জন্মদিনে আইয়ুব বাচ্চুর ময়না অ্যালবামের কথা

আইয়ুব বাচ্চু। স্টার ফাইল ফটো

আইয়ুব বাচ্চু ছিলেন ৬ তারের জাদুকর। পাশাপাশি স্বনামধন্য গায়ক, গীতিকার ও সুরকার। আজ এই কিংবদন্তীর জন্মদিন। বেঁচে থাকলে আজ ৬১ বছরে পা রাখতেন এই রক লিজেন্ড।

জন্মদিনে আইয়ুব বাচ্চুর গাওয়া একক 'ময়না' আ্যালবামের শ্রোতাপ্রিয় 'ময়না' গানের গীতিকবি মিলন খান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমার লেখা ময়না গানটি ১৯৮৮ সালে প্রকাশিত হয়। গানটি সেই সময়ে দারুণ শ্রোতাপ্রিয় হয়। তখন আমি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। গান লেখার জন্য উন্মাদ এক তরুণ প্রাণ। বাচ্চু ভাইকে তখন চিনতাম সোলসের গিটার বাদক হিসেবে। শুনতাম তিনি স্টেজে মাঝে মাঝে ইংলিশ গান করেন। সেই সময়ের সোলসের গায়ক তপন চৌধুরীকে সাহস করে একদিন কিছু গান দিয়েছিলাম। তিনি গানগুলো আইয়ুব বাচ্চু ভাইকে সুর করতে দিয়েছিলেন।'

মিলন খান। ছবি: সংগৃহীত

তিনি আরও বলেন, 'গান দেওয়ার ৫ ছয় মাস পর আমার গ্রামের বড় ভাই মহসিন খানের কাছে জানলাম, ময়না গানটি  প্রকাশিত হয়েছে। গানটি শ্রোতারা পছন্দ করেছে। বাচ্চু ভাই স্টেজে নিয়মিত গাচ্ছেন গানটি। তার সঙ্গে আমার প্রথম দেখা হয়েছিল সারগামে। হাত মিলিয়ে বুকে টেনে নিয়েছিলেন। কতোটা উচ্ছ্বাস ভালোলাগা, উন্মাদনা ঠিক বোঝাতে পারব না।' 'ময়না' গানের নামেই অ্যালবামের নাম রেখেছিলেন তিনি। পরে বাচ্চু ভাইয়ের সুরে ১৯৮৮ সালে তপন চৌধুরীর কণ্ঠে 'ডাইরির পাতা', 'পাথর কালো রাত' গানের মতো শ্রোতাপ্রিয় গানগুলো লিখেছিলাম। জন্মদিনে খুব মনে পড়ছে সেইকথাগুলো,' বলেন তিনি।

১৯৬২ সালের ১৬ আগস্ট চট্টগ্রাম শহরের এনায়েত বাজারে জন্মগ্রহণ করেন আইয়ুব বাচ্চু। বাংলাদেশের ব্যান্ডসংগীতের এই শিরোমণি তার প্রথম গান প্রকাশ করেন 'হারানো বিকেলের গল্প' শিরোনামে। গানটির কথা লিখেছিলেন শহীদ মাহমুদ জঙ্গী। তার প্রথম একক অ্যালবাম 'রক্তগোলাপ' প্রকাশিত হয় ১৯৮৬ সালে।

১৯৭৮ সালে আইয়ুব বাচ্চু যোগ দেন 'ফিলিংস' ব্যান্ডে। এরপর ১৯৮০ সালে 'সোলস'র সঙ্গে শুরু হয় তার পথচলা। প্রায় এক দশক এই ব্যান্ডের সঙ্গেই ছিলেন তিনি। 'সোলস' ছাড়ার পর ১৯৯১ সালে গঠন করেন 'এলআরবি'। এলআরবির প্রথম অ্যালবাম প্রকাশিত হয় ১৯৯২ সালে।

আইয়ুব বাচ্চুর একক অ্যালবাম- 'ময়না' (১৯৮৮), 'কষ্ট' (১৯৯৫), 'সময়' (১৯৯৮), 'একা' (১৯৯৯), 'প্রেম তুমি কি' (২০০২), 'দুটি মন' (২০০২), 'কাফেলা' (২০০২), 'প্রেম প্রেমের মতো' (২০০৩), 'পথের গান' (২০০৪), 'ভাটির টানে মাটির গান' (২০০৬), 'জীবন' (২০০৬), 'সাউন্ড অব সাইলেন্স' (২০০৭), 'রিমঝিম বৃষ্টি' (২০০৮), 'বলিনি কখনো' (২০০৯) ও 'জীবনের গল্প' (২০১৫)।

এলআরবির অ্যালবাম- 'এলআরবি' (১৯৯২), 'সুখ' (১৯৯৩), 'তবুও' (১৯৯৪), 'ঘুমন্ত শহরে' (১৯৯৫), 'ফেরারী মন' (১৯৯৬), 'স্বপ্ন' (১৯৯৬), 'আমাদের' ও 'বিস্ময়' (১৯৯৮), 'মন চাইলে মন পাবে' (২০০০), 'অচেনা জীবন' (২০০৩), 'মনে আছে নাকি নেই' (২০০৫), 'স্পর্শ' (২০০৮) ও 'যুদ্ধ' (২০১২)।

আইয়ুব বাচ্চুর জনপ্রিয় গানের তালিকায় রয়েছে- 'চলো বদলে যাই', 'হাসতে দেখো গাইতে দেখো', 'কেউ সুখী নয়', 'ফেরারি এই মনটা আমার', 'একদিন ঘুম ভাঙা শহরে', 'বাংলাদেশ', 'কষ্ট পেতে ভালোবাসি', 'এখন অনেক রাত', 'হকার', 'এই রূপালি গিটার ফেলে', 'গতকাল রাতে' ও 'সেই তারা ভরা রাতে'।

এই তালিকায় আরও রয়েছে- 'মেয়ে তুমি কি দুঃখ চেন', 'সাড়ে তিন হাত মাটি', 'উড়াল দেবো আকাশে', 'কতদিন দেখেনি দু'চোখ', 'মনে আছে নাকি নাই', 'কার কাছে যাব', 'লোকজন কমে গেছে', 'একটাই মন যখন তখন', 'এক আকাশের তারা তুই একা গুনিস নে', 'মন চাইলে মন পাবে', 'অনন্ত প্রেম তুমি দাও আমাকে', 'আমি তো প্রেমে পড়িনি' ও 'আম্মাজান'।

আইয়ুব বাচ্চু ২০১৮ সালের ১৮ অক্টোবর ৫৬ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।

Comments

The Daily Star  | English

Yunus urges DCs to foster teamwork, creativity in admin

He also urged them to express themselves while maintaining discipline and following the chain of command

1h ago