‘মুডিসের রেটিং কমলেও বিদেশি বিনিয়োগ ও রেমিট্যান্সে প্রভাব পড়বে না’
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আবদুর রউফ তালুকদার বলেছেন, ২০১২ সালের তুলনায় সব অর্থনৈতিক সূচকই ভালো অবস্থায় আছে। মুডিস রেটিং কমানোর ফলে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ ও রেমিট্যান্স প্রবাহে কোনো প্রভাব পড়বে না।
তিনি মন্তব্য করেন, ক্রেডিট রেটিং এজেন্সি মুডিস বাংলাদেশের যে রেটিং কমিয়েছে তা অর্থনৈতিক ভিত্তিতে করা হয়নি।
গতকাল রোববার বছরের দ্বিতীয়ার্ধের মুদ্রানীতি ঘোষণার সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, 'মুডিসের অবনমনের পেছনে ভূ-রাজনীতি আছে- এটি পিওর অর্থনীতির ওপর ভিত্তি করে নয়।'
এর আগে, গত ৩০ মে মুডিস বাংলাদেশের ব্যাংকিং সেক্টরের ক্রেডিট রেটিং বিএ৩ থেকে বি১-এ নামিয়ে আনে।
তিনি জানান, মুডিস ২০১২ সালে আমাদের বিএ৩ রেটিং দিয়েছিল। ২০১২ সালে ফিরে গেলে দেখা যাবে তখন অর্থনীতি কী অবস্থায় ছিল। তখন আমাদের রিজার্ভ ছিল ১০ বিলিয়ন ডলার। তখন আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধি কত ছিল, মাথাপিছু আয় কত ছিল, আমদানি-রপ্তানির পরিমাণ কত ছিল? তারা ১৩ বছর ধরে এই রেটিং অব্যাহত রেখেছিল।
নিউইয়র্কভিত্তিক ক্রেডিট রেটিং এজেন্সি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতির সময় বাংলাদেশের গ্রেড আপগ্রেড করেনি বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, 'যখন আমাদের রিজার্ভ ছিল ৪৮ বিলিয়ন ডলার, মাথাপিছু আয় ৩ হাজার ডলারের কাছাকাছি ছিল- তখন তারা কেন আমাদের রেটিং পরিবর্তন করেনি? ২০১০ সালের তুলনায় আজ আমাদের অর্থনীতি অনেক ভালো।'
আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, 'যারা বিনিয়োগ করেন, তারা আমাদের ব্যাকগ্রাউন্ড জানেন এবং তা জেনেই বিনিয়োগ করেন। এই রেটিং আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়।'
গত বছরের জুলাইয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দায়িত্ব নেওয়া আব্দুর রউফ তালুকদার প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রার মজুত রাখতে ব্যর্থ হওয়ায় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে নেওয়া ৪.৭ বিলিয়ন ডলারঋণের দ্বিতীয় কিস্তি আটকে যাওয়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেন।
তিনি বলেন, 'এটা কোন ব্যাপার না- তারা (আইএমএফ) এটা ছাড় দিতে পারে।'
আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী, ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি অনুমোদনে আগামী ৩০ জুন বাংলাদেশের অন্তত ২৪ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলারের নিট ইন্টারন্যাশনাল রিজার্ভ (এনআইআর) থাকার কথা আছে। এটি ঋণের জন্য ৩টি বাধ্যতামূলক শর্তের একটি।
তিনি বলেন, '২৪ বিলিয়ন ডলারের এনআইআর রাখতে আমার বাধ্যবাধকতায় ব্যর্থ হব না। আমি মনে করি না, আমরা যদি এনআইআরকে ২৪ বিলিয়ন ডলার রাখতে না পারি, তাহলে খুব বেশি সমস্যা হবে। আমরা তাদের বোঝাতে সক্ষম হব।'
তিনি প্রয়োজনীয় মজুত রাখার ব্যর্থতার কারণ উল্লেখ করে বলেন, 'রমজান মাসে পণ্যের ঘাটতি দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা ছিল। আমরা রিজার্ভ থেকে সহায়তা দিয়েছি। তাই রমজানে কোনো কিছুর অভাব ছিল না। এই বাধ্যবাধকতা পূরণের জন্য আমরা কি মানুষকে ক্ষুধার্ত রেখে দিয়েছি?'
Comments