হৃতিক রোশনের সর্বোচ্চ আয় করা সাত সিনেমা
বলিউডের সফল তারকাদের একজন হৃতিক রোশন। ভক্তের সংখ্যার দিক দিয়েও তিনি বেশি এগিয়ে। ২০ বছরের বেশি সময় ধরে দর্শকদের মুগ্ধ করে চলেছেন এই তারকা। তার আকর্ষণীয় লুক, ক্যারিশমাটিক উপস্থাপনা ও বহুমুখী প্রতিভা ভক্তদের খুবই পছন্দ।
অভিনয় ক্যারিয়ারে তিনি কেবল তারকাচালিত ভূমিকাতে অভিনয় করেননি, চরিত্রচালিত চ্যালেঞ্জও নিয়েছেন, সফলও হয়েছেন। বক্স অফিসে তার সিনেমাগুলো ভালো দাপট দেখাতে পেরেছে। এখানে বিশ্বব্যাপী বক্স অফিসে হৃতিক রোশনের সর্বাধিক আয় করা সাতটি সিনেমার তথ্য জেনে নিন।
ওয়ার
সিদ্ধার্থ আনন্দ পরিচালিত ও টাইগার শ্রফ ও বাণী কাপুর অভিনীত ওয়ার হৃতিক রোশনের এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি আয় করা সিনেমা। ওয়ার সব ভাষাসহ ভারতীয় বক্স অফিসে ৩০০ কোটি রুপির বেশি আয় করেছে এবং বিশ্বব্যাপী প্রায় ৪৫৭ কোটি রুপি আয় করেছে। এটি ২০১৯ সালের সর্বোচ্চ আয়কারী হিন্দি সিনেমা ছিল।
ওয়ার সব বক্স অফিস রেকর্ড ভেঙে দ্রুত হৃতিক রোশনের ব্লকবাস্টার চলচ্চিত্রের তালিকায় প্রবেশ করে। এই সিনেমাটি হৃতিক রোশনের অগ্নিপথ ও প্রথম ব্লকবাস্টার কৃষ থ্রির পর শুরুতেই হিট হওয়া আরেকটি সিনেমা হয়ে ওঠে। ওয়ার প্রথম হিন্দি চলচ্চিত্র, যা একদিনে ৫০ কোটি রুপির বেশি আয় করে এবং সিনেমাটি এখনো সর্বকালের শীর্ষ পাঁচ হিন্দি ওপেনারের মধ্যে আছে। ওয়ার এমন এক সময়ে মুক্তি পেয়েছিল যখন দর্শক ছোট গল্পের চলচ্চিত্রের প্রতি বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছিল। ওয়ারের আগে টাইগার ফ্র্যাঞ্চাইজির দুটি সিনেমামুক্তি পেলেও ওয়ারের সময়েই স্পাই ইউনিভার্সের ধারণা আসে আদিত্য চোপড়ার মাথায়।
ফাইটার
সিদ্ধার্থ আনন্দ পরিচালিত এবং দীপিকা পাড়ুকোন ও অনিল কাপুর অভিনীত হৃতিক রোশনের আরেকটি সিনেমা বিশ্বব্যাপী ৩৪০ কোটি রুপি আয় করেছে। সিনেমাটি মুক্তির আগে আকাশছোঁয়া প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু সেই প্রত্যাশা পূরণ করতে না পারলেও সিনেমাটি ভালো ব্যবসা করেছে। প্রথম সপ্তাহের আয়ে ভয়াবহ পতনের পরে ধীরে ধীরে দৃঢ়ভাবে বক্স অফিসে ফিরে আসে। উপসাগরীয় অঞ্চলে না পারলেও বিদেশে ঠিকই হিট হয়েছিল ফাইটার।
কৃষ থ্রি
রাকেশ রোশন পরিচালিত এবং প্রিয়াঙ্কা চোপড়া, বিবেক ও কঙ্গনা অভিনীত হৃতিকের কৃষ থ্রি বক্স অফিসে ব্লকবাস্টার হয়। সিনেমাটি তখন হৃতিক রোশনের সর্বোচ্চ আয় করা চলচ্চিত্র হয়ে ওঠে। মুক্তির ১১ বছর পরও এটি হৃতিক রোশনের বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে বেশি আয় করা সিনেমার তালিকায় তৃতীয় স্থান দখল করে আছে।
