ডলারের দাম কমলে কী হয়

আইএমএফ, বাংলাদেশের রিজার্ভ, রিজার্ভ, বাংলদেশ ব্যাংক,
রয়টার্স ফাইল ফটো

একটি দেশের মুদ্রার মান বাড়বে-কমবে—এটাই স্বাভাবিক। সাধারণত মার্কিন ডলারের ওপর ভিত্তি করেই বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিজ নিজ দেশের মুদ্রার মান নির্ধারণ করে থাকে। কিন্তু, গত কয়েক মাস ধরে ক্রমাগত কমছে মার্কিন ডলারের দাম। এই দরপতনের ঘটনা অনেকটাই 'অপ্রত্যাশিত'।

বুধবার বিবিসি মার্কিন ডলারের দাম নিয়ে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, ডলারের দাম কমে গেলে সাধারণ মার্কিনিরা দেখেন—বিদেশে দুর্বল ডলার দিয়ে বেশিকিছু কেনা যায় না। অথচ, বিদেশিরা তাদের দেশে এলে অনেককিছু কিনতে পারেন।

ডলারের দাম কম-বেশি হলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ব্যাপক প্রভাব পড়ে। কিন্তু, অন্যান্য দেশের মুদ্রার দাম ওঠা-নামায় ততটা প্রভাব পড়ে না।

বৈদেশিক বাণিজ্য চালাতে সারা বিশ্বের ব্যাংকগুলো বিপুল পরিমাণ ডলার নিজেদের কাছে রাখে। কেননা, এখন পর্যন্ত মার্কিন ডলার হচ্ছে বৈদেশিক লেনদেনের প্রধান মুদ্রা।

সব দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিদেশি ঋণ পরিশোধের পাশাপাশি আমদানি-রপ্তানিতে ডলার ব্যবহার করে থাকে।

এখন পর্যন্ত পৃথিবীর প্রায় অর্ধেক সংখ্যক দেশ মার্কিন ডলারের বিনিময়ে বৈদেশিক বাণিজ্য সম্পন্ন করে। বিশ্ববাজারে ডলার এখনো সবচেয়ে শক্তিশালী মুদ্রা।

ডলারের দাম কমে যাওয়ার অর্থ মার্কিন পণ্যের দাম কমে যাওয়া। কিন্তু, সেই দেশ যদি অন্যদেশ থেকে পণ্য আমদানি করে তাহলে সেসব পণ্যের দাম বেড়ে যায়। তবে আমদানি শুল্কের হারের ওপর নির্ভর করেও পণ্যের দাম কমবেশি হয়।

আন্তর্জাতিক বাজারে তেল-গ্যাসের দাম নির্ধারণ করা হয় মার্কিন ডলারের ওপর ভিত্তি করে। ডলারের দাম কমলে অন্যান্য দেশের জন্য অপরিশোধিত তেলের দামও কমে যায়।

এ কারণে সংঘাতময় সময়ে ডলার কিনে রাখাকেও অনেকে নিরাপদ বিনিয়োগ মনে করেন।

ডলারের দাম ক্রমাগত কমতে থাকলে কী হতে পারে

যুক্তরাষ্ট্রে শক্তিশালী ডলারকে দেখা হয় দেশটির রাজনৈতিক শক্তিমত্তার অংশ হিসেবে।

নেদারল্যান্ডসের বহুজাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান রাবোব্যাংকের বৈদেশিক লেনদেন বিভাগের প্রধান জেন ফলে বিবিসিকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের 'লিবারেশন ডে'-তে ডোনাল্ড ট্রাম্প আমদানি শুল্কহার ঘোষণার পর ডলারের দরপতন 'খুবই দুঃখজনক'।

জেন ফলের পর্যবেক্ষণ—অন্যান্য দেশের মুদ্রার দাম বেড়ে গেলেও ডলার বিশ্বের এক নম্বর শক্তিশালী মুদ্রা হিসেবে এর মান শিগগিরই হারাবে না।

তবে গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেছিলেন যে এটাকে 'চিরস্থায়ী' ভেবে নেওয়া ঠিক না।

রাবোব্যাংকের বৈদেশিক লেনদেন বিভাগের প্রধান মনে করছেন, আগামী কয়েক সপ্তাহে ডলারের বাজার চাঙা হতে পারে। তবে আগের অবস্থায় হয়ত ফিরবে না।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এখন যদি বিনিয়োগকারীরা ইউরোতে লেনদেনের সিদ্ধান্ত নেন তাহলে ইউরোর দাম কমে যেতে পারে। তখন আবার বাড়তে পারে ডলারের দাম।

Comments