শীতের শুরুতে রূপচর্চা পণ্যের বিক্রি বাড়ছে

স্কিনকেয়ার, রূপচর্চা, শীত, শীতে ত্বকের যত্ন,
অলঙ্করণ বিপ্লব চক্রবর্তী

দেশে শীতের শুরুতে ত্বকের যত্নে স্কিনকেয়ার বা রূপচর্চা পণ্যের বেশ ভালো বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। দেশে তাপমাত্রা কমতে থাকায় স্কিনকেয়ার পণ্যের চাহিদা আরও বাড়বে বলেও আশা করছেন তারা।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, শিগগিরই তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। চলতি মাসে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনা আছে।

গতকাল সোমবার দেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় কক্সবাজারে ৩০ দশমিক পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নওগাঁয় ১১ দশমিক চার ডিগ্রি সেলসিয়াস।

ইউনিলিভার বাংলাদেশের স্কিনকেয়ারের বিপণন ব্যবস্থাপক জিশান রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এবারের শীতে খুচরা বিক্রেতাদের কাছ থেকে ভালো সাড়া পাচ্ছি।' তিনি আরও বলেন, 'ক্রেতারা এ বছর স্বাভাবিকের তুলনায় স্কিনকেয়ার পণ্য বেশি কিনছেন। এটা ভালো লক্ষণ। আমরা বলতে পারি যে এই বছর বাজার ভালো যাবে।'

কক্সবাজারের বাসিন্দা জিহাদুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে জানান, শীত থেকে রক্ষা পেতে কয়েকদিন আগে তিনি তার পরিবারের সদস্যদের জন্য ক্রিম কিনেছেন।

রাজধানীর বর্ধিত পল্লবী এলাকার খুচরা বিক্রেতা নুরুল আলম শিকদার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে শীত পণ্যের বিক্রি বেড়েছে।'

সংশ্লিষ্টদের মতে— ক্রিম, লোশন, গ্লিসারিন, পেট্রোলিয়াম জেলি, স্কিনকেয়ার সিরাম ও অলিভ অয়েলের মতো পণ্যগুলো সাধারণত শীতে বেশি বিক্রি হয়।

কোহিনূর কেমিক্যাল কোম্পানি বাংলাদেশের ব্র্যান্ডিং বিভাগের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট গোলাম কিবরিয়া সরকার ডেইলি স্টারকে জানান, শীত এখনো পুরোপুরি না এলেও স্কিনকেয়ার পণ্যগুলোর বিক্রি বেড়েছে।

তিনি বলেন, 'শীতে মানুষ স্কিনকেয়ার পণ্য সবচেয়ে বেশি কেনেন ও ব্যবহার করেন। তাই আমাদের কয়েকটি পণ্যের চাহিদা অনেক বেড়েছে।'

তার মতে, শীতের শুরুতে স্কিনকেয়ার পণ্যের ভালো বিক্রির হওয়ায় আশা করা হচ্ছে শীত বাড়লে এগুলোর বিক্রি আরও বাড়বে।

তাদের পণ্যগুলোও ভালো বিক্রি হচ্ছে জানিয়ে বিউটি অ্যান্ড হোম কেয়ার ব্র্যান্ড রিমার্ক এইচবি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফুল আম্বিয়া ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সচেতনতা বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতারা শীতকালীন পণ্য কিনছেন।'

অ্যালাইড মার্কেট রিসার্চের প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২০ সালে স্কিনকেয়ার পণ্যের স্থানীয় বাজার প্রায় এক দশমিক ২৩ বিলিয়ন ডলার মূল্যের হতে পারে বলে ধারণা করা হয়েছিল। ২০২৭ সালের মধ্যে তা দুই দশমিক ১২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছবে বলেও আশা করা হচ্ছে। এর বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার আট দশমিক এক শতাংশ।

বাজারে নকল পণ্য থাকায় এই প্রবৃদ্ধি কিছুটা হলেও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

স্কয়ার টয়লেট্রিজের হেড অব মার্কেটিং জেসমিন জামান ডেইলি স্টারকে জানান, তাদের শীতের স্কিনকেয়ার পণ্যের বিক্রি এখন যতটা হওয়া উচিত ছিল ঠিক ততটা হয়নি।

তিনি বলেন, 'দেশে এখনো শীত পুরোপুরি আসেনি। তাই ক্রেতারা তেমন কিছু কিনছেন না।'

চলতি মৌসুমে কয়েকটি পণ্যের দাম কমলেও সেগুলোর চাহিদা কম জানিয়ে তিনি আরও বলেন, 'আমরা যদি গত বছরের নভেম্বরের বিক্রির সঙ্গে এই বছরের নভেম্বরের বিক্রি তুলনা করি তবে শীতের স্কিনকেয়ার বিক্রিতে তেমন প্রবৃদ্ধি নেই। আমরা স্বাভাবিক প্রবৃদ্ধি আশা করেছিলাম।'

তার মতে, শীতে স্কিনকেয়ার পণ্যের বিক্রি কম হওয়ার পিছনে উচ্চ মূল্যস্ফীতি থাকতে পারে।

অ্যাসোসিয়েশন অব স্কিনকেয়ার অ্যান্ড বিউটি প্রোডাক্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ক্রেতাদের পছন্দ ও স্বাচ্ছন্দ্যের কথা মাথায় রেখে কসমেটিকসের বাজারে বৈচিত্র্যময় পণ্য আনা হচ্ছে।'

রাজধানীর তেজগাঁও এলাকার বাসিন্দা আবৃতি আহমেদ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শীতে ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়ায় ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করি।'

তিনি মনে করেন, স্কিনকেয়ার পণ্য কেনার সময় আইটেমের কনটেন্ট সম্পর্কে সতর্ক হওয়া উচিত। কেননা, সবার ত্বক একই রকম হয় না। এসব পণ্যে এমন কিছু উপাদান থাকে যা অ্যালার্জিতে ভোগা মানুষদের সমস্যা করতে পারে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক এবিএম ফারুক ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শীতে আর্দ্রতার মাত্রা কমে যায়। ফলে ত্বকের বাইরের স্তর এপিডার্মিসের পানির পরিমাণ কমে যাওয়ায় সাধারণত রুক্ষতা, ফ্ল্যাকিং ও চুলকানি দেখা দেয়। ত্বক ফেটেও যেতে পারে।'

তিনি আরও বলেন, 'ত্বক শুকিয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা পেতে অনেকে অনেক রকম ক্রিম ও লোশন ব্যবহার করে থাকেন।'

(প্রতিবেদনটি ইংরেজি থেকে ভাষান্তর করেছেন রবাব রসাঁ)

Comments

The Daily Star  | English

Depositors leave troubled banks for stronger rivals

Depositors, in times of financial uncertainty, usually move their money away from troubled banks to institutions with stronger balance sheets. That is exactly what unfolded in 2024, when 11 banks collectively lost Tk 23,700 crore in deposits.

11h ago