চ্যালেঞ্জার নেই ১২ বছর
হুমায়ূন আহমেদের 'হাবলংগের বাজারে' নাটক দিয়ে অভিনয়ে নাম লিখিয়েছিলেন গুণী অভিনয়শিল্পী চ্যালেঞ্জার। একই পরিচালকের 'দুই দুয়ারী' সিনেমার মধ্যে দিয়ে চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেন তিনি। অল্প কয়েক বছরের ক্যারিয়ারে অর্জন করেন তুমুল জনপ্রিয়তা।
'উড়ে যায় বকপক্ষী' ধারাবাহিক নাটকে দোতারা চাচা চরিত্রে অভিনয় করে আজও মানুষের মনে গেঁথে আছেন তিনি। অনেকে তাকে দোতারা চাচা নামে ডাকেন এখনও।
সবার প্রিয় চ্যালেঞ্জার চলে যাওয়ার ১২ বছর আজ, দীর্ঘ এক যুগ ধরে নেই তিনি। তবে তার অভিনীত নাটক-চলচ্চিত্র রয়ে গেছে। এখনও বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে প্রচারিত হয় নাটকগুলো। তার অসংখ্য নাটক ইউটিউবের কল্যাণে দর্শকরা দেখতে পান। না থেকেও তাই নতুন প্রজন্মের কাছে তিনি পরিচিত মুখ, বিপুল জনপ্রিয়।
চ্যালেঞ্জার সবচেয়ে বেশি অভিনয় করেছেন নন্দিত নাট্যকার-চলচ্চিত্রকার-পরিচালক হুমায়ূন আহমেদের পরিচালনায়। 'মন্ত্রী মহোদয়ের আগমন' নাটকে মন্ত্রীর চরিত্রে অভিনয় করে সাড়া ফেলেছিলেন খুব। 'ভবের হাট' ধারাবাহিকে ২ খ্যাতিমান অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদি এবং এটিএম শামসুজ্জামানের সঙ্গে দুর্দান্ত অভিনয় করে দর্শকদের ভালোবাসা পেয়েছিলেন।
অভিনয় ক্যারিয়ারে তিনি ২ শতাধিক টিভি নাটকে অভিনয় করে দর্শকদের মনে জায়গা করে নিয়েছিলেন। তার অভিনীত কয়েকটি উল্লেখযোগ্য নাটক হচ্ছে খোয়াননগর, বৃক্ষমানব, ওয়ারেন্ট, জুতাবাবা, সালেক দফাদার, শওকত সাহেবের গাড়ি কেনা।
'দুই দুয়ারী' ছাড়াও হুমায়ূন আহমেদের 'শ্যামল ছায়া', '৯ নম্বর বিপদ সংকেত', 'দারুচিনি দ্বীপ' সিনেমায় অভিনয় করেছেন। আমজাদ হোসেন পরিচালিত 'কাল সকালে' এবং শহীদুল ইসলাম খোকন পরিচালিত 'লাল সবুজ' সিনেমায় অভিনয় করে প্রশংসা কুড়িয়েছেন চ্যালেঞ্জার।
চ্যালেঞ্জারের ছোট বোন জনপ্রিয় অভিনেত্রী মনিরা মিঠু বলেন, 'বড় ভাই নেই ভাবতেই কেমন লাগে! এই শূন্যতা কখনোই পূরণ হবে না। আমি কী হারিয়েছি তা আমিই জানি। সবসময় বড় ভাইকে মনে পড়ে। তিনি যেখানে আছেন ভালো থাকবেন, এটুকুই চাওয়া।'
অভিনেত্রী শাহনাজ খুশি বলেন, 'চ্যালেঞ্জার ভাইয়ের সঙ্গে অভিনয় করার সুযোগ হয়েছে। অভিনয়শিল্পী হিসেবে অনেক উঁচু মাপের ছিলেন এবং মানুষ হিসেবেও ছিলেন অসাধারণ। দেখতে দেখতে এক যুগ হয়ে গেল তিনি নেই। তাকে মনে পড়ে খুব। মিস করি তাকে।'
নাট্যকার বৃন্দাবন দাশ বলেন, 'চ্যালেঞ্জার ভাইয়ের সঙ্গে সম্পর্কটা ছিল পারিবারিক। খুব করে লক্ষ্য করতাম, অভিনয় করার অসম্ভব গুণ নিয়ে তিনি জন্মেছিলেন। খুব দ্রুত চলে গেলেন। এখনও তার নাটক সমান জনপ্রিয়। মানুষ তাকে অনেক বেশি ভালোবাসে।'
সালাউদ্দিন লাভলু বলেন, 'দেশের অনেক বড় বড় শিল্পীর সঙ্গে কাজ করার সুযোগ আমার হয়েছে। চ্যালেঞ্জার ভাই ছিলেন খুব বড় মাপের একজন অভিনেতা। সাবলীল অভিনয় করতেন। যে কেনো চরিত্রে মিশে যাওয়ার দুর্দান্ত শক্তি তার ছিল।'
অভিনেতা ফারুক আহমেদ বলেন, 'সহশিল্পী হিসেবে চ্যালেঞ্জার ভাই ছিলেন অসাধারণ। তার মধ্যে অভিনয়ের গুণ ছিল শতভাগ। তিনি যতটুকু দিয়ে গেছেন, মানুষ আজও মনে রেখেছে।
২০১০ সালের ১২ অক্টোবর ক্যান্সারে মারা যান অভিনয়শিল্পী চ্যালেঞ্জার।
Comments