‘শুটিং সেটে রুমী থাকা মানেই ছিল সবাইকে হাসি-খুশি রাখা’
টেলিভিশন নাটকের জনপ্রিয় অভিনেতা অলিউল হক রুমী মারা গেছেন। 'কোন কাননের ফুল' ধারাবাহিক দিয়ে অভিনয় শুরু করেছিলেন রুমী, সবশেষ অভিনয় করেছেন 'বকুলপুর' ধারাবাহিকে।
কয়েকমাস আগে ক্যানসারে আক্রান্ত হন তিনি। আজ চলে গেলেন না ফেরার দেশে।
রুমীকে নিয়ে কথা বলেছেন তার সহশিল্পীরা।
ফজলুর রহমান বাবু
গতকালও তাকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলাম। একটিবারও মনে হয়নি এত তাড়াতাড়ি চলে যাবে। আমাদের মিডিয়ায় তার মতো সরল, সহজ, সৎ ও মিশুক শিল্পী কম দেখেছি।
শুটিং সেটে রুমী থাকা মানেই ছিল সবাইকে হাসি-খুশি রাখা। বড় মনের ও উদার মনের মানুষ না হলে এভাবে সবার সঙ্গে মেশা সম্ভব না। তাকে খুব কাছ থেকে দেখেছি। একই বাসায় অনেক বছর ছিলাম আমরা। একই পরিবার মনে করতাম।
রুমীর বড় মেয়ে আমার বড় মেয়ের বয়সী। রুমীর ছোট ছেলেও আমার ছোট মেয়ের বয়সী। বেশ কয়েকবছর একই ভবনে থেকে ঘনিষ্ঠতা আরও বেড়েছিল। আমাকে বড় ভাইয়ের মতো সম্মান করত। আমিও ছোট ভাইয়ের মতো ভালোবাসতাম। নিঃসন্দেহে একজন ভালো মানুষকে হারালাম।
চঞ্চল চৌধুরী
রুমী ভাই আমার ভালোবাসার মানুষ। আজ থেকে তিনি চিরদিনের জন্য বিদায় নিলেন। বড্ড তাড়াতাড়ি বিদায় নিলেন তিনি।
কত আড্ডার স্মৃতি চোখে ভাসছে। তার মতো মনখোলা মানুষ আর কি পাব? খুব করে চাইতাম সুস্থ হয়ে কাজে ফিরবেন। আবারও আমরা আড্ডা দেবো। কিন্তু সবকিছু শেষ হয়ে গেল।
ভাবতেই কষ্ট হচ্ছে রুমী ভাই নেই। এত কী তাড়া ছিল রুমী ভাই? আপনার জন্য মনভরে প্রার্থনা। শান্তিতে থাকুন। আপনার আত্মার শান্তি কামনা করছি।
শাহনাজ খুশী
সকালে খবরটি শোনার পর থেকেই মন ভালো নেই। কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না। তার স্ত্রী-সন্তানদের জন্য মায়া লাগে। এই মানুষটি ছিলেন উদার মনের। তার মধ্যে কোনো রকম অহংকার দেখিনি। কখনো রাগ করতে দেখিনি।
রুমী ভাই আমাকে বন্ধু বলে ডাকতেন। আজ থেকে তার মুখ থেকে বন্ধু ডাকটি শুনব না। সৃষ্টিকর্তার কাছে একটাই চাওয়া—সবার প্রিয় রুমী ভাইয়ের আত্মার শান্তি হোক।
সাজু খাদেম
রুমী ভাইয়ের হঠাৎ চলে যাওয়াটা দুঃখজনক। আমরা সবাই একদিন চলে যাব, কিন্তু তার এই চলে যাওয়াটা মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে। কিছুদিন আগেও তিনি সুস্থ ছিলেন। সম্ভবত দুমাস আগে আশুলিয়ায় একসঙ্গে শুটিংও করেছিলাম আমরা। ওখানে মমতাপল্লীতে টিন ওয়েস্ট ইন্ডিজ নাটকে সবশেষ দুজনে শুটিং করি। তখনই মন খারাপ দেখি। প্রশ্ন করি—কী হয়েছে রুমী ভাই? তিনি বলেন, শরীরটা ভালো লাগছে না। তারপর বলি, ভালো ডাক্তার দেখান।
শুটিং শেষ করে রুমী ভাই ডাক্তার দেখানোর পর জানতে পারেন, ক্যানসার দানা বেঁধেছে শরীরে। খবরটি শোনার পর খুব কষ্ট পেয়েছিলাম। আজ তার চলে যাওয়ার খবরে আরও বেশি কষ্ট পাচ্ছি।
নাদিয়া আহমেদ
রুমী ভাইয়ের মতো আপন মানুষ আর কোথায় পাব? সত্যিই একজন বড় ভাই ছিলেন তিনি। শুটিং সেটে তিনি থাকা মানেই সব টেনশন মুক্ত।
নাটকের শুটিং করতে গিয়ে কত শত স্মৃতি আমাদের। এভাবেই একসময় তিনি হয়ে গিয়েছিলেন আমার ভাই। তিনি শুটিংয়ে থাকলে সবার মধ্যেই বিরাট শক্তি কাজ করত।
খুব কষ্ট হচ্ছে। খুব করে চেয়েছিলাম তিনি সুস্থ হয়ে ফিরবেন। আগের মতোই হবে সব। কিন্তু কী থেকে কী হয়ে গেল! পরপারে শান্তিতে থাকুন রুমী ভাই।
Comments