পলিব্যাগ নিষিদ্ধের পরও ব্যবহার থামছে না কেন?

বিস্ময়করভাবে দেশে বর্তমানে পলিব্যাগের পর্যাপ্ত বিকল্প নেই। ছবি: প্রবীর দাস/স্টার
বিস্ময়করভাবে দেশে বর্তমানে পলিব্যাগের পর্যাপ্ত বিকল্প নেই। ছবি: প্রবীর দাস/স্টার

বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ২০০২ সালে পলিব্যাগের ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করলেও বহুল প্রশংসিত এই উদ্যোগের বাস্তবায়ন সম্প্রতি বাস্তব রূপ নিতে শুরু করেছে।

২০০২ সালে তৎকালীন পরিবেশমন্ত্রী ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের সংসদ সদস্য শাহজাহান সিরাজ বলেছিলেন যে, পলিব্যাগের ব্যবহার চলমান রাখা হলে তা জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করবে।

প্রাথমিকভাবে এই উদ্যোগটি বেশিরভাগ মানুষ গ্রহণ করায় প্লাস্টিক বর্জ্য ক্রমাগত কমতে থাকে। যাই হোক, ধীরে ধীরে তা ব্যর্থ হয়। অসংখ্য কারণে পলিব্যাগের ব্যবহার আবার ফিরে আসে।

এর মধ্যে আছে যথাযথভাবে আইন প্রয়োগে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনীহা। পলিব্যাগ প্রস্তুতকারকরা ক্ষতিপূরণ দাবি করেছিলেন। রাজনৈতিক মহল এই আদেশ স্থগিতের তদবির করেছিল। গ্রহণযোগ্য বিকল্প ব্যাগের অভাবও ছিল প্রকট।

দুই দশকেরও বেশি সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার সেই পুরোনো নিষেধাজ্ঞাটি ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেয়। গত নভেম্বর তা আবার কার্যকর হয়।

প্রায় আড়াই মাস পর, একমাত্র কৃতিত্ব হলো—দেশে প্রায় দেড় হাজার সুপারশপ এখন ক্রেতাদের পাট, কাগজ ও কাপড়ের ব্যাগে পণ্য দিচ্ছে।

মহল্লার কাঁচাবাজারে পলিব্যাগের ব্যবহার বেশি। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পাট উৎপাদনকারী হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশ পাটের ব্যাগ ব্যবহারে হিমশিম খাচ্ছে।

কেন এমন পরিস্থিতি?

কারওয়ানবাজার সহ দেশের অনেক বাজারে এখনো পলিথিনের বহুল ব্যবহার চলমান। ছবি: প্রবীর দাস/স্টার
কারওয়ানবাজার সহ দেশের অনেক বাজারে এখনো পলিথিনের বহুল ব্যবহার চলমান। ছবি: প্রবীর দাস/স্টার

বিস্ময়করভাবে দেশে বর্তমানে পলিব্যাগের পর্যাপ্ত বিকল্প নেই।

সুপারশপগুলোর প্রতিদিনের চাহিদা মেটাতে পর্যাপ্ত পরিবেশবান্ধব ব্যাগ উৎপাদনে হিমশিম খাচ্ছে পরিবেশবান্ধব ব্যাগ তৈরির প্রায় ২০ ছোট প্রতিষ্ঠান। এই খাতে বড় বিনিয়োগ আসেনি। উদ্যোক্তারাও বিকল্প ব্যাগ তৈরিতে টাকা ঢালতে আগ্রহী নন।

সরকারের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়া সত্ত্বেও কাঁচাবাজার, মুদি দোকান ও রাস্তার পাশের ছোট ছোট দোকানগুলোয় পলিব্যাগের ব্যবহারে কোনো দৃশ্যমান পরিবর্তন আসেনি।

বাংলাদেশ সচিবালয় থেকে প্রায় চার কিলোমিটার দূরে লালবাগ, শহীদ নগর ও চকবাজারের সরু গলির পাশের কারখানাগুলো বছরের পর বছর ধরে পলিব্যাগ উৎপাদন করে আসছে।

ছোট আকারের পরিবেশবান্ধব-ব্যাগ প্রস্তুতকারকদের আশঙ্কা, ভবিষ্যতের রাজনৈতিক সরকার এই নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত রাখবে এর কোনো নিশ্চয়তা নেই। নিষেধাজ্ঞা জোরালো করা তো দূরের কথা।

