ঈদের কেনাকাটা: স্বাভাবিকের তুলনায় বিক্রি বেড়েছে ৫০-৬০ শতাংশ

ঈদের কেনাকাটা
ঈদকে সামনে রেখে রাজধানীর শপিংমলগুলোয় ক্রেতাদের ভিড়। ছবি: রাশেদ সুমন/স্টার

দেশের অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর উদযাপনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে গত শুক্রবার থেকে ঢাকার শপিংমলগুলোয় সব বয়সের ক্রেতাদের ভিড় দেখা যাচ্ছে।

ধানমন্ডি, নিউমার্কেট, ফার্মগেট, পান্থপথ, গুলিস্তানসহ রাজধানীর বেশ কয়েকটি এলাকার শপিংমলে ক্রেতারা পোশাক কিনতে ভিড় করছেন।

গত শুক্রবার থেকে ক্রেতার সংখ্যা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন কয়েকটি ব্র্যান্ড ও খুচরা বিক্রেতারা। ঈদের প্রায় ১৮ দিন বাকি থাকায় এখনো অনেক ক্রেতা কেনাকাটা শুরু করেননি বলেও মনে করছেন তারা।

বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সের পোশাকের ব্র্যান্ড 'লুবনান'র এক শাখার ব্যবস্থাপক রিয়াজ হোসেন রাজু দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আশা করি, ২০ রোজা থেকে পুরোদমে কেনাকাটা শুরু হবে।'

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আল আমিন হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ঢাকার কয়েকটি শপিংমলে নীল-সাদা পাঞ্জাবি খুঁজছি। কিন্তু, পছন্দ মতো কিছু পাইনি।'

গতকাল শনিবার বসুন্ধরা সিটির এক দোকানের শোরুমে দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, 'আমি বেশ কয়েকটি ব্র্যান্ডের দোকান ঘুরেছি। মনের মতো পাঞ্জাবি পাইনি। যদি পছন্দের রঙের পাঞ্জাবি না পাই, তাহলে আজ কিনব না।'

'ঈদের এখনো সপ্তাহ দুয়েক বাকি। অন্যদিন কিনে নেব,' যোগ করেন তিনি।

ঈদের কেনাকাটা
রাজধানীতে চলছে ঈদের কেনাকাটা। ছবি: রাশেদ সুমন/স্টার

শুধু পাঞ্জাবি নয়, পরিবারের সদস্যদের জন্য পোশাক কেনার পরিকল্পনা আছে তার। বলেন, 'ঈদের এখনো বেশ কয়েক দিন বাকি থাকায় আমার তাড়াহুড়ো নেই।'

আল আমিন হোসেনের মতো কয়েকজন ক্রেতা জানান—উপযুক্ত দাম, রঙ ও মানের পোশাক পেলে তবেই কিনবেন।

বেসরকারি চাকরিজীবী ফরিদুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মায়ের জন্য শাড়ি ও আমার জন্য প্যান্ট কিনেছি। এখন বাবার জন্য পাঞ্জাবি কেনার কথা ভাবছি।'

ধানমন্ডির এআর প্লাজায় কাপড় ও জুতার দোকান 'ম্যারুন্ড'র ম্যানেজার শফিকুল ইসলাম অপু ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এখন স্বল্প পরিসরে বিক্রি হচ্ছে। আশা করছি, ঈদের ১০ দিন আগে পুরোদমে বিক্রি শুরু হবে।'

অপুর মতো একই ভাবনা বসুন্ধরা সিটির 'রিচম্যান'র এক শাখার ইনচার্জ নুরুল ইসলামের। তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মাসের মাঝামাঝি হওয়ায় চাকরিজীবীরা এখনো বেতন পাননি। রমজানের শেষ ১২ দিনে বিক্রি বাড়বে বলে আশা করছি।'

'সাধারণত শুক্রবার ক্রেতার সংখ্যা বেশি থাকে' উল্লেখ করে 'জেন্টেল পার্ক'র এক শোরুমের ব্যবস্থাপক আল আমিন খান ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন, গত দুই দিনে স্বাভাবিক দিনের তুলনায় ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ বিক্রি বেড়েছে।

'দর্জিবাড়ি'র শাখা ব্যবস্থাপক জাহিদুল ইসলাম জাহিদ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এখনো আশানুরূপ বিক্রি শুরু হয়নি। আশা করছি, সামনের দিনগুলোয় বিক্রি আরও বাড়বে।'

ফ্যাশনওয়্যার, অ্যাকসেসরিজ, হোম টেক্সটাইল, হস্তশিল্প ও তাঁতপণ্যের খুচরা বিক্রেতা 'কে ক্রাফট'র সহ-প্রতিষ্ঠাতা খালিদ মাহমুদ খান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আগের সপ্তাহান্তে বিক্রি ভালো ছিল। এরপর তা কিছুটা কমে যায়।'

এ বছর আরও ভালো বিক্রি হবে বলে আশা করে তিনি বলেন, 'ঈদের এখনো বেশ কয়েকদিন বাকি। এখনো বেতন-বোনাস হয়নি। আগামী দিনগুলোয় বিক্রি আরও বাড়বে।'

নিউমার্কেট ও ফার্মগেটে ফুটপাতের বিক্রেতাদের বিক্রি ভালো। নিম্ন ও মধ্য আয়ের হাজারো ক্রেতা সেখানে ভিড় করছেন।

রিকশা-ভ্যান ও অস্থায়ী দোকানের বিক্রেতারা শার্ট, টি-শার্ট, ট্রাউজার ও শিশুদের পোশাক বিক্রিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

গত শুক্রবার কুড়িগ্রামের সবজি বিক্রেতা রফিকুল ইসলাম ঢাকার নিউমার্কেটের পাশে ফুটপাতের এক বিক্রেতার কাছ থেকে তার দুই মেয়ের জন্য কাপড় কেনেন। তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এখন কিনছি, কারণ ঈদের কাছাকাছি সময়ে দাম বেড়ে যেতে পারে।'

ঢাকা কলেজের সামনের রাস্তায় পাঞ্জাবি বিক্রেতা করিম মিয়া ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমার মতো বিক্রেতারা এখন অনেক ব্যস্ত। শপিংমলের তুলনায় আমাদের পণ্যের দাম কম হওয়ায় বিক্রি বেশি হয়।'

Comments

The Daily Star  | English

No justifiable reason to delay nat'l polls beyond Dec: Salahuddin

We have been able to make it clear that there is not even a single mentionable reason to hold the election after December, says the BNP leader

8h ago