২০ হাজার গয়নার দোকানে ইএফডি বসানোর পরিকল্পনা এনবিআরের

স্টার ফাইল ফটো

রাজস্ব বাড়াতে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের গয়নার দোকানগুলোয় প্রায় ২০ হাজার ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস (ইএফডি) বসানোর পরিকল্পনা করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

দেশব্যাপী এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে প্রাথমিকভাবে নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, মুন্সিগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, সাভার, গাজীপুর, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, শেরপুর, টাঙ্গাইল, জামালপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিসহ ১৭ জেলাকে বেছে নিয়েছে কর প্রশাসন।

রাজস্ব বোর্ডের সূত্রে জানা গেছে, প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির (বাজুস) নেতাদের চিঠি দিয়ে এ প্রক্রিয়ার সুবিধার্থে তাদের সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে।

এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে তারা আগামী বৃহস্পতিবার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করবে।

এক চিঠিতে বলা হয়েছে, ইএফডি বসানোর জন্য জেনেক্স ইনফোসিসকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

এই উদ্যোগটি এমন সময়ে এসেছে যখন রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে হিমশিম খাচ্ছে রাজস্ব বোর্ড। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় রাজস্ব কমছে।

চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে কর প্রশাসন আদায় করেছে এক লাখ ৩০ হাজার ১৮৫ কোটি টাকা। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় দুই দশমিক ৬২ শতাংশ কম।

এই উদ্যোগের ফলে মূল্যস্ফীতি ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ধীর হতে পারে এমন উদ্বেগ সত্ত্বেও গত ৯ জানুয়ারি রাজস্ব বোর্ড প্রায় ১০০ পণ্য ও সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ও সম্পূরক শুল্ক (এসডি) বাড়িয়েছে।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সুপারিশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ভ্যাট ও এসডি বাড়ানো হয়েছে। সংস্থাটি গত বছরের জানুয়ারিতে বাংলাদেশের জন্য চার দশমিক সাত বিলিয়ন ডলার ঋণ অনুমোদন দিয়েছে।

আইএমএফের পরামর্শ কর ছাড়ের বিষয়টি সরকারকে যৌক্তিক করতে হবে। কর আইন সংস্কার ও রাজস্ব আদায়কে জোরদার করতে সংস্কার বাস্তবায়ন করতে হবে। বাংলাদেশ বিশ্বের সর্বনিম্ন কর-জিডিপি অনুপাতের দেশগুলোর অন্যতম।

রাজস্ব বোর্ডের চিঠিতে ঢাকা কমিশনারেটের আওতাধীন মার্কেট ও মহল্লায় গয়নার দোকানের তালিকাও চাওয়া হয়েছে।

অবিলম্বে পূর্ণাঙ্গ তালিকা দেওয়া সম্ভব না হলে পর্যায়ক্রমে দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।

বাজুসের মুখপাত্র মাসুদুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রথমে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের গয়নার দোকানগুলোতে ইএফডি বসানো হবে। পর্যায়ক্রমে বাকি বিভাগগুলোয় বসানো হবে।'

বর্তমানে দেশে নিবন্ধিত ভ্যাটদাতার সংখ্যা পাঁচ লাখের বেশি। ভ্যাট দিতে সক্ষম উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এই ব্যবস্থার বাইরে রয়ে গেছে।

বাজুসের তথ্য বলছে, অনেক গয়নার দোকানের ভ্যাট নিবন্ধন নেই। সব প্রতিষ্ঠানে ইএফডি বসানো হলে সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে।

সরকারি হিসাবে, দেশে বছরে স্বর্ণের চাহিদা প্রায় ২০ থেকে ৪০ টন।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছে, স্বর্ণের প্রায় ৮০ শতাংশ চাহিদা মেটানো হয় চোরাচালানের মাধ্যমে।

বাজুস বলছে, প্রতি বছর প্রায় ৭৩ হাজার কোটি টাকার স্বর্ণ দেশে পাচার হয়ে আসে।

Comments

The Daily Star  | English

The honeymoon period of the interim government is over

What started as a moment of hope—a chance to break free from the chains of authoritarian rule—has increasingly turned into a struggle for meaningful reform.

1d ago