‘ডলারের মূল্যবৃদ্ধিতে দেশের কোম্পানিগুলো ৬৫ হাজার কোটি টাকা হারিয়েছে’
মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার দরপতনের কারণে গত এক বছরে বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো ৬৫ হাজার কোটি টাকা লোকসান করেছে বলে জানিয়েছেন পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর।
রোববার ঢাকার ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি) আয়োজিত 'মনিটারি পলিসি ২০২২-২৩' শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, 'আগে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো ১০০ ডলার কিনতে ৮ হাজার ২০০ টাকা খরচ করত, কিন্তু গত ১ বছরে একই পরিমাণ ডলার কিনতে তাদের খরচ হয়েছে ১০ হাজার ৫০০ টাকা। টাকার দরপতনের জন্য করপোরেট হাউজগুলোকে আমেরিকান মুদ্রা কিনতে আরও বেশি খরচ করতে হয়েছে।'
মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার দরপতনের প্রকৃত সমস্যা গত বছরের জুনে শুরু হওয়ায় চলতি অর্থবছরের প্রথম ও দ্বিতীয় প্রান্তিকে স্থানীয় অনেক বড় কোম্পানি ৪০০ কোটি থেকে ৫০০ কোটি টাকা লোকসান করেছে বলে জানান তিনি।
আহসান এইচ মনসুর বলেন, 'আরও বিপজ্জনক তথ্য হলো মার্কিন ডলারের অস্থির বিনিময় হারের কারণে করপোরেট হাউজগুলো তাদের লাভের ৯০ শতাংশ থেকে ৯৫ শতাংশ হারাচ্ছে৷'
তাছাড়া, অর্থনীতির সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে গত ১ বছরে বাংলাদেশ আর্থিক অ্যাকাউন্ট থেকে ১৪ বিলিয়ন ডলার হারিয়েছে জানান তিনি।
উদাহরণ হিসেবে তিনি জানান, ২০২০-২১ অর্থবছরে আর্থিক অ্যাকাউন্টে প্রায় ১৩ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার উদ্বৃত্ত ছিল এবং ২০২০-২১ অর্থবছরে উদ্বৃত্তের পরিমাণ ছিল ১৪ বিলিয়ন কিন্তু ২০২২ সালে কিন্তু গত বছর এই অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স ঋণাত্মক হয়ে গেছে।
ব্যাংকিং ব্যবস্থায় ডলারের ঘাটতির কারণে লেটার অব ক্রেডিট খোলার সময়ও কমে যাওয়ায় অর্থনীতি যাতে আর ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য অবিলম্বে ডলার সংকট সমাধানের পরামর্শ দেন তিনি।
এ ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক পরিচালিত হারের পরিবর্তে বাজারনির্ভর বিনিময় হার প্রবর্তনেরও পরামর্শ দেন তিনি।
বৈঠকটি সঞ্চালনা করেন আইসিএবির সাবেক সভাপতি হুমায়ুন কবির।
এতে আরও বক্তব্য রাখেন আইসিএবি-এর সিইও শুভাশীষ বোস, দৈনিক সমকালের বিজনেস এডিটর জাকির হোসেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আবদুল মজিদ, আইসিএবির সাবেক সভাপতি জামালউদ্দিন আহমেদসহ আরও অনেকে।
Comments