সেপ্টেম্বরে রপ্তানি আয় সাড়ে ৩ বিলিয়ন ডলার

রপ্তানি আয়
চট্টগ্রাম বন্দর। ছবি: রাজীব রায়হান/স্টার ফাইল ফটো

চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের রপ্তানি তথ্য প্রকাশ করেছে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)। গত অর্থবছরের একই সময়ে রপ্তানি তথ্যে তিন দশমিক ১৬ বিলিয়ন ডলারের অসামঞ্জস্যতা ছিল বলে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেছে সংস্থাটি।

গতকাল বুধবার তারা জানায়, তথ্য অসামঞ্জস্যের পেছনে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভূমিকা আছে। গত জুলাইয়ে অসামঞ্জস্য তথ্য প্রকাশের পর নিয়মিত রপ্তানি তথ্য প্রকাশ তিন মাস বন্ধ থাকে।

সংবাদ সম্মেলনে ইপিবির কর্মকর্তারা তথ্য প্রকাশ আর বন্ধ হবে না দাবি করে জানান, ভবিষ্যতে রাজস্ব বোর্ড ও ইপিবির তথ্যে অসামঞ্জস্যতা থাকবে না।

সংস্থাটি বলছে, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রপ্তানি আয় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় পাঁচ শতাংশ বেড়ে ১১ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন ডলার হয়েছে।

২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরের সংশোধিত রপ্তানি তথ্য অনুসারে, চলতি সেপ্টেম্বরেই রপ্তানি হয়েছে সাড়ে তিন বিলিয়ন ডলার। আগের বছরের একই মাসের তুলনায় ছয় দশমিক ৭৮ শতাংশ বেশি।

তথ্য ভুলের বিষয়ে ইপিবির ভাষ্য, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরে রপ্তানি ছিল ১৩ দশমিক ৯৮ বিলিয়ন ডলার। আসলে তা ছিল ১০ দশমিক ৮২ বিলিয়ন ডলার।

ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বলেন, 'আমরা এনবিআর থেকে রপ্তানি তথ্য নিই। তাদের তথ্যে ভুল থাকায় ইপিবির তথ্যেও ভুল ছিল। রাজস্ব বোর্ড শুল্ক ধরার পর রপ্তানির হিসাব রাখে। বাংলাদেশ ব্যাংক রপ্তানির হিসাব রাখে আয় হলে।'

গত জুলাইয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই থেকে এপ্রিল পর্যন্ত প্রকৃত চালান ইপিবির প্রাথমিক রপ্তানি তথ্যের তুলনায় প্রায় ১৪ বিলিয়ন ডলার কম।

রপ্তানির তথ্যে অসামঞ্জস্যতা অন্তত ১২ বছর ধরে চলছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে এই ব্যবধান ১২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে ছিল।

আনোয়ার হোসেন আরও বলেন, '২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ের তথ্যগত অসামঞ্জস্যতা সংশোধনের জন্য ইপিবি এনবিআর ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছে। তারা রপ্তানি হওয়ার পর রপ্তানি আয় বিবেচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।'

তিনি জানান, তারা এনবিআরের তথ্যের সঙ্গে যুক্ত তথ্য সরাসরি প্রকাশের পরিকল্পনা করছেন। তবে এতে আরও সময় দরকার।

একই তথ্যের পুনরাবৃত্তি

তথ্য অসামঞ্জস্যের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্তের ফলাফল উল্লেখ করে আনোয়ার হোসেন বলেন, 'কাস্টমস কর্মকর্তারা একই চালান তথ্য একাধিকবার যোগ করায় অসঙ্গতি দেখা দিয়েছে।'

কাটিং, মেকিং অ্যান্ড ট্রিমিং (সিএমটি) প্রক্রিয়ায় পোশাকের কার্যাদেশের ক্ষেত্রে শুধু মেকিং চার্জের পরিবর্তে কাপড় ও সব আনুষঙ্গিক পণ্যের দাম হিসাব করে ইপিবি। এটি বাড়তি তথ্যের আরেকটি কারণ ছিল।

তিনি আরও বলেন, 'ক্রেতাদের জন্য বিদেশে পাঠানো নমুনা-পণ্যগুলো রপ্তানি হিসাবে ধরা হয়েছিল। প্রকৃত রপ্তানি মূল্য ছাড়াই পণ্যগুলোর দাম নির্ধারণ করা হয়।'

এ ছাড়াও, রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (ইপিজেড) আওতাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর বিক্রি দুইবার গণনা করা হয়। একবার ইপিজেড থেকে স্থানীয় প্রতিষ্ঠানে সরবরাহের সময়। আরেকবার বিদেশি ক্রেতাদের মাধ্যমে বন্দর থেকে পাঠানোর সময়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রকৃত আয় সাধারণত এলসিতে উল্লেখ করা প্রাথমিক দামের নিচে থাকে। এটি ইপিবি সমন্বয় করেনি।

গুদামে পড়ে থাকা পণ্য বিক্রি, ছাড় ও কমিশনের লোকসানও ইপিবি সমন্বয় করেনি বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

'ইপিবির তথ্য সবাইকে নেতিবাচক ধারণা দিয়েছে' উল্লেখ করে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ বলেন, 'সরকারি সংস্থাগুলো ভুল তথ্য যোগ করায় এমনটা হয়েছে।'

ভুল তথ্য ও এর প্রভাব রপ্তানিকারকদের জন্য শুধু অপমানজনকই না, নীতিনির্ধারকদের বিভ্রান্তিকর তথ্যের ফলে এমন ধারণা তৈরি হয়েছিল যে পোশাক খাতে প্রণোদনার প্রয়োজন নেই।

পোশাক রপ্তানিকারকদের 'আকাশছোঁয়া' রপ্তানি তথ্য নিয়ে ইপিবিকে বারবার সতর্ক করা হলেও কোনো সুফল আসেনি বলে মন্তব্য করেন আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ।

Comments

The Daily Star  | English

Each martyr family to get Tk30 lakh: Prof Yunus

Chief Adviser Prof Muhammad Yunus today said each martyr's family will get Tk 30 lakh from the government, reiterating that his government will rehabilitate families of all mass-uprising martyrs and bear the full expanses of the treatment of all the injured..In a televised address to the n

6m ago