সদরঘাট-হাওড়া প্রমোদতরি ২০ নভেম্বর থেকে

প্রমোদতরিটি কয়েকটি স্থানে নোঙ্গর করবে, যাতে ভ্রমণকারীরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, গ্রাম-গ্রামীণ জীবন, ঐতিহাসিক-প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান এবং প্রাচীন মসজিদ ও মন্দির দেখার পাশাপাশি দুই দেশের সংস্কৃতি ও খাবার উপভোগ করতে পারেন।
প্রমোদতরি
ভারতের প্রমোদতরি ‘এমভি গঙ্গা বিলাস’। ছবি: প্রথম আলো থেকে নেওয়া

এমকে শিপিং লাইন্স ঢাকার সদরঘাট থেকে কলকাতার হাওড়া পর্যন্ত প্রমোদতরি পরিচালনার পরিকল্পনা করছে। আগামী ২০ নভেম্বর এই যাত্রা শুরু হবে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফা দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, বিআইডব্লিউটিএ প্রমোদতরিটি পরিচালনার অনুমোদন দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

গত ১০ অক্টোবর এর যাত্রা শুরুর কথা ছিল।

বিআইডব্লিউটিএ চেয়ারম্যান আরও জানান, নির্ধারিত সময়ে সরকারের অনুমতি না পাওয়ায় তারিখ পরিবর্তন করতে হয়েছে। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ের পাশাপাশি আবেদনের কার্যকারিতা পর্যালোচনা করতে সময় নিয়েছে।

এমকে শিপিং লাইন্সের মালিক মাসুম খান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিআইডব্লিউটিএর অনুমোদন পাওয়ার কথা আছে। আশা করছি, নির্ধারিত সময়েই যাত্রা শুরু করা যাবে।'

বিআইডব্লিউটিএ সূত্রে জানা গেছে, সাগরপথে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ১৯৭২ সালে 'বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন ও বাণিজ্য সংক্রান্ত প্রটোকল' সই হয়।

২০১৮ সালের ২৫ অক্টোবর দুই প্রতিবেশী দেশের নির্ধারিত উপকূলীয় ও অভ্যন্তরীণ রুটে জাহাজ চলাচলের বিষয়ে দুই দেশের নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) সই করে।

২০১৯ সালের ২৯ মার্চ প্রটোকল অনুযায়ী পর্যটকদের নিয়ে ঢাকা থেকে কলকাতায় যায় 'এমভি মধুমতি'। তবে এটি লাভজনক হিসেবে বিবেচিত না হওয়ায় আর কোনো ট্রিপ চালানো হয়নি।

গত ১৩ জানুয়ারি এসওপির আওতায় একই ধরনের একটি প্রমোদতরি পরিচালনা করা হয়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এর উদ্বোধন করেছিলেন।

অন্তরা ক্রুজেস পরিচালিত 'এমভি গঙ্গা বিলাস' ৫১ দিনে ভারতের পাঁচ রাজ্য ও বাংলাদেশের কিছু অংশের মধ্য দিয়ে প্রায় তিন হাজার ২০০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে।

এমকে শিপিং লাইন্সের মাসুম খান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমাদের জাহাজে ৩০০ থেকে ৩৫০ জনের থাকার সক্ষমতা আছে। ওয়ান ওয়ে ট্যুরের জন্য প্যাকেজের দাম ছয় হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা।'

'এই সফরের জন্য যে কোনো ভারতীয় ভিসা গ্রহণ করা হবে' উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'নদী ও উপকূলীয় পথ অতিক্রম করে হাওড়ায় পৌঁছাতে প্রায় দুই দিন সময় লাগবে। জাহাজটি সেখানে তিন দিন থাকবে যাতে পর্যটকরা কলকাতার দর্শনীয় স্থানগুলোয় যেতে পারেন।'

মাসুম খান জানান, প্রমোদতরিটি কয়েকটি স্থানে নোঙ্গর করবে, যাতে ভ্রমণকারীরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, গ্রাম-গ্রামীণ জীবন, ঐতিহাসিক-প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান এবং প্রাচীন মসজিদ ও মন্দির দেখার পাশাপাশি দুই দেশের সংস্কৃতি ও খাবার উপভোগ করতে পারেন।

'দুই দেশের জন্যই নদীগুলো সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক গুরুত্ব বহন করে। আশা করছি, এই ভ্রমণ একটি চমৎকার অভিজ্ঞতা দেবে।'

এই যাত্রা সফল হলে প্রমোদতরীটি নিয়মিত পরিচালিত হবে বলে জানান তিনি।

বিআইডব্লিউটিএ চেয়ারম্যান আরিফ আহমেদ মোস্তফা ডেইলি স্টারকে জানান, ঢাকা-কলকাতা পর্যটন জাহাজটি চালুর জন্য গত ১৩ সেপ্টেম্বর নৌপরিবহন সচিব মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

তিনি বলেন, 'বৈঠকের কার্যবিবরণী পেয়েছি। সেখানে আমাদের কাছে ইতিবাচক মন্তব্য এসেছে। সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে নদীযাত্রা আবার চালু করতে আমরা তাদের সহযোগিতা করছি। নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় প্রমোদতরি পরিচালনার জন্য সবুজ সংকেত দিয়েছে।'

আরিফ আহমেদ মোস্তফা জানান, অপারেটরদের ভিসা, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ভারত থেকে অনুমতিসহ কিছু প্রক্রিয়া মেনে চলতে হবে।

Comments

The Daily Star  | English

An economic corridor that quietly fuels growth

At the turn of the millennium, travelling by road between Sylhet and Dhaka felt akin to a trek across rugged terrain. One would have to awkwardly traverse bumps along narrow and winding paths for upwards of 10 hours to make the trip either way.

7h ago