লঘুচাপে সাগর উত্তাল, অলস বসে আছে মাছ ধরার ট্রলার

লঘুচাপ, ফিশিং ট্রলার, কর্ণফুলী নদী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার,
ছবিটি সম্প্রতি চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর ঘাট থেকে তোলা। ছবি: রাজিব রায়হান/স্টার

সাগরে মাছ ধরার ৬৫ দিনের সরকারি নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে। তারপরও মাছ ধরতে যেতে পারছেন না জেলেরা। কারণ লঘুচাপের কারণে এখন সাগর উত্তাল। তাই মাছ ধরার ট্রলারগুলো ঘাটে খালি ফিরে এসেছে। অনেক ট্রলার মাঝপথ থেকে ফিরে আসায় আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন মালিকরা। এসব ট্রলার বর্তমানে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বরিশাল, পটুয়াখালী ও মোংলা উপকূলের বিভিন্ন ঘাটে অলস বসে আছে।

চট্টগ্রাম ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আমিনুল হক বাবুল সরকার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সামুদ্রিক মৎস্যর প্রজনন মৌসুমকে নিরাপদ রাখতে টানা ৬৫ দিন সাগরে মাছ ধরা নিষিদ্ধ ছিল। গত ২০ মে থেকে এই নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়, শেষ হয় ২৩ জুলাই। সেদিন রাতে ফিশিং ট্রলার নিয়ে অধিকাংশ জেলে সাগরে রওনা হন। তার একদিন পরেই ফিশিং ট্রলারগুলো আবার খালি ফিরে আসে।'

'জেলেরা জানান, সাগর উত্তাল। বাতাসের গতি বেশি। ঢেউগুলো বেশ বড় বড়। সাগরের পরিবেশ মাছ শিকারের অনুকূলে নেই। দুর্ঘটনা এড়াতে তারা ফিরে এসেছেন।'

চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর ফিশারিঘাটসহ বিভিন্ন ঘাটে অলস বসে থাকতে দেখা গেছে শত শত ফিশিং ট্রলারকে। মাছ ধরার বড় ট্রলারগুলো নোঙ্গর করে আছে নদীর মাঝখানে।

মো. আমিনুল হক বাবুল সরকার বলেন, 'নোয়াখালী, মনপুরা ও বাঁশখালী থেকে অনেকগুলো ট্রলার মাছ শিকারে বের হয়েও নিরাপত্তার জন্য চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীতে এসে আশ্রয় নিয়েছে।'

ফিশিং ট্রলারের মালিক আবুল হোসেন বলেন, '২৪ জুলাই ভোরে আমার দুটি ট্রলার মাছ ধরার জন্য সাগরের দিকে রওনা হয়। যাত্রার আগে প্রতিটি ট্রলারে পর্যাপ্ত বরফ, জেলেদের জন্য খাবার, ট্রলারের জ্বালানি তেলসহ আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র কিনে দিয়েছি, এজন্য আমার প্রায় চার লাখ টাকা খরচ হয়েছে। বরফ বাবাদ যে টাকা খরচ হয়েছে তা ক্ষতি হলো। অলস বসে থাকলেও জেলেদের বেতন দিতে হচ্ছে।'

এদিকে, সাগরের পরিবেশ-পরিস্থিতি ভালো হলে আবারো ফিশিং ট্রলারগুলো রওনা দেওয়ার সময় বরফ কিনে লোড করতে হবে বলে জানান আবুল হোসেন।

সামুদ্রিক মৎস্য অধিদপ্তর চট্টগ্রামের পরিচালক মো. আবদুস সাত্তার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সারাদেশে ২৬৩টি ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফিশিং ভ্যাসেল ও ২৯ হাজার ৩৫৮টি কাঠের তৈরি ফিশিং ট্রলার রয়েছে। এখন উত্তর বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ সৃষ্টি হওয়ায় সাগর উত্তাল আছে। তাই অধিকাংশ ফিশিং ট্রলার উপকূলে ফিরে এসেছে।'

তিনি আরও জানান, দেশের মোট জিডিপির ২ দশমিক ৪৩ শতাংশ অবদান রাখে মৎস্য খাত। বর্তমানে মৎস্য রপ্তানি খাত থেকে প্রতি বছর প্রায় ৫০০ কোটি টাকা আয় হচ্ছে। ২০৪১ সালে এই সেক্টরের রপ্তানি আয় ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। এ লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে সামুদ্রিক মৎস্য অধিদপ্তর।

সামুদ্রিক মৎস্য অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, ২০২১-২০২২ অর্থবছরে দেশে মোট মাছ উৎপাদন হয়েছে ৪৭ লাখ ৫৯ হাজার মেট্রিক টন। এর মধ্যে সামুদ্রিক মৎস্য আহরণের পরিমাণ ছিল সাত লাখ ছয় হাজার মেট্রিক টন।

জানতে চাইলে কক্সবাজার জেলা ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ বলেন, কক্সবাজার জেলায় প্রায় পাঁচ হাজার ফিশিং ট্রলার রয়েছে। গত ২৪ জুলাই ভোরে অনেকগুলো ফিশিং ট্রলার মাছ শিকারের জন্য বঙ্গোপসাগরে গেলেও পরে তারা ফিরে আসে।

Comments

The Daily Star  | English
VAT changes by NBR

NBR revises VAT, SD on 9 items following public outcry 

NBR said it has slashed VAT on ready-made clothes, restaurants, sweets, non-AC hotels and motor workshops and mostly restored to the previous levels

1h ago