‘দ্য উইংস অব ভাইব্রেন্স’

প্রদর্শনী দেখতে আসা দর্শকদের একাংশ। ছবি: সংগৃহীত

নিসর্গের কবি জীবনানন্দ দাশ লিখেছিলেন, 'আকাশে পাখিরা কথা কয় পরস্পর।/তারপর চ'লে যায় কোথায় আকাশে? তাদের ডানার ঘ্রাণ চারিদিকে ভাসে।'

প্রকৃতির বিস্ময় পাখিদের নিয়ে রাজধানীর গুলশান-২ নম্বরের এজ গ্যালারিতে শুরু হয়েছে 'দ্য উইংস অব ভাইব্রেন্স' শিরোনামের এক আলোকচিত্র প্রদর্শনী।

প্রদর্শনীতে জায়গা পাওয়া ছবিগুলো তুলেছেন বন্যপ্রাণী আলোকচিত্রী ডা. আব্দুস সামাদ আলিম (ইমু)। তিনি পেশায় একজন ক্লিনিক্যাল নিউরোলজিস্ট। তার তোলা দেশ-বিদেশের ১০০টির বেশি মনোমুগ্ধকর পাখির ছবি দিয়ে সাজানো হয়েছে এই প্রদর্শনী।

আজ শনিবার শুরু হওয়া ২ দিনব্যাপী এই প্রদর্শনী চলবে আগামীকাল রোববার পর্যন্ত। সকাল ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সবার জন্য এই প্রদর্শনী উন্মুক্ত থাকবে।

সকালে প্রদর্শনী দেখতে এসে বিশিষ্ট পক্ষীবিদ, লেখক ও বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা ইনাম-আল-হক বলেন, 'পাখি বা অন্যান্য বন্যপ্রাণী আমাদের নিজেদের অস্তিত্বের জন্যই খুব গুরুত্বপূর্ণ। পাখি আমাদের বাস্তুতন্ত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো সারাবিশ্বে পাখির বাসস্থান কমে আসছে। আমরা নিজেদের প্রয়োজনে তাদের পৃথিবীকে ছোট করছি। পাখিরা এখন খুব অল্প জায়গায় খাবার খোঁজে, বাসা তৈরি করে এবং প্রজনন করে।'

তিনি আরও বলেন, 'আমরা যারা পাখির ছবি তুলি, তারা মাঝে মাঝে অতি উৎসাহী হয়ে পাখির খুব কাছাকাছি চলে যাই। এতে পাখিদের সমস্যা হয় এবং তারা খুবই বিরক্তবোধ করে। প্রজনন মৌসুমে আমরা এটি খুব বেশি করি, যা পাখিদের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।'

আলোকচিত্রী আব্দুস সামাদ আলিম বলেন, 'আপনি যখন কোনো পাখির ছবি তুলবেন, সেই মুহূর্তে মনে হবে আপনি সেই পাখি বা তার পারিপার্শ্বিক প্রকৃতির সঙ্গে কথা বলছেন, যোগাযোগ করছেন। আমাদের নিজেদের বেঁচে থাকার জন্য হলেও বন্য পশু-পাখিদের যত্ন নেওয়া দরকার। তাদের নিজস্ব জগৎ আছে, জীবন আছে। এটা মানুষ যত তাড়াতাড়ি বুঝবে, তা মানবজাতির জন্য ততই মঙ্গলময় হয়ে উঠবে।'

এই আলোকচিত্রীর ভাষ্য, 'ছবি নানাভাবে আমাদের বুঝিয়ে দেয় যে জীবন কত মূল্যবান এবং প্রকৃতি কত সুন্দর। তাই একটি ছবিই কখনো কখনো জীবনকে, সমাজকে বদলে দেয়।'

আজ সকালে উদ্বোধনের পর থেকেই প্রদর্শনীতে আসা দর্শনার্থীদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। প্রদর্শনী উপলক্ষে সেখানে হাজির হন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের তরুণ বণ্যপ্রাণী আলোকচিত্রীরা।

বগুড়া থেকে আসা প্রান্ত আল আমিন নামের এক দর্শনার্থী বলেন, 'বাংলাদেশে যে এত সুন্দর সুন্দর পাখি আছে, তাদের নিজস্ব জগতটাও যে কত সুন্দর ও বর্ণিল- তা এই প্রদর্শনীতে উঠে এসেছে।'

Comments

The Daily Star  | English
compensation for uprising martyrs families

Each martyr family to get Tk 30 lakh: Prof Yunus

Vows to rehabilitate them; govt to bear all expenses of uprising injured

7h ago