ভারতের পণ্য ট্রান্সশিপমেন্টের জন্য প্রস্তুত চট্টগ্রাম বন্দর

চট্টগ্রাম বন্দর
চট্টগ্রাম বন্দর। স্টার ফাইল ফটো

ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট পণ্য হ্যান্ডলিংয়ের জন্য চট্টগ্রাম বন্দরে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান আজ মঙ্গলবার দ্য ডেইলি স্টারকে এ কথা জানিয়েছেন। 

তিনি বলেন, 'ইতোমধ্যে দুটি ট্রায়াল রান সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে আমাদের যে দক্ষতা ও সক্ষমতা রয়েছে তাতে অনায়াসে ৪৫ লাখ টিইইউস কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করতে পারব।'

চট্টগ্রাম বন্দরের ১৩৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার দুপুরে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আরও বলেন, 'চট্টগ্রাম বন্দরে ২০২২ সালে ৩১ লাখ ৪২ হাজার টিইইউস কন্টেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে। জেনারেল কার্গো ওঠানামা হয়েছে ১১ কোটি ৯৬ লাখ মেট্রিক টন। জাহাজ হ্যান্ডলিং হয়েছে ৪ হাজার ৩৬১টি।'

তিনি জানান, ভবিষ্যৎ চাহিদাকে সামনে রেখে স্বল্প এবং মধ্যমেয়াদী কার্গো ও কন্টেইনার হ্যান্ডলিং সুবিধাদি সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বন্দরে নতুন নতুন টার্মিনাল নির্মাণ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ৫৮৪ মিটার দীর্ঘ জেটিসহ পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল (পিসিটি) নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে।

রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান বলেন, 'বর্তমানে ও ভবিষ্যতে কন্টেইনার, কার্গো ও জাহাজ হ্যান্ডলিং নিরবচ্ছিন্ন রাখতে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন হেভি লিফট জেটি, বে-টার্মিনাল এবং কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলায় "মাতারবাড়ি পোর্ট ডেভেলপমেন্ট" প্রকল্পের কাজ এগিয়ে যাচ্ছে।'

'মাতারবাড়ি পোর্ট ডেভেলপমেন্ট' প্রকল্প সম্পন্ন হলে চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা ৩-৪ গুণ বৃদ্ধি পাবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, মাতারবাড়িতে বন্দর নির্মাণের জন্য ঠিকাদার নিয়োগে দরপত্রের কারিগরি মূল্যায়ন শেষ হয়েছে। বর্তমানে আর্থিক মূল্যায়ন চলছে। 

চলতি বছরে মাতারবাড়ি টার্মিনালের নির্মাণ কাজ শুরু হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

তিনি বলেন, 'এ টার্মিনাল নির্মিত হলে সেখানে ডিপ ড্রাফট ভেসেল (১৬ মিটার বা ততোধিক গভীরতা সম্পন্ন) আসা-যাওয়া করতে সক্ষম হবে। টার্মিনালটি চালু হলে ভারতের কলকাতা, হলদিয়া, বিশাখাপত্তনম, কাকিনাদাসহ এ অঞ্চলের বন্দরগুলো এটি ব্যবহার করতে পারবে। এছাড়া মিয়ানমারের আকিয়াব, ইয়াঙ্গুনসহ আশেপাশের বন্দরগুলো এটি ব্যবহারের সুযোগ নিতে পারবে। চট্টগ্রাম, মোংলা ও পায়রা বন্দরও তখন মাতারবাড়িকে ফিডার পোর্ট হিসেবে ব্যবহার করবে।'

বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান আরও বলেন, 'করোনা মহামারির সময় বিশ্বব্যাপী কঠোর লকডাউনের সময় বিধি-নিষেধ জারির কারণে বিশ্বের বড় বড় অনেক বন্দর মারাত্মক জটের কবলে পড়ে অচল হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু বিভিন্ন ধরণের অন্তর্বর্তী ব্যবস্থা নেওয়ায় চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক ছিল।'

চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রমে গতি আনতে সরকার চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন জেটি পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের মাধ্যমে পরিচালনার উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানান বন্দর চেয়ারম্যান।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্রকৌশল) কমোডর মো. মাহবুবুর রহমান, সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) মো. হাবিবুর রহমান, বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Comments

The Daily Star  | English

Power, Energy Sector: Arrears, subsidies weighing down govt

The interim government is struggling to pay the power bill arrears that were caused largely by “unfair” contracts signed between the previous administration and power producers, and rising international fuel prices.

10h ago