হত্যাচেষ্টা, চুরি, মারপিট, মামলা বিষয়ে যা বললেন নায়িকা ববি

ইয়ামিন হক ববি। ছবি: শেখ মেহেদী মোর্শেদ/স্টার

অভিনয়ের পাশাপাশি রেস্তোরাঁর ব্যবসা শুরু করেছিলেন চিত্রনায়িকা ইয়ামিন হক ববি। রাজধানীর গুলশানে 'ববস্টার ডাইনিং' নামে রেস্তোরাঁ খুলে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছে এই নায়িকাকে।

রেস্তোরাঁর ব্যবসা নিয়ে সম্প্রতি ববির বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা, চুরি, মারপিট ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগে গুলশান থানায় তাকে আসামি করে মামলা হয়েছে। এসব বিষয়ে দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে বিস্তারিত কথা বলেছেন ববি।

দ্য ডেইলি স্টার: আপনার বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা, চুরি, মারপিট ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ উঠেছে। বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত জানতে চাই।

ইয়ামিন হক ববি: এগুলো সবই ফেক। আমি একজন আর্টিস্ট। আমার ইমেজ ক্ষুণ্ণ করার উদ্দেশ্যে এসব করা হচ্ছে। যারা এগুলো করছে, ভেবেছে আমি আর্টিস্ট ইমেজ হারানোর ভয়ে চুপ থাকব। কিন্তু না, অন্যায়কে প্রশ্রয় দিতে নেই। এক দশকের ফিল্ম ক্যারিয়ারে আমার বিরুদ্ধে আজ পর্যন্ত কেউ কোনো নেতিবাচক অভিযোগ আনতে পারেনি। এখন আমার বিরুদ্ধে অভিযোগে যা বলা হচ্ছে, সেগুলো সিনেমার গল্পে হয়ে থাকে। আমি এসবে চুপ না থেকে আইনিভাবে ফেস করছি। আমার নামে মিথ্যা মামলা হওয়ায় আসল সত্যিটা, আমার সঙ্গে যা যা হয়েছে সেগুলো উল্লেখ করে মামলাও করেছি।

ছবি: সংগৃহীত

ডেইলি স্টার: এসব কারণে আপনি কতটা ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছেন বলে মনে হচ্ছে?

ববি: এই বিষয়টি মিটমাট করার জন্য আমি আড়াই থেকে তিনমাস চেষ্টা করেছি। কিন্তু কোনো সুরাহা করতে পারিনি। পরবর্তীতে রেস্তোরাঁয় অ্যাটাক হওয়ার পর মুখ খোলা ছাড়া কোনো উপায় দেখলাম না। এসব ঘটনায় মানসিক ও আর্থিকভাবে চরম ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছি। আমার অলমোস্ট ৭৫ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। সেই সঙ্গে মামলাও হয়েছে। আমার ব্যবসায়িক পার্টনার মির্জা বাশার ও আমাকে আসামি করে রেস্তোরাঁ ভবনের এজিএম সাকিব মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন।

ছবি: সংগৃহীত

ডেইলি স্টার: রেস্তোরাঁ, মামলা বিষয়ে যদি আরও বিস্তারিত বলতেন?

ববি: গত এপ্রিল থেকে রেস্তোরাঁর ভাড়া প্রতি মাসে আড়াই লাখ ও বিদ্যুৎ বিলসহ অন্যান্য খরচ পরিশোধ করা হচ্ছে। ভবনের মালিক আমাদের নামে ভাড়া জমা নিয়ে রসিদও দেন। ট্রেড লাইসেন্স করার জন্য আমরা ভবনের মালিক শাহিনা ইয়াসমিন ও তার সন্তান জাওয়াদ আল মামুনকে চুক্তিপত্র, ফায়ার সেফটি ও বাণিজ্যিক অনুমতির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেওয়ার অনুরোধ করি। যখন ট্রেড লাইসেন্স করতে এসব কাগজপত্র চেয়েছেন, তখন থেকে হঠাৎ করেই পূর্বের রেস্তোরাঁ মালিক আমান, ভবন মালিক শাহিনা ইয়াসমিন, তার ছেলে জাওয়াদ, ভবনের দায়িত্বে থাকা জয়, সাকিবসহ অন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা আমাদের হয়রানি শুরু করেন।

ছবি: স্টার

শাহিনা ও জাওয়াদের নির্দেশে ভবনের দায়িত্বে থাকা কর্মচারী জয়, সাকিব, হারুন ও তাদের সহযোগীরা বারবার আমার রেস্তোরাঁর বিদ্যুতের লাইন বন্ধ করে দিয়ে আমাকে হয়রানি শুরু করেন। এর মধ্যে ওয়ান গ্রুপ থেকে বারবার সন্ত্রাসী ও লাঠিয়াল বাহিনী নিয়ে রেস্তোরাঁয় এসে ভয়ভীতি দেখাতে থাকে। গুলশানের মতো জায়গায় এমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করছে দেখে আমি ভীত হয়ে যাই এবং এরা আসলে কাদের লোক, তা জানার চেষ্টা করি। তখনই আমরা প্রথম জানতে পারি, শাহিনা ইয়াসমিন এক প্রভাবশালীর স্ত্রী এবং এই ভবনের মালিক তিনিই।

ডেইলি স্টার: আর কী কী জানতে পারলেন এই ভবন সম্পর্কে?

ববি: এমন পরিস্থিতিতে বিপদের আশঙ্কা দেখে ট্রেড লাইসেন্সের বিষয়ে করণীয় কী, সে পরামর্শ করতে আমরা সিটি করপোরেশনে যাই এবং জানতে পারি, ওই বিল্ডিংয়ের কোনোরকম বাণিজ্যিক কার্যক্রমের অনুমতি নেই। এই ঘটনার পর আমরা বুঝতে পারি আমান, শাহিনা ও জাওয়াদ মিলে আমাদের সঙ্গে এক ভয়াবহ প্রতারণা করেছেন। আমার পার্টনারকে ও ম্যানেজারকে নিয়মিত থ্রেড দিয়ে যাচ্ছে। শাহীনা ইয়াসমিন আমাকে আশ্বাস দিয়ে বিনিয়োগ করিয়েছেন। এখন তিনি বলছেন যারা এসব করেছেন তিনি তাদের চেনেন না।

ছবি: সংগৃহীত

ডেইলি স্টার: এখন আপনি কী আশা করছেন?

ববি: আমি বিশ্বাস করি, আসল সত্যিটা শিগগির বেরিয়ে আসবে। সবার পরিস্থিতি সবসময় অনুকূলে থাকে না। আমি কখনো এসব মামলায় জড়িয়ে কাউকে মিথ্যে কিছুতে ফাঁসিয়ে ভাইরাল হওয়ার মনোভাবে পোষণ করিনি। আজ পর্যন্ত যতটুকু লাইমলাইটে এসেছি, আমার কাজ দিয়ে। আমার বিশ্বাস, এখন পর্যন্ত আমার সঙ্গে যা হয়েছে পুরোটাই অন্যায়।

Comments

The Daily Star  | English

Enforced disappearances: Eight secret detention centres discovered

The commission raised concerns about "attempts to destroy evidence" linked to these secret cells

6h ago