বিদ্যুতের দাম বাড়বে না, সরকার উৎপাদন খরচ কমাবে ১০ শতাংশ

বিদ্যুৎখাতে ভর্তুকির বোঝা কমাতে সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ প্রায় ১০ শতাংশ কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ আজ সোমবার তার বাজেট বক্তৃতায় এ ঘোষণা দিয়েছেন।
তিনি বলেন, বিদ্যমান উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপ বিবেচনায় সরকার নীতিগতভাবে এই মুহূর্তে বিদ্যুতের শুল্ক না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
'অর্থনীতি টিকিয়ে রাখার জন্য এবং নাগরিকদের জীবনমান উন্নয়নের জন্য নির্ভরযোগ্য জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করা এবং দাম সাশ্রয়ী রাখা অপরিহার্য,' বলেন তিনি।
এর জন্য বিদ্যুৎ ক্রয়ের সময় উৎসে কর কর্তন (টিডিএস) বিদ্যমান ৬ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৪ শতাংশ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ক্ষমতাচ্যুত সরকারের সই করা বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তিগুলো বর্তমানে পর্যালোচনাধীন। বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ কমাতে আমরা এনার্জি অডিটও শুরু করছি।
গ্যাস সরবরাহের বিষয়ে তিনি বলেন, সরকার এই বছরের মধ্যে বাসা-বাড়িতে প্রতিদিন অতিরিক্ত ৬৪৮ মিলিয়ন ঘনফুট (এমএমসিএফডি) গ্যাস সরবরাহ করার পরিকল্পনা করছে। ২০২৮ সালের মধ্যে এই সরবরাহ এক হাজার ৫০০ এমএমসিএফডি হতে পারে।
বাজেট বক্তৃতায় তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির ওপর ভ্যাট অব্যাহতির কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, 'পেট্রোলিয়াম পণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে আমরা অপরিশোধিত ও পরিশোধিত জ্বালানি উভয়ের আমদানির ওপর শুল্ক হার হ্রাস করার এবং এই পণ্যগুলোর ওপর শুল্ক মূল্য প্রত্যাহার করার প্রস্তাব করছি।'
সরকার ২০৪০ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য উৎস থেকে দেশের ৩০ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'আমরা নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতি ২০০৮ আপডেট করছি, যাতে তা বর্তমান সময়ের সঙ্গে আরও প্রাসঙ্গিক হয়।'
তিনি জানান, ২০২৮ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য উৎস থেকে প্রায় তিন হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা হবে, যার মধ্যে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রও অন্তর্ভুক্ত।
তিনি উল্লেখ করেন, পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণকাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে।
অর্থ উপদেষ্টা আরও জানান, ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডের দ্বিতীয় ইউনিট স্থাপনের মাধ্যমে দেশের একমাত্র জ্বালানি শোধনাগার সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যার ধারণক্ষমতা হবে তিন মিলিয়ন মেট্রিক টন।
Comments