আমি মনে করি শাবানা নিজেই একটা ইন্ডাস্ট্রি: চিত্রনায়ক উজ্জ্বল

শাবানা ও উজ্জ্বল। ছবি: সংগৃহীত

'যদি সুন্দর একটা মুখ পাইতাম, সদরঘাটের পানের খিলি তারে বানাই খাওয়াতাম'— শাবানা ও উজ্জ্বল অভিনীত 'অনুভব' সিনেমার এই গান এই প্রজন্মের কাছে এখনো জনপ্রিয়।

শাবানা-উজ্জ্বল জুটি হয়ে অনেকগুলো ব্যবসাসফল সিনেমা উপহার দিয়েছেন।

আজ বৃহস্পতিবার নায়িকা শাবানার জন্মদিনে উজ্জ্বল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির সবচেয়ে অতিথিপরায়ন অভিনেত্রী শাবানা। তিনি যে অবস্থানে ছিলেন, সেখানে থেকে এতটা বড় হৃদয়ের মানুষ হয়ে থাকা কম মানুষের পক্ষেই সম্ভব। তারপরও তিনি বড় মানুষ পরিচয় থেকে বিচ্যুত হননি।'

'একেবারে নিচু থেকে শুরু করে টপ লেবেল পর্যন্ত ফিল্মের সবাই তার সঙ্গে কথা বলতে পারতেন, মিশতে পারতেন। ফিল্মের মানুষদের তিনি এতটাই সুন্দর চোখে দেখতেন এবং আপন ভাবতেন। এখানেই শাবানার কৃতিত্ব। এখানেই সত্যিকারের বড় মাপের মানুষ শাবানা। তার বাড়িতে  ফিল্মের সবাই যেতে পারতেন। মনটা বড় ছিল বলেই তা সম্ভব। অন্যদের চেয়ে তার বড় বৈশিষ্ট্য এখানেই। ফিল্মের সবার সঙ্গে তিনি আন্তরিক ছিলেন। এটা বিরল ঘটনা বলে আমি মনে করি,' বলেন তিনি।

শাবানার ব্যাপারে তিনি আরও বলেন, 'এদেশের সিনেমায় তার মতো সাকসেফুল অভিনেত্রী খুব কম এসেছেন। শাবানার সিনেমা মানেই হিট। যেখানে শাবানা সেখানেই সাফল্য। ২০ বছরেরও বেশি সময় তিনি অভিনয়ে নেই, তারপরও সবার হৃদয়ে আছেন। কীভাবে তা সম্ভব? একজন ভালো মানুষ এবং অতি মাত্রায় বড় মনের মানুষ হলেই তা সম্ভব। এটাই তার প্রাপ্তি।'

'আমার ক্যারিয়ারের প্রথম সিনেমার নায়িকা ছিলেন কবরী। আর আমার ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সিনেমার নায়িকা ছিলেন শাবানা। দ্বিতীয়  সিনেমা সমাধান এ জুটি হই শাবানা ও আমি। তারপর সমাধান হিট হলো। এরপর জুটি হিসেবে অনুভব  সিনেমা করলাম।  তারপর  স্বীকৃতি করলাম দুজনে। সবগুলো সাকসেসফুল হলো,' বলেন তিনি।

স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, 'আমি সিনেমায় আসার আগেই তিনি  স্টার। তার চকোরী সিনেমা বহুবার দেখেছি। আমি নিজেই শাবানার দর্শক ছিলাম। সেটা চকোরী সিনেমা দেখে। এখনো ওটা পছন্দের  সিনেমা। সমাধান সিনেমার শুটিং করেছিলাম সাভারে। গড়াই নামে একটি জায়গায়। নৌকা চালানোর দৃশ্য ছিল, গানটা  হচ্ছে প্রেম যেন এক গোধূলী বেলার। এই গানটি আজও জনপ্রিয়। অনুভব সিনেমার একটি গান ব্যাপক জনপ্রিয় হয়েছিল । গানটি হচ্ছে-যদি সুন্দর একখান মুখ পাইতাম-সদরঘাটের পানি খিলি তারে বানাই খাওয়াইতাম।'

গুণী এই অভিনেত্রীর সম্পর্কে তিনি বলেন, 'শাবানা একদিনে হয়নি। অনেক সাধনা ও পরিশ্রম করে হয়েছেন। অনেক সাধনা করে তার মতো শিল্পীর জন্ম হয়েছে। তিনি এই উপমহাদেশের বড় অভিনেত্রী। এই উপমহাদেশের জনপ্রিয় চলচ্চিত্র নায়িকা। তার খ্যাতি ছড়িয়ে আছে উপমহাদেশজুড়ে।

'শাবানার সঙ্গে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সিনেমা 'সমাধান' মুক্তি পাবার কথা ছিল ১৯৭১ সালের ২ মার্চ। ৭ মার্চের জন্য তখন মুক্তি পায়নি। দেশ স্বাধীনের পর মুক্তি পায় এবং এদেশের দর্শকরা তা  লুফে নেয়। এটি আমার অভিনয় জীবনে স্মরণীয় হয়ে আছে।

আমার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থেকেও শাবানাকে নিয়ে সিনেমা বানিয়েছি। তার মধ্যে একটি সেরা সিনেমা হচ্ছে নসিব। এদেশের অন্যতম সুপারহিট সিনেমা হচ্ছে নসিব। এটার কথা কোনোদিনও ভুলব না। যেখানে শাবানাসহ অনেকেই ছিলেন। আজও সেইসব দৃশ্য চোখে ভাসে।'

'শাবানা যখন প্রতিষ্ঠিত নায়িকা আমি তখন নতুন নায়ক সিনেমায়, তারপরও তাকে অহংকার করতে দেখিনি। ওই সময়ে তার সঙ্গে শুটিং করতে  পারাটাই ছিল বড় বিষয়। যদিও তখন আমি টেলিভিশনে নায়ক, কিন্তু সিনেমায় নতুন। শাবানার মধ্যে  ডেডিকেশন ছিল। শাবানা মানেই সাকসেস। আমি মনে করি, শাবানা  নিজেই একটা ইন্ডাস্ট্রি ,' বলেন তিনি।

 

 

Comments

The Daily Star  | English

Remittances grow 3% in January

Migrants sent home $2.18 billion in the first month of 2025

2h ago