শ্রমিক বিক্ষোভ: উৎপাদন বন্ধে বাধ্য হয়েছে অনেক ওষুধ কারখানা

শ্রমিকদের ২১ দফা দাবির মধ্যে অন্যতম দাবি হলো- বেতন বৃদ্ধি, চাকরি নিয়মিতকরণ ও দুই দিনের সাপ্তাহিক ছুটি।
বিক্ষোভ, ওষুধ কারখানা, ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস, এসিআই, বেক্সিমকো ফার্মা,
ছবি: সংগৃহীত

নয় দিন ধরে বিক্ষোভ করছেন প্রায় ২০টি ওষুধ কারখানার শ্রমিক। তারা ২১ দফা দাবি আদায়ের জন্য এই বিক্ষোভ করছেন। ফলে, অনেক ওষুধ কারখানা উৎপাদন বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে।

শ্রমিকদের ২১ দফা দাবির মধ্যে অন্যতম দাবি হলো- বেতন বৃদ্ধি, চাকরি নিয়মিতকরণ ও দুই দিনের সাপ্তাহিক ছুটি।

বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতির সভাপতি এবং ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালসের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল মুক্তাদির বলেন, 'হঠাৎ করে প্রায় সব বড় ওষুধ কারখানার শ্রমিকদের মধ্যে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। এটি ওষুধ শিল্পের জন্য ভালো কোনো লক্ষণ নয়।'

তিনি বলেন, 'এই মুহূর্তে দাবি পূরণ করা সম্ভব হবে না উল্লেখ করে ওষুধ কোম্পানিগুলো শ্রমিকদের বিক্ষোভ স্থগিত করার আহ্বান জানিয়েছে।'

'কিন্তু শ্রমিকরা আমাদের কথা শুনতে চাচ্ছেন না। বরং তারা তাদের দাবি পূরণে আমাদের বাধ্য করতে চান।'

তিনি জানান, ফলে গাজীপুর এলাকার বড় বড় কারখানায় উৎপাদন বন্ধ রাখতে হয়েছে।

এসিআই হেলথকেয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম মহিবুজ জামান বলেন, 'দাবি পূরণে তারা আমাদের মাত্র ২৪ ঘণ্টা সময় দিয়েছে।'

তিনি জানান চুক্তিভিত্তিক শ্রমিকরা তাদের চাকরি স্থায়ী করার দাবিতে আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, অন্যদিকে স্থায়ী শ্রমিকরা বেতন বৃদ্ধির দাবি করছেন।

'এসিআই স্থায়ী কর্মীদের যৌক্তিক দাবি পূরণ করেছে এবং তাদের বেতন উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি করেছে।'

কিন্তু কোম্পানিকে ৫৫০ চুক্তিভিত্তিক শ্রমিকের চাহিদা মেটাতে হবে বলে জানান তিনি।

এম মহিবুজ জামান বলেন, 'যেহেতু ফার্মাসিউটিক্যালস একটি বিশেষায়িত শিল্প, তাই এখানে একটি নির্দিষ্ট পর্যায়ের জ্ঞান প্রয়োজন। শ্রমিকরা সেই পর্যায়ে না পৌঁছানো পর্যন্ত তাদের চুক্তিভিত্তিক কাজ করতে হবে।'

বেক্সিমকো ফার্মার প্রধান অর্থ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী নওয়াজ বলেন, 'ওষুধ শিল্পের কাজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আমরা জীবন রক্ষাকারী ওষুধ তৈরি করি।'

তিনি বলেন, 'ফার্মাসিউটিক্যালস সেক্টরের শ্রমিকদের জন্য অন্তত মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট প্রয়োজন, যেন তারা লেবেলগুলো পড়তে পারে এবং ফার্মাসিউটিক্যালস সম্পর্কে কিছু প্রাথমিক জ্ঞান অর্জন করতে পারে।'

বেক্সিমকো ফার্মার কারখানায় ১০ হাজার শ্রমিকের মধ্যে প্রায় দুই হাজার চুক্তিভিত্তিক শ্রমিক এই আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত।

তিনি জানান, স্থায়ী শ্রমিকরা প্রতি দুই বছর অন্তর মূল বেতনের ওপর ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি ও প্রতি সপ্তাহে দুই দিন ছুটির দাবি জানিয়েছে। তাদের দাবি পূরণ করা বেশি কঠিন।

এই বিক্ষোভের কারণে বেক্সিমকো ফার্মার কারখানা দুই দিন বন্ধ ছিল। অবশ্য পরে কারখানা কর্তৃপক্ষ আলোচনার মাধ্যমে শ্রমিকদের কাজে ফিরে যেতে রাজি করাতে সক্ষম হয় বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, 'আমরা তাদের যৌক্তিক দাবি পূরণ করেছি।'

সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে ওষুধ খাতের শ্রমিকদের আন্দোলন পর্যবেক্ষণ করেছি।

'এই খাতের শ্রমিকরা ভেবেছিল, আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায় করা হবে এবং তারা ধরে নিয়েছিল যে তাদের ইচ্ছা বাস্তবায়িত হবে। কিন্তু এভাবে হঠাৎ দাবি উত্থাপন করে আলোচনার সুযোগ না রাখা বোকামি। এটা শিল্পের জন্য ভালো ফল বয়ে আনবে না।'

তিনি শ্রমিক ও মালিকপক্ষকে আলোচনায় বসার পরামর্শ দেন।

Comments

The Daily Star  | English

Post-August 5 politics: BNP, Jamaat drifting apart

The taunts and barbs leave little room for doubt that the 33-year-old ties have soured. Since the fall of Sheikh Hasina’s government on August 5, BNP and Jamaat-e-Islami leaders have differed in private and in public on various issues, including reforms and election timeframe.

7h ago