রাঢ়াঙ নাটকের ২০০তম শো আজ

ছবি: সংগৃহীত

নাট্যজন মামুনুর রশীদ আরণ্যক নাট্যদলের জন্য অনেক নাটক লিখেছেন। অনেক নাটক মঞ্চের জন্য পরিচালনাও করেছেন। দেশ-বিদেশে সেসব নাটক প্রশংসিত হয়েছে।

তার লেখা অন্যতম সফল একটি নাটক রাঢ়াঙ। আজ শুক্রবার শিল্পকলা একাডেমির এক্সপেরিমেন্টাল হলে সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাঢ়াঙ নাটকের ২০০তম শো মঞ্চায়ন হচ্ছে।

রাঢ়াঙ নাটকের প্রথম শো হয়েছিল ২০০৪ সালে। প্রথম শোতে অভিনয় করেছিলেন সময়ের জনপ্রিয় অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। ২০০তম শোতেও অভিনয় করছেন এই অভিনেতা।

রাঢ়াঙ নাটকটি রচনা, পরিচালনা ছাড়াও একটি বিশেষ চরিত্রে অভিনয়ও করেছেন মামুনুর রশীদ।

রাজধানী শহর ছাড়াও বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় রাঢ়াঙ নাটকের প্রদর্শনী হয়েছে। এছাড়া বেশ কয়েকটি দেশেও রাঢ়াঙ মঞ্চস্থ হয়েছে।

দেশে যেমন প্রশংসিত হয়েছে, বিদেশেও প্রশংসিত হয়েছে নাটকটি। ৬টি ইন্টারন্যাশনাল ফেস্টিভ্যালে রাঢ়াঙ মঞ্চস্থ হয়েছে।

মামুনুর রশীদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'রাঢ়াঙ নাটকের ২০০তম শো করছি, এটি বাংলাদেশের মঞ্চ নাটকের জন্য আনন্দের, তেমনি দল হিসেবে আরণ্যক নাট্যদলের জন্যও আনন্দের, আমার জন্য তো বটেই।'

'একটি জীবন কাটিয়ে দিলাম থিয়েটার করে। জীবনের এই বেলায় এসে এখনো মঞ্চে কাজ করতে পারছি এ তো পরম পাওয়া,' বলেন তিনি।

তিনি জানান, দক্ষিণ কোরিয়ায় রাঢ়াঙ মঞ্চস্থ হওয়ার পর ব্যাপক প্রশংসা পেয়েছিল। ভারতের কেরালা, কলকাতা, বহরমপুরেও নাটকটি মঞ্চায়নের পর প্রশংসা কুড়িয়েছে।

মামুনুর রশীদ বলেন, 'বাংলাদেশের মঞ্চ নাটক অনেকদূর এগিয়েছে। এটা মঞ্চ নাটকের সামগ্রিক প্রাপ্তি।'

রাঢ়াঙ নাটকটি এ দেশের আদিবাসীদের নিয়ে প্রথম লেখা নাটক। ২০০১ সালে নওগাঁয় আলফ্রেড সরেনকে হত্যা করা হয়। দেশজুড়ে তখন প্রতিবাদ হয়েছিল। নওগাঁয় বড় একটি প্রতিবাদ হয়েছিল। মামুনুর রশীদ সেখানে আমন্ত্রিত হয়ে গিয়েছিলেন এবং প্রতিবাদে অংশ নিয়েছিলেন।

সেই সময় সাঁওতালরা তীর-ধনুক উপহার দিয়েছিলেন মামুনুর রশীদকে। তারপর টানা কয়েকবছর  এটা নিয়ে গবেষণা করে রাঢ়াঙ নাটকটি লেখেন গুণী নাট্যকার, পরিচালক মামুনুর রশীদ। 

তিনি বলেন, '৪ বছর গবেষণা করেছি। অনেকবার সাঁওতাল পল্লীতে গিয়েছি। অনেক কিছু জেনেছি। এভাবেই লিখেছি নাটকটি। মানুষের কাছ থেকে অভাবনীয় সাড়া ও ভালোবাসা পেয়েছি এই নাটকের জন্য।'

মামুনুর রশীদ বলেন, 'তীর-ধনুক উপহার পেয়ে সেখানেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম ঘটনাটি নিয়ে একটি নাটক লিখব। যার ফলে কাজটি করতে পেরেছি। মানুষ জানতে পারছে আলফ্রেড সরেনকে।'

নাটকটির প্রথম শো হয়েছিল এক্সপেরিমেন্টাল হলে। সেই স্মৃতি মনে করে মামুনুর রশীদ বলেন, 'রাঢ়াঙ নাটকের প্রথম শোতে অসম্ভব সাড়া পেয়েছিলাম। দর্শকদের ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছিলাম।'

আফসোস করে মামুনুর রশীদ বলেন, '১৮ বছর লেগে গেল ২০০তম শো করতে। আরও আগেই করতে পারতাম। পর্যাপ্ত হল নেই আমাদের। এছাড়া কোভিড এসে অনেক ক্ষতি করেছে। তারপরও ২০০তম শো করতে পেরে আনন্দ পাচ্ছি।'

তিনি আরও বলেন, 'রাঢ়াঙ নাটকের মাধ্যমে মানুষ সাঁওতালদের কথা জানতে পারছে। সাঁওতালরা কিভাবে বঞ্চিত হয়েছে তাও জানতে পারছে। তাদের লড়াই করার ইতিহাস জানতে পারছে। এটাই পরম প্রাপ্তি লেখক হিসেবে।'

প্রথম শো থেকে ২০০তম শোতে অভিনয় করছেন চঞ্চল চৌধুরী। তিনি এই নাটকে দারোগার চরিত্রে অভিনয় করেছেন। ২ বছর বিরতির পর রাঢ়াঙ দিয়ে মঞ্চে ফিরছেন তিনি। 

তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'রাঢ়াঙ একটি আলোচিত ও সাড়া জাগানো নাটক। এই নাটকে অভিনয় করে অসম্ভব ভালোবাসা পেয়েছি। এটি ভীষণ প্রিয় নাটক। ২০০তম শোতে অভিনয় করতে পারাটাও বড় ব্যাপার।'

Comments

The Daily Star  | English

University student unions: Student bodies split over polls timing

With DU and JU gearing up for student union elections, the student bodies are now sharply divided over when the polls should be held.

11h ago