বিনিয়োগ আকর্ষণে সরকারি-বেসরকারি খাতের সমন্বয় অপরিহার্য: ঢাকা চেম্বার সভাপতি
ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি মো. সামীর সাত্তারের নেতৃত্বে ডিসিসিআই পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়ার সঙ্গে বিডা কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেছেন।
এসময় সামীর সাত্তার বলেন, 'স্থানীয় ও বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের লক্ষ্যে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ উন্নয়নে সরকারি ও বেসরকারি খাতের সমন্বয় একান্ত অপরিহার্য।'
দেশের জিডিপিতে বৈদেশিক বিনিয়োগের বর্তমান অবদান শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় জাতীয় কর্মকৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের ওপর জোরারোপ করেন ডিসিসিআই সভাপতি।
এ ছাড়াও, তিনি বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে বিডার 'ওয়ান স্টপ সার্ভিস (ওএসএস)'-এ উদ্যোক্তাদের সেবা নিশ্চিতকল্পে একটি জরিপ ও গবেষণা পরিচালনার প্রস্তাব করেন।
সাত্তার সময়োপযোগী প্রাতিষ্ঠানিক ও আইনি সংস্কারের ওপর গুরুত্ব দিয়ে বলেন, 'কন্ট্রাক্ট এনফোর্সমেন্ট সংক্রান্ত মামলা পরিচালনার জন্য পৃথক একটি "কমার্শিয়াল কোর্ট" গঠন করা প্রয়োজন।'
এ ছাড়াও, তিনি আরবিট্রেশন আইনের সংস্কার এবং ইনসলভেন্সি আইনের আধুনিকায়নের ওপর জোরারোপ করেন, যার মাধ্যমে বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের পরিবেশ আরও ত্বরান্বিত হবে।
ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, 'এলডিসি উত্তর সময়ে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে, বিশেষ করে ইউরোপের বাজারে পণ্য প্রবেশাধিকারের ক্ষেত্রে বেশকিছু অগ্রাধিকারমূলক সুযোগ-সুবিধা হারাবে।'
এমতাবস্থায় তিনি সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সমন্বয়ে একটি ন্যাশনাল স্ট্র্যাটেজিক কমিটি গঠনের প্রস্তাব করেন, যাতে বাংলাদেশে রেটিফাইড কনভেনশনসমূহ বাস্তবায়ন করা যায়। পাশাপাশি প্রস্তাবিত জাতীয় কমিটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে উক্ত কনভেনশনগুলোকে কীভাবে যৌক্তিকভাবে বাস্তবায়ন করা যায়, সে বিষয়ে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করবে।
বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া বলেন, 'প্রতিবেশীসহ সবার সঙ্গে বাংলাদেশ বন্ধুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সম্পর্ক বজায়ে রাখতে কাজ করে যাচ্ছে।'
তিনি জানান, আগামী ৩ মাস ধরে 'ওএসএস'-কে সম্পূর্ণ কার্যকর করার পরিকল্পনা রয়েছে।
বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে তিনি বলেন, 'আমাদের ব্যবসায়ী সমাজই সবচেয়ে বেশি ও কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।'
তিনি উল্লেখ করেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতি নানামুখী প্রতিবন্ধকতা থাকলেও আমাদের অর্থনীতি এখন ভালো অবস্থানে রয়েছে।
বিপুল তরুণ জনগোষ্ঠী, উদ্যমী ব্যবসায়ী সমাজ এবং ব্যবসা সহায়ক পরিবেশের কারণে সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি আরও বিকাশমান হবে বলেও তিনি মত প্রকাশ করেন। পাশাপাশি তিনি সরকারি কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার ওপর জোর দেন।
ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি এস এম গোলাম ফারুক আলমগীর (আরমান) ও সহ-সভাপতি মো. জুনায়েদ ইবনে আলীসহ পর্ষদের সদস্যরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
Comments