তৈরি পোশাক খাতের রিসাইক্লিং শিল্পে বিনিয়োগের আগ্রহ ব্রিটিশ মন্ত্রীর

গত শুক্রবার লন্ডনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে ব্রিটিশ মন্ত্রী এ আগ্রহ প্রকাশ করেন। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে তৈরি পোশাক খাতের রিসাইক্লিং শিল্পে বিনিয়োগসহ ২ দেশের মধ্যে ব‌্যবসা-বাণিজ‌্যের অধিকতর উন্নয়ন ও সম্প্রসারণে আরও ঘনিষ্টভাবে কাজ করার আগ্রহ জানিয়েছেন যুক্তরাজ‌্যের বিনিয়োগ বিষয়ক মন্ত্রী লর্ড ডমিনিক জনসন।

আজ রোববার লন্ডনের বাংলাদেশ হাইকমিশনের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

গত শুক্রবার লন্ডনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে ব্রিটিশ মন্ত্রী এ আগ্রহ প্রকাশ করেন।

বৈঠকে যুক্তরাজ‌্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, 'বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ‌্যের ঐতিহাসিক ও বন্ধুতত্বপূর্ণ সম্পর্কের সুদৃঢ় ভিত্তি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃতে স্থাপিত হয়েছিল, যা বিগত ৫০ বছরে বিভিন্নভাবে বিকশিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে যুক্তরাজ‌্য হতে আরো বেশি বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, 'বাংলাদেশের ৩য় বৃহৎ বাণিজ‌্যিক অংশীদার যুক্তরাজ‌্য বাংলাদেশের অপার সম্ভাবনাময় রিসাইক্লিং শিল্পে বিনিয়োগে ও কারিগরি সহায়তা প্রদানে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে।'

দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে সালমান এফ রহমান জানান, শ্রমঘন ও পরিবেশ রক্ষায় সহায়তাকারী এই শিল্পে বাংলাদেশে ইতোমধ‌্যেই বিভিন্ন উদ্যোগ অনেক অগ্রসর হয়েছে। স্বনামধন‌্য ও বৃহৎ বৈশ্বিক ক্রেতাগোষ্ঠী তাদের ক্রয়ের একটি উল্লেখযোগ‌্য অংশ পুন:প্রক্রিয়াজতকরণের মাধ‌্যমে প্রাপ্ত ফাইবার হতে প্রস্তুতকৃত পোষাক-এর মাধ‌্যমে পুরণ করা শুরু করেছে। পরিবেশ বান্ধব ও সার্কুলার ইকোনমির জন‌্য সহায়ক হওয়ায় এর পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পাবে।

নবায়নযোগ‌্য জ্বালানি খাতে বিদুৎ উৎপাদনের চাহিদা রয়েছে উল্লেখ করে সালমান এফ রহমান জানান, খাদ‌্য উৎপাদন ব‌্যাহত করে যেহেতু বাংলাদেশ নবায়নযোগ‌্য জ্বালানি খাতে বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রয়োজনীয় জমি দিতে পারছে না, সেক্ষেত্রে পানিতে ভাসমান টেকনোলজির মাধ্যমে সোলার পাওয়ার উৎপাদনে যুক্তরাজ্য বিনিয়োগ করতে পারে। কৃষি পণ‌্য প্রক্রিয়াজাতকরণ ও কৃষিভিত্তিক অন‌্যান‌্য শিল্পেও যুক্তরাজ‌্য বিনিয়োগ করতে পারে বলে তিনি অভিমত ব‌্যক্ত করেন।

সালমান রহমান যুক্তরাজ‌্যের জন‌্য বাংলাদেশে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন বা বিদ‌্যমান কোন অর্থনৈতিক অঞ্চলে জমি বরাদ্দ দেওয়া যেতে পারে বলে লর্ড ডমিনিক জনসনকে জানান।

লর্ড ডমিনিক জনসন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের প্রশংসা করে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে ব‌্যবসা-বাণিজ‌্য ও শিল্প-বিনিয়োগ সম্পর্ক আরও বহুমাত্রিক ও সম্প্রসারিত করার ব্যাপারে আশাবাদ জানান। তিনি এক্ষেত্রে যুক্তরাজ‌্যের রপ্তানি সহায়তা ঋণ কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে বলেও জানান।

ব্রিটিশ মন্ত্রী এয়ারবাস থেকে কার্গো বিমান ক্রয়সহ বাংলাদেশের এভিয়েশন খাত উন্নয়নে এয়ারবাস-এর আরও সম্পৃক্ত হওয়ার কথা উল্লেখ করলে উপদেষ্টা সালমান রহমান জানান,  আগামী ফেব্রয়ারি মাসে এয়ারবাসের উদ‌্যেগে ঢাকায় আন্তর্জাতিক এভিয়েশন সামিট যাতে সফলভাবে অনুষ্ঠিত হয় সে ব‌্যাপারে সব প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করা হবে। এই সম্মেলনে বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের কাছে এয়ারবাস তাদের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরতে পারে।

মন্ত্রী লর্ড ডমিনিক জনসন যুক্তরাজ‌্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ‌্যমে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষা লাভের বিষয়ে কিছু জটিলতার কথা উল্লেখ করলে উপদেষ্টো সেসব বিষয় খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন এবং বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা যাতে আরও বেশি হারে যুক্তরাজ্যে অধ‌্যয়ন ভিসা পেতে পারে সে ব‌্যাপারে সহায়তা প্রত‌্যাশা করেন।

এর আগে ৮ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বাংলাদেশে যুক্তরাজ‌্যের ট্রেড এনভয় ব্রিটিশ সংসদ সদস্য রুশনারা আলির সঙ্গে বাংলাদেশ হাইকিমিশন, লন্ডনে এক দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। এই বৈঠকেও তিনি যু্ক্তরাজ্য থেকে বাংলাদেশের রিসাইক্লিং এবং কৃষি ও কৃষি প্রক্রিাজাতকরণ শিল্পে অধিক হারে বিনিয়োগের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

রুশানারা আলি এমপি বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাজ‌্যের গভীর সম্পর্কের কথা তুলে ধরে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় ব্যবসা ও বিনিয়োগসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যের ক্রমবর্ধমান সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে উল্লেখ করেন।

Comments

The Daily Star  | English
Aynaghar

DGFI destroyed evidence of 'Aynaghar': commission

The commission investigating enforced disappearances submitted its report to the chief adviser

45m ago