খরচ কমাতে বাংলাদেশেও বড় ধরনের কর্মী ছাঁটাইয়ের পথে দারাজ

দারাজ
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশসহ পাঁচ দেশে চীনের ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আলিবাবার সহযোগী দারাজ গ্রুপ তাদের 'অনেক সম্মানিত সদস্যকে বিদায়' জানানোর যে ঘোষণা গতকাল দিয়েছে এর প্রভাব পড়বে দারাজের এ দেশের কার্যক্রমেও।

দারাজ বাংলাদেশ সূত্র দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছে, ছাঁটাইয়ের চাপ বর্তমানে প্রায় ৯০০ কর্মীর ৩৫ শতাংশের ওপর পড়তে পারে।

গতকাল দারাজ'র ওয়েবসাইটে বলা হয়, প্রতিষ্ঠানটিকে আরও গতিশীল করতে অনিচ্ছা সত্ত্বেও অনেককে 'বিদায়' দিতে হচ্ছে।

শেষ উপায় হিসেবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও এতে উল্লেখ করা হয়।

সূত্র আরও জানায়, বাংলাদেশের অনেক কর্মীও ছাঁটাইয়ের তালিকায় আছেন।

গতকাল দারাজ গ্রুপের ভার্চুয়াল বৈঠকে প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত সিইও জেমস ডং ছাঁটাইয়ের বিষয়টি কর্মীদের জানান বলে বৈঠকে অংশ নেওয়া বাংলাদেশের কয়েকজন দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন।

গত মাসে জার্ক মিক্কেলসেন প্রধান নির্বাহীর পদ ছাড়ার পর জেমস ডং দায়িত্ব নেন।

এ বিষয়ে অবগত দুইজন ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন, কয়েকজন উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাকেও বরখাস্ত করা হচ্ছে।

সূত্র অনুসারে, দারাজ বাংলাদেশ চুক্তির ভিত্তিতে ৮০০-র বেশি কর্মী নিয়োগ দিয়েছে। তাদের সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য হারে কমে যেতে পারে।

দারাজের এক কর্মী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রতিষ্ঠানটিকে লাভজনক করতে কর্মী ছাঁটাই করা হচ্ছে।'

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের সাবেক সভাপতি ফাহিম মাশরুর ছাঁটাইয়ের ঘোষণাটিকে দেশের ই-কমার্স খাতে বড় ধাক্কা বলে মন্তব্য করেছেন।

তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'দেশের ই-কমার্সে দারাজ মার্কেট লিডার। এর কর্মীরা মুনাফা নিশ্চিত করতে না পারলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে আমাদের বাজার সম্ভাবনা সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা দেবে।'

তার মতে, অনেক তরুণ স্নাতক যারা ডিজিটাল কমার্স বিভাগে ক্যারিয়ার গড়তে চান তারা এখন নতুন করে ভাববেন।

'চলমান অর্থনৈতিক মন্দার কারণে চাকরির বাজার ইতোমধ্যে কঠিন হওয়ায় যারা দারাজ থেকে চাকরি হারাতে যাচ্ছেন তাদের দ্রুত চাকরি পাওয়া কঠিন হতে পারে,' বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ফাহিম মাশরুর আরও বলেন, 'দারাজ ব্যবসার প্রবৃদ্ধি নিয়ে খুব বেশি রক্ষণশীল হয়ে পড়লে সামনের মাসগুলোয় এর ওপর নির্ভরশীল প্রতিষ্ঠানগুলো, যেমন লজিস্টিকস সেবাদাতারা চ্যালেঞ্জে পড়তে পারে।'

২০১৮ সালে দারাজ গ্রুপকে কিনে নেয় চীনের ই-কমার্স জায়ান্ট আলিবাবা। বাংলাদেশ, পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম আছে।

প্রায় ৫০ হাজার বিক্রেতা ও দৈনিক গড়ে এক লাখ অর্ডার নিয়ে বাংলাদেশের ই-কমার্স বিভাগে দারাজ শীর্ষ অবস্থানে আছে।

এটি হবে দেশের ই-কমার্স ও ডিজিটাল সেবা ব্যবসায় অন্যতম বৃহৎ ছাঁটাই।

এর আগে ফুডপান্ডা কর্মী ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। অন্য প্রতিষ্ঠান শপআপও প্রায় এক হাজার কর্মীকে ছাঁটাই করেছে।

গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে দারাজ মূল কর্মীর সংখ্যা ১১ শতাংশ কমানোয় বাংলাদেশে কয়েক ডজন কর্মীকে ছাঁটাই করা হয়।

Comments

The Daily Star  | English

Dhaka airport receives 2nd bomb threat

Operations at HSIA continue amid heightened security

1h ago