজ্জাকর দলগত মো. ফরুখ, মো. ফরহাদ রেজা মিলন (লাল মোরগের ঝুঁটি)।

এ ছাড়া শ্রেষ্ঠ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র 'ধড়' (আকা রেজা গালিব), সেরা প্রামাণ্য চলচ্চিত্র 'বধ্যভূমিতে একদিন' (কাওসার চৌধুরী)।

চিত্রনায়ক ফেরদৌস ও নায়িকা নুসরাত ফারিয়া অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন। ওয়ার্দা রিহাব ও তার দল নাচ পরিবেশন করেন। ২৬ জন তারকা অংশ নেন বিভিন্ন পারফরমেন্সে। তাদের মধ্যে ছিলেন- অপু বিশ্বাস, ইমন, নিরব, নিপুণ, দীঘি, পূজা চেরি, ঐশী, জায়েদ খান প্রমুখ, সাইমন, নিরব প্রমুখ। গান পরিবেশন করেন পার্থ বড়ুয়া, আঁখি আলমগীর, সাব্বির, কোনাল, লিজা, ইমরান, নিশিতা বড়ুয়া প্রমুখ।

ডলি জহুর আজীবন সম্মাননা গ্রহণ করলেও ইলিয়াস কাঞ্চন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না। একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিতে দেশের বাইরে আছেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Digital dreams, disconnected realities

A deep-rooted divide in access to devices, internet connectivity, and digital literacy separates rural communities from urban counterparts

15h ago