সাশ্রয়ী দামে মিলছে কমফোর্টার, বাড়ছে বিক্রি

কমফোর্টার
বন্দরনগরী চট্টগ্রামের নিউমার্কেট এলাকায় রাস্তার পাশে এক গ্রাহককে কমফোর্টার দেখাছেন এক দোকানি। ছবি: রাজীব রায়হান/স্টার

স্থানীয়ভাবে তৈরি হওয়ায় ও সাশ্রয়ী দামে সেগুলো পাওয়া যাচ্ছে বলে দেশে কমফোর্টারের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে বলে জানিয়েছেন এই শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

তাদের মতে, জনগণের ক্রমবর্ধমান ক্রয় ক্ষমতাও কমফোর্টারের চাহিদা বাড়িয়ে তুলছে।

তারা জানান, গত পাঁচ বছরে দেশে কমফোর্টার ও কম্বলের বাজার বার্ষিক ২০ শতাংশ হারে বেড়ে ৭০০ কোটি টাকায় পৌঁছেছে।

এপেক্স, হোমটেক্স, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ, সোয়ান, কারমো, বেঙ্গল, ইউরোএশিয়াসহ শতাধিক প্রতিষ্ঠান এ ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছে।

গত রোববার ঢাকার মিরপুরের বাসিন্দা মোজাম্মেল হক নয় হাজার টাকায় একটি কমফোর্টার ও একটি কম্বল কিনেছেন।

তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি এগুলো কিনেছি কারণ এগুলো খুব আড়ামদায়ক ও হালকা। ধুতে ঝামেলা হবে না।'

প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের ব্র্যান্ড কমফি এবারের শীতে ১৩টি নতুন ডিজাইনের কমফোর্টার নিয়ে এসেছে। প্রতিষ্ঠানটির অন্যান্য পণ্যের মধ্যে আছে গদি, বালিশ ও মশারি।

প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের বিপণন পরিচালক কামরুজ্জামান কামাল ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কমফোর্টারের চাহিদা বেশ বেড়েছে।'

তিনি আরও বলেন, 'এক সময় আমদানি করা কমফোর্টারের চাহিদা বেশি থাকলেও এখন দেশে অনেক ভালোমানের কমফোর্টার তৈরি হচ্ছে। এগুলোর চাহিদাও বাড়ছে।'

সর্বোচ্চ আড়াই হাজার টাকা খুচরা দাম নিয়ে কমফি প্রতি বছর প্রায় তিন লাখ ৬০ হাজার কমফোর্টার উৎপাদন করে। প্রতিষ্ঠানটির বার্ষিক বিক্রি গড়ে প্রায় ১০ শতাংশ হারে বাড়ছে।

গ্রাহকদের সব ধরনের বিছানার কাপড় সরবরাহের লক্ষ্য নিয়ে ২০১৬ সালে যাত্রা শুরু করে কমফি। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি ৩৫ ধরনের পণ্য বাজারজাত করছে।

'গত পাঁচ বছরে কমফোর্টারের চাহিদা বেড়েছে' উল্লেখ করে এপেক্স ফোমের ন্যাশনাল সেলস ম্যানেজার রাশেদুর রহিম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত বছরের সঙ্গে এ বছরের তুলনা করলে চাহিদা দ্বিগুণেরও বেশি।'

এর কারণ—এগুলো আরামদায়ক এবং সহজে ধোয়া যায়, যা প্রচলিত লেপ-কম্বলের ক্ষেত্রে সাধারণত হয় না।

তিনি আরও বলেন, 'ব্যবহারে সুবিধাজনক হওয়ায় মানুষ ঐতিহ্যবাহী কম্বল-কাঁথার চেয়ে এগুলো বেশি ব্যবহার করছেন। এগুলো ধোয়া যায় আবার টেকসই।'

তিনি জানান, বাজারে ৮০০ থেকে এক হাজার টাকার কমফোর্টারের চাহিদা বেশ বেশি।

রাজধানীর নিউমার্কেটের কম্বল বিক্রেতা জাহিদুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত তিন-চার বছর ধরে কম্বল ও কমফোর্টারের চাহিদা বাড়ছে।'

'দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত দামের কমফোর্টারের চাহিদা বেশি' উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'গত বছরের তুলনায় এ বছর বিক্রি প্রায় তিন গুণ বেড়েছে।'

অন্যদিকে হোমটেক্স বাংলাদেশ ম্যানুফ্যাক্টরির এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডেইলি স্টারকে জানান, 'গত বছরের তুলনায় এবারের শীতে কমফোর্টারের বিক্রি কিছুটা কম।'

তিনি মনে করেন, 'দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে বিক্রি কমেছে।'

একইভাবে, দেশের অন্যতম শীর্ষ খুচরা বিক্রয়কেন্দ্র 'স্বপ্ন'র ৪১৬টি আউটলেটে প্রত্যাশিত বিক্রি নেই বলে জানা গেছে।

স্বপ্ন'র মালিকানাধীন এসিআই লজিস্টিকসের নির্বাহী পরিচালক সাব্বির হাসান নাসির ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মৌসুমের শুরুতে আমরা যে পরিমাণ বিক্রি আশা করেছিলাম তা হয়নি। বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণেই হয়ত আশানুরূপ বিক্রি হচ্ছে না।'

চলমান মূল্যস্ফীতির চাপে মানুষের প্রকৃত আয় কমেছে। তাই তারা অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ছাড়া সব কিছুতেই খরচ কমিয়েছেন।

তিনি জানান, নিজস্ব উৎপাদন সুবিধা আছে এমন স্থানীয় সরবরাহকারীদের কাছ থেকে স্বপ্ন কমফোর্টার ও কম্বল কেনে।

Comments

The Daily Star  | English

$14b a year lost to capital flight during AL years

Bangladesh has lost around $14 billion a year on average to capital flight during the Awami League’s 15-year tenure, according to the draft report of the committee preparing a white paper on the economy.

13h ago