কৃষ থ্রি প্রাক-দীপাবলিতে বক্স অফিসে দুর্দান্ত শুরু করেছিল এবং একদিনে সর্বোচ্চ রেকর্ড আয় করেছিল। ভারতীয় বক্স অফিসে সিনেমাটি ১৮৪ কোটি রুপি আয় করলেও বিশ্বব্যাপী বক্স অফিসে ৩০০ কোটি রুপির কিছু বেশি আয় করে। কৃষ থ্রি ও ব্যাং ব্যাং এর পর হৃতিক রোশনের অন্য সিনেমাগুলো খুব বেশি আয় করতে পারেনি। তবে ২০১৯ সালে ওয়ার দিয়ে তিনি কৃষ থ্রির আয়কে টপকে যান।
ব্যাং ব্যাং
ব্যাং ব্যাং হৃতিক রোশন ও সিদ্ধার্থ আনন্দের প্রথম সিনেমা। ক্যাটরিনা কাইফ অভিনীত এই সিনেমাটি মুক্তির সময় সর্বকালের অন্যতম আলোচিত ভারতীয় চলচ্চিত্র ছিল। হায়দারের মতো প্রতিদ্বন্দ্বী চলচ্চিত্রের সঙ্গে বক্স অফিসে লড়াই করেও ব্যাং ব্যাং দারুণ পারফর্ম করেছিল।
ব্যাং ব্যাং ভারতীয় বক্স অফিসে ১৪৭ কোটি রুপি আয় করে এবং বিশ্বব্যাপী বক্স অফিসে ২৭৮ কোটি রুপি আয় করে। সিদ্ধার্থ আনন্দ পরিচালিত ২০১৯ সালে ওয়ার মুক্তির আগে পর্যন্ত এটিই হৃতিক রোশনের সবচেয়ে বড় ওপেনার ছিল। ব্যাং ব্যাংকে অনেকেই হৃতিকের কামব্যাক সিনেমা হিসেবে মনে করেন।
সুপার থার্টি
বক্স অফিসে তখন একের পর এক মুখ থুবড়ে পড়ছে হৃতিক রোশনের সিনেমা। সেই সময়ে বিকাশ বহেল পরিচালিত ও ম্রুনাল ঠাকুর অভিনীত সুপার থার্টি দিয়ে বক্স অফিসে প্রত্যাবর্তন করেন হৃতিক। সিনেমাটি বিশ্বব্যাপী ২০০ কোটি রুপির বেশি আয় করে বক্স অফিসে হিট হয়েছিল।
সিনেমাতে হৃতিক এমন একজন শিক্ষকের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন, যিনি নিশ্চিত করেছিলেন ৩০ জন সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীর শিক্ষা। এটি হৃতিক রোশনের জন্য ভিন্ন অভিজ্ঞতা ছিল। কারণ তাকে আনন্দ কুমার হিসেবে নিজের ঘরানার বাইরে অভিনয় করতে হয়েছিল। সুপার থার্টি মুক্তির কয়েক মাস পর ওয়ারে আবার তাকে সম্পূর্ণ বিপরীত চরিত্রে দেখা যায়।
অগ্নিপথ
করণ মালহোত্রা পরিচালিত অগ্নিপথ সেই সময়ের হৃতিক রোশনের অন্যান্য সিনেমার মতোই মুক্তির সময় ব্যাপক প্রচার পেয়েছিল। শুরুতে সিনেমাটি রেকর্ড ব্রেকিং প্রতিক্রিয়া দেখায় এবং বিশ্বব্যাপী ২০০ কোটি রুপি আয় করে সুপারহিট হয়ে ওঠে। অগ্নিপথ ছিল অমিতাভ বচ্চনের একই নামের সিনেমার ছবির রিবুট। অগ্নিপথও তখন হৃতিকের সবচেয়ে বেশি আয় করা সিনেমা হিসেবে আবির্ভূত হয়। এরপর তা ছাড়িয়ে যায় কৃষ থ্রিকে।
জিন্দেগি না মিলেগি দোবারা
জোয়া আখতার পরিচালিত জিন্দেগি না মিলেগি দোবারা হৃতিক রোশনের অন্যতম স্মরণীয় ছবি। তিন বন্ধুর স্পেন ভ্রমণ দর্শকদের মনে এতটাই অনুরণিত হয়েছিল যে, এটি হৃতিকের সর্বোচ্চ উপার্জনকারী চলচ্চিত্র হয়ে ওঠে। এটি ১৫০ কোটি রুপির বেশি আয় করেছে এবং ধুম ২ এর সংগ্রহকে পেছনে ফেলেছে। জিন্দেগি না মিলেগি দোবারা বক্স অফিসে হিট ঘোষণা করা হয়।
Comments