ওদের দেখে বারবার আমার নাতি-নাতনীর কথা মনে পড়েছে: ডলি জহুর

ডলি জহুর। ছবি: স্টার

'ওদের দেখে বারবার আমার নাতি-নাতনীর কথা মনে পড়েছে। এই জায়গায় তারাও তো থাকতে পারতো। নিজেকে বড্ড অসহায় লেগেছে।'

মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত ও আহত শিশুদের কথা বলতে গিয়ে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্ত অভিনেত্রী ডলি জহুর আরও বলেন, 'উত্তরায় আমার বাসার পাশেই মাইলস্টোনের শাখা আছে। দীর্ঘদিন ধরে সাতসকালে এই স্কুলের বাচ্চাদের দেখে আমি অভ্যস্ত। প্রতিদিন ভোরে এই বাচ্চাদের দেখা যেন সুন্দর কিছু। আমার বাসার পেছনেও ক্যাম্পাস ছিল। সেটি সরিয়ে নিয়েছে।'

'এখনো আমার বাসার কাছে একটি ক্যাম্পাস আছে। তাছাড়া, ছোট ছোট বাচ্চাদের যে ক্যাম্পাসটি আগে এখানে ছিল, সেটি একটু দূরে সরিয়ে নিয়েছে। যেখানে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।'

মঙ্গলবার রাতে দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে আলাপকালে ডলি জহুর বলেন, 'খবরটি শুনে দম বন্ধ হয়ে আসছিল। সারাদিন কিছু খেতে পারিনি। বুকে ব্যথা অনুভব করি। নিঃশ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছিল। অনেক রাত পর্যন্ত ঘুমাতেও পারিনি। বারবার বাচ্চাদের কথা মনে পড়েছে।'

তিনি বলেন, 'মনে হচ্ছিল, চিৎকার করে কাঁদতে পারলে মনে হয় ভালো লাগতো। বাচ্চাগুলোর কথা, তাদের মা-বাবার কথা ভেবে এলোমেলো হয়ে গিয়েছিলাম।'

'সন্তানের লাশ দেখার মতো শক্তি কোনো মায়ের নেই। অথচ, এই মায়েদের অবস্থাটা একবার ভাবেন। কত যন্ত্রণার! সন্তান পড়ে গেলে মা-বাবা সহ্য করতে পারে না। আর এই মা-বাবার চোখের সামনে পুড়ে যাওয়া সন্তান—এই দৃশ্য কী তাদের পক্ষে দেখা সম্ভব? আমিও একজন মা। এটা যে কত ভয়াবহ কষ্টের, কেউ বলে প্রকাশ করতে পারবে না,' বলেন ডলি জহুর।

তার ছেলের বউয়ের বড় বোনের মেয়ে মাইলস্টোনে পড়ে। জলি জহুর জানান, দুর্ঘটনার ঘণ্টাখানেক আগে শরীর খারাপ লগায় বাচ্চাটি বাসায় চলে যায়।

তিনি আরও বলেন, 'আমার বান্ধবীর নাতনীও ওখানে পড়ে। সেদিন সেও একটু আগে বাসায় চলে যায়। এসব যখন ভাবি, তখন মনে হয় আল্লাহ নিজ হাতে ওদের রক্ষা করেছেন।'

'স্বাভাবিক হতে পারছি না। বাচ্চাগুলোর কথাই শুধু ভাবছি। ওদের মুখ কল্পনা করছি। অবুঝ-নিষ্পাপ শিশুগুলো…কীভাবে একটি ঘটনায় হারিয়ে গেল। যারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে, তারা দ্রুত সুস্থ হোক। সবসময় দোয়া করছি,' যোগ করেন ডলি জহুর।

Comments

The Daily Star  | English

Consensus reached on election commission formation: Ali Riaz

"This was an extremely fruitful discussion and a historic moment"

58m ago