এই একই অনিশ্চয়তা ছোট ব্যবসায়ীদের পরিবেশবান্ধব ব্যাগে বিনিয়োগ থেকে বিরত রাখছে।

সরকারের ভাষ্য, বিকল্পের অভাবকে দায়ী করে পলিব্যাগ ব্যবহারকে উৎসাহিত করা হচ্ছে।

পরিবেশবিদদের মতে, উপযুক্ত বিকল্প পর্যাপ্ত পরিমাণে না থাকায় ২০০২ সালে পলিথিন নিষেধাজ্ঞার বাস্তবায়ন হোঁচট খায়। সুতরাং, পলিথিন সমস্যা সমাধানে সহজলভ্য ও কম দামের বিকল্প ব্যাগ উৎপাদনে মনোযোগ দেওয়া জরুরি।

পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিচ্ছে সুপারমার্কেটগুলো

সুপারস্টোরগুলোতে পলিথিনের বিকল্প দেওয়া হচ্ছে। ছবি: প্রবীর দাস/স্টার
সুপারস্টোরগুলোতে পলিথিনের বিকল্প দেওয়া হচ্ছে। ছবি: প্রবীর দাস/স্টার

স্বপ্ন, আগোরা, ইউনিমার্ট ও মীনা বাজারসহ প্রধান সুপারমার্কেটগুলো নতুন নিয়মের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিচ্ছে। সেসব সুপারস্টোরে এখন পাট ও কাগজের ব্যাগ পাওয়া যায়। প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রাহকদেরকে তাদের ব্যাগ আবার ব্যবহারে উত্সাহিত করছে। পোস্টার-ফেস্টুনের মাধ্যমে ক্রেতাদের পলিব্যাগ ব্যবহার কমানোর গুরুত্বের কথা বলা হচ্ছে।

কিন্তু, যারা পুরোনো ব্যাগ সঙ্গে আনতে ভুলে যান, তাদেরকে এই স্টোরগুলো ২০ থেকে ২৫ টাকার মধ্যে পরিবেশবান্ধব ব্যাগ দেয়।

পলিব্যাগ বাদ দেওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী সুপারশপ 'স্বপ্ন'র ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাব্বির হাসান নাসির। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। গ্রাহকদের পলিথিনের পরিবর্তে পরিবেশবান্ধব ব্যাগ ব্যবহারে উৎসাহিত করছি।'

তবে উদ্বেগের বড় কারণ হলো গ্রাহকদের আচরণ ও তাদের কেনাকাটার অভ্যাস।

আগে বিনামূল্যে পলি ব্যাগ পাওয়া যেত বলে এখন অনেক ক্রেতা ২০-২২ টাকা দিয়ে পুনঃব্যবহারযোগ্য পাটের ব্যাগ কিনতে আগ্রহী নন। মাছ-মাংসের মতো ভেজা পণ্য বহনে পাটের ব্যাগ ঝামেলার হতে পারে।

সাব্বির হাসান নাসির মনে করেন, 'ক্রেতাদের জন্য আরও কম দামে ভালোমানের টেকসই পরিবেশবান্ধব ব্যাগ তৈরিতে সরকারের ভর্তুকি দেওয়া উচিত।'

পাটের ব্যাগের ক্রমবর্ধমান চাহিদার কথা তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, 'বর্তমানে স্বপ্নের আউটলেটগুলোয় প্রতিদিন প্রায় এক লাখ ব্যাগ দরকার হয়। আউটলেটের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এই চাহিদা প্রতি মাসে ৩০ শতাংশ হারে বাড়ছে।'

পরিবেশবান্ধব ব্যাগ উৎপাদকরা কি এই সুযোগ ধরে রাখতে পারবেন?

বিস্ময়করভাবে দেশে বর্তমানে পলিব্যাগের পর্যাপ্ত বিকল্প নেই। ছবি: প্রবীর দাস/স্টার
বিস্ময়করভাবে দেশে বর্তমানে পলিব্যাগের পর্যাপ্ত বিকল্প নেই। ছবি: প্রবীর দাস/স্টার

বাংলাদেশ জুট ডাইভারসিফায়েড প্রোডাক্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিইউটিএ) সভাপতি রাশেদুল করিম মুন্না ডেইলি স্টারকে বলেন, 'হঠাৎ করে কম দামে পরিবেশবান্ধব ব্যাগের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় তা মেটাতে পাটশিল্প প্রস্তুত নয়।'

তার মতে, এ ধরনের ব্যাগ উৎপাদনে আলাদা উপকরণ ও বিনিয়োগের প্রয়োজন।

এই নিষেধাজ্ঞা অন্তত তিন বছরের জন্য কার্যকর রাখতে গেজেট দরকার বলে মনে করেন তিনি। 'এটি বিনিয়োগকে উত্সাহিত করবে। এই শিল্পে কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে।'

পাটের ব্যাগ ব্যবসায়ী ও ক্রেতা উভয়ের জন্য সহজলভ্য করতে সুপারমার্কেটে পণ্য বিক্রির ওপর মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) তুলে নেওয়ার পরামর্শও দেন তিনি।

