আগামী অর্থবছর

জিডিপি প্রথমবারের মতো ৫০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে

অলঙ্করণ: আনোয়ার সোহেল/স্টার ডিজিটাল গ্রাফিক্স

আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে দেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রথমবারের মতো ৫০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

সম্প্রতি অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের উপস্থিতিতে বাজেট সংক্রান্ত বৈঠকে এ প্রাক্কলন করা হয়।

প্রাক্কলন অনুসারে, আগামী অর্থবছরে চলতি মূল্যে জিডিপি ৫১৭ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারে (৬৩ লাখ ১৫ হাজার ৯২৩ কোটি টাকা) পৌঁছাবে।

চলতি অর্থবছরের জন্য বাজেটে জিডিপি প্রাক্কলন ছিল ৪৯১ বিলিয়ন ডলার। তা ২১ বিলিয়ন ডলার কমে ৪৭০ বিলিয়ন ডলার হতে পারে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় প্রাক্কলন করেছে।

অর্থাৎ চলতি অর্থবছরের সংশোধিত প্রাক্কলনের তুলনায় আগামী অর্থবছরে জিডিপির আকার ১০ দশমিক ২১ শতাংশ বাড়বে।

তবে সংশোধিত হিসাব অনুসারে, চলতি অর্থবছরে জিডিপি বাড়তে পারে চার দশমিক ৪৪ শতাংশ।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য বলছে—২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেশের জিডিপি হয়েছে ৪৫০ বিলিয়ন ডলার।

অর্থ মন্ত্রণালয় আশা করছে, আগামী অর্থবছরে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর কারণে জিডিপি নতুন মাইলফলক অতিক্রম করবে।

একইভাবে, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের জন্য অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমালেও, আগামীতে উচ্চ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে।

আগামী অর্থবছরে প্রকৃত জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছয় শতাংশ ও মূল্যস্ফীতি সাড়ে ছয় শতাংশ ধরেই অর্থ মন্ত্রণালয় চলতি মূল্যে জিডিপির এই পূর্বাভাস দিয়েছে।

বাংলাদেশের পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) প্রধান অর্থনীতিবিদ আশিকুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এটা বাস্তবসম্মত প্রক্ষেপণ, অবাস্তব নয়।'

তবে ছয় শতাংশ প্রকৃত জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেন তিনি।

তার ভাষ্য, 'বেসরকারি বিনিয়োগে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। শিগগিরই অর্থনৈতিক পরিস্থিতির ভালো হওয়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। বার্ষিক উন্নয়ন খরচও কম। আগামী অর্থবছরে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে এমন নিশ্চয়তা নেই।'

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ মুদ্রানীতিতে আগামী জুন পর্যন্ত বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি হবে নয় দশমিক আট শতাংশ। এটি অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশোধিত প্রক্ষেপণের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

আগামী অর্থবছরে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ১১ শতাংশে উন্নীত হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

রপ্তানি ও রেমিট্যান্স আয় বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি আগামীতে সামগ্রিক আমদানি বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, গত বছরের ডিসেম্বরের আগে আমদানি কম হয়েছিল। তবে জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত আমদানি বেড়েছে তিন দশমিক ৫৩ শতাংশ।

২০২৫-২৬ অর্থবছরে আমদানি ১০ শতাংশে পৌঁছাবে বলেও আশা করছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

তবে, জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর জিডিপির আকার পুনর্বিবেচনার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দিয়ে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ডিশটিংগুইশড ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, 'দেশের অর্থনীতির অবস্থা নিয়ে প্রকাশিত শ্বেতপত্রসহ অনেক প্রতিবেদনে পরিসংখ্যান ব্যুরোর জিডিপি প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলনের ভুলত্রুটি দেখা গেছে।'

'ফলে প্রকৃত কর-জিডিপি অনুপাত ও ঋণ-জিডিপি অনুপাতের সঠিক হিসাব করা যাচ্ছে না' বলে মন্তব্য করেন তিনি। আরও বলেন, 'প্রথমত, পরিসংখ্যান ব্যুরোকে জিডিপি গণনার জন্য কার্যকর পদ্ধতি মেনে চলতে হবে।'

Comments

The Daily Star  | English

No clear roadmap for investment

The budget for FY26 has drawn strong criticism from business leaders who say it lacks a clear roadmap for improving the investment climate, bolstering industrial competitiveness, and implementing overdue reforms in the banking sector.

14h ago