তিনি মনে করেন, পাটের ব্যাগ উৎপাদনে আর্থিক প্রণোদনা ও সহায়ক অবকাঠামোর অভাব পলিব্যাগ নিষেধাজ্ঞার দীর্ঘমেয়াদি সাফল্যের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।

হঠাৎ চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় বেকি সেন্টারের মালিক তাহমিদুল ইসলামের মতো অনেক পরিবেশবান্ধব ব্যাগ প্রস্তুতকারী চাপে পড়েছেন।

আগে প্রচারণামূলক কাজে গুরুত্ব দেওয়া বেকি সেন্টার এখন পরিবেশবান্ধব ব্যাগ তৈরি করছে।

নিষেধাজ্ঞার পর থেকে প্রতিদিন সুপারমার্কেটগুলোয় ৩০ হাজারের বেশি ব্যাগ দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।

'সুপারস্টোর থেকে দেরিতে টাকা দেওয়ার মতো বাধা আছে,' উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'কিছু দোকানে ব্যাগ দেওয়ার কয়েক মাস পরে টাকা পেয়েছি। উৎপাদন ধরে রাখা কঠিন।'

তাছাড়া, কাঁচা পাটের দাম বেশি হওয়ায় ও পাটের মৌসুম শেষে নিষেধাজ্ঞা আসায় কম দামে ব্যাগ তৈরি প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠেছে।

আবার এই নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগ সংশ্লিষ্ট বিভাগের গড়িমসি নিয়েও হতাশ তিনি।

'সরকারের নির্দেশনা সত্ত্বেও এই নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে না। কঠোর তদারকি ছাড়া নিষেধাজ্ঞার কার্যকারিতা বিফলে যেতে পারে।'

ক্রেতাদের অভ্যাস ধীরে ধীরে বদলায়

বিস্ময়করভাবে দেশে বর্তমানে পলিব্যাগের পর্যাপ্ত বিকল্প নেই। ছবি: প্রবীর দাস/স্টার
বিস্ময়করভাবে দেশে বর্তমানে পলিব্যাগের পর্যাপ্ত বিকল্প নেই। ছবি: প্রবীর দাস/স্টার

আগোরা লিমিটেডের চিফ অপারেটিং অফিসার খন্দকার নূর-ই-বুরহান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানোর পরিবেশগত সুবিধা সম্পর্কে ভোক্তা ও ব্যবসায়ীদের সচেতন করতে ব্যাপক প্রচারণা প্রয়োজন। অন্যান্য অনেক দেশের মতো বাংলাদেশে পুনঃব্যবহারযোগ্য ব্যাগ দিয়ে কেনাকাটার প্রবণতা এখনো নতুনদের মধ্যে গড়ে উঠেনি।'

গ্রাহকরা প্রায়ই পুনঃব্যবহারযোগ্য ব্যাগ কিনতে দ্বিধায় থাকেন। মান ও আকারের ওপর নির্ভর করে এর দাম হয় ১৫ থেকে ২৫ টাকা।

'অতিরিক্ত খরচের পাশাপাশি বারবার বাজারে ব্যাগ নিয়ে যাওয়াকে অনেক ক্রেতা বিরক্তিকর মনে করেন। একবার ব্যবহারযোগ্য পরিবেশবান্ধব ব্যাগের দাম পাঁচ-সাত টাকার মধ্যে হলে ভালো হয়।'

কম দামের ও ভালোমানের পরিবেশবান্ধব ব্যাগ বাজারে কম বলে স্বীকার করেন তিনি।

এ ছাড়া, কাঁচা বাজারে পলিব্যাগের ব্যবহার অব্যাহত থাকায় সুপারমার্কেটগুলোর জন্য তা সমস্যা তৈরি করছে। এই বৈষম্য ব্যবসার মুনাফায় প্রভাব ফেলছে।

এমন পরিস্থিতিতে তার মত, সরকারের উচিত সব ব্যবসার জন্য সমান নীতি নিশ্চিত করা।

উৎপাদন খরচ কমাতে ও ক্রেতাদের জন্য এসব বিকল্প আরও কম দামে সরবরাহ করতে পরিবেশবান্ধব ব্যাগ প্রস্তুতকারকদের আর্থিক সহায়তা দেওয়ার পরামর্শও দেন তিনি।

কাঁচাবাজারে পলিব্যাগ নিষিদ্ধের চ্যালেঞ্জ

বিস্ময়করভাবে দেশে বর্তমানে পলিব্যাগের পর্যাপ্ত বিকল্প নেই। ছবি: প্রবীর দাস/স্টার
বিস্ময়করভাবে দেশে বর্তমানে পলিব্যাগের পর্যাপ্ত বিকল্প নেই। ছবি: প্রবীর দাস/স্টার

সম্প্রতি ঢাকার উত্তরায় এক কাঁচাবাজারে পলিব্যাগের ওপর ব্যাপক নির্ভরশীলতা দেখা গেছে।

মুদি দোকানদার ও ক্রেতারা ডেইলি স্টারকে জানান, খুব কম মানুষই নিজেদের ব্যাগ নিয়ে বাজারে আসেন। পণ্য বহনের জন্য তারা পলিব্যাগ দিতে দোকানিদের বাধ্য করেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক সবজি বিক্রেতা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বাজারে পরিবেশবান্ধব ব্যাগ পাওয়া যায়। সেগুলোর অনেক দাম। মানুষ কিনতে চান না।'

দোকানদাররা সবাই একমত যে সরকার পলিব্যাগের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া সত্ত্বেও এর কোনো বিকল্প দিতে পারেনি।

উদাহরণ হিসেবে এক ক্রেতা আসাদ রহমানের কথাই ধরা যাক। তিনি মাছ-সবজি কিনে সবকিছু আলাদা পলিব্যাগ নেন। এরপর সেগুলো বড় ব্যাগে রাখেন। বাজার থেকে বের হওয়ার সময় তার হাতে ছিল আটটি পলিব্যাগ।

তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পলিব্যাগ ছাড়া মাছ-মাংস ফ্রিজে রাখবো কীভাবে? বাজার থেকে ভেজা পণ্য আনার জন্য কি বিকল্প ভালো কিছু আছে?'

তিনি পলিব্যাগের বিপদ সম্পর্কে জানেন। ড্রেন ও জলপথ আটকে দেওয়ার জন্য প্লাস্টিক দায়ী। অল্প বৃষ্টিতে সেগুলো রাস্তায় ভেসে আসে।

কিন্তু পলিব্যাগ কম ব্যবহার করতে পারেন কিনা—এমন প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, 'প্লাস্টিক আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এর সুবিধা অনেক। তাই নিষেধাজ্ঞা সম্পূর্ণ কার্যকর করার আগে সরকারকে অবশ্যই বিকল্প দিতে হবে।'

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুর রউফ মনে করেন, পরিবেশবান্ধব ব্যাগের অভাব থাকায় পলিব্যাগের বিকল্প নেই।

তবে পলিব্যাগের সম্ভাব্য বিকল্প বাজারে আনার জন্য মন্ত্রণালয়ের গবেষণা বিভাগ নেই জানিয়ে তিনি বলেন, 'কাপড় ও পাটের ব্যাগ দিয়ে এটা পূরণ করা যেতে পারে।'

ক্রেতাদের বাড়তি খরচ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'বিনামূল্যে পরিবেশবান্ধব ব্যাগ দেওয়ার সুযোগ কম। এটি মেনে নেওয়া ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই।'

'বিকল্প নেই এটা কোনো অজুহাত নয়'

বিকল্প নেই বলে পলিব্যাগ ব্যবহার কমানো যাচ্ছে না—এমন দাবি মানতে নারাজ পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ফারহিনা আহমেদ।

তিনি বলেন, 'দেশে সবসময়ই প্লাস্টিকের বিকল্প ছিল এবং আছে। এটা শুধু পাট হতে হবে এমন নয়। তুলা ও কাগজের ব্যাগও বিকল্প হতে পারে।'

তার মতে, বিকল্প খোঁজার পাশাপাশি নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে ক্রমাগত নজরদারি দরকার।

'সরকার এই নিষেধাজ্ঞা পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করছে' জানিয়ে তিনি বলেন, 'পলিব্যাগ ব্যবহার আমাদের দৈনন্দিন জীবনে গভীরভাবে জড়িত। এটি সুবিধাজনক ও বিনামূল্যে পাওয়া যায়। এই অভ্যাসে পরিবর্তনে সময় লাগবে। বর্তমানে যদি প্রতিদিন এক কোটি পলিব্যাগ প্রয়োজন হয় তবে পুনঃব্যবহারযোগ্য বিকল্প ব্যাগের খুবই দরকার।'

তিনি মনে করেন, পলিব্যাগের বিকল্পের দিকে যাওয়া ছাড়া অন্য বিকল্প নেই। শুধু আইনি দিক নয়, প্লাস্টিকের ব্যবহার জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের অপরিবর্তনীয় ক্ষতি করছে।

'যদি চেন্নাই, রুয়ান্ডা ও তানজানিয়া সফলভাবে প্লাস্টিক নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন করতে পারে, তাহলে বাংলাদেশের না পারার কোনো কারণ নেই,' বলে মন্তব্য করেন তিনি।

 

Comments

The Daily Star  | English

An early taste of Trump tariffs

Trump kicked off his second term with a whirlwind of mixed messages about his trade policies

3